১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনের মুসলমানরা কেমন আছেন?

চীনের মুসলমানরা কেমন আছেন? - সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক গবেষণা বিভাগের শিক্ষক ড. ডেভিড আর. স্ট্রাওপ মনে করেন, মানুষের ধর্মীয় রীতি অনুশীলনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করছে চীন। 

চীনের রাজনীতি-জাতীয়তাবাদ-জাতিগত রাজনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ,  লেখক ও গবেষক স্ট্রাওপ চীনের স্বশাসিত নিংজিয়া অঞ্চলের ছোট্ট মুসলিমপ্রধান শহর ওয়েইজু’তে নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতার সাথে বর্তমান অবস্থার তুলনা করেন। তিনি লিখেছেন, ‘দু’বছর আগে যেই শহরটির মানুষজন আইন মেনে সচেতন নাগরিক হিসেবে জীবনযাপন করতো, কিন্তু মসজিদ ভাঙার চেষ্টার প্রতিবাদে এখন তারাই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।’

মানুষের বিক্ষোভের মুখে সরকার মসজিদটি পুরোপুরি না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিলেও মসজিদ ভবনের আরবীয় নকশায় পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে। তবে তা করতে গেলেও ওয়েইজু'র ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হারিয়ে যেতে পারে এবং চীনের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বোধ এতে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে বলে মনে করেন স্ট্রাওপ।

ওয়েইজু ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের শহর। এই শহরের জনসংখ্যার ৯০ ভাগই হুই জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। গণমাধ্যমে তাদেরকে অনেকসময় চীনা মুসলিম বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে চীনে হুই মুসলিমদের পূর্বপুরুষরা অষ্টম শতাব্দীতে ট্যাঙ রাজবংশোদ্ভূত বলে ধারণা করেন স্ট্রাওপ।

চীনের মানুষের সাথে কয়েক শতাব্দীব্যাপী মিশ্রণের পর বর্তমানে চীনের সংখ্যাগুরু হান সম্প্রদায়ের সাথে তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যে খুব একটা পার্থক্য চোখে পড়ে না। ঐ শহরে থাকার সময় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে স্ট্রাওপ উল্লেখ করেন যে শহরের অধিকাংশ নারীই হিজাব পরেন এবং অধিকাংশ পুরুষই মুসলিমদের প্রার্থনার সময় সাদা টুপি পরে থাকেন।

স্ট্রাওপ লিখেছেন, শহরের প্রায় প্রত্যেকেই প্রতিদিনের প্রার্থনার জন্য মসজিদে যেতো। শহরের খাবার দোকানগুলোতেও শুধুমাত্র হালাল খাবার বেচাকেনা হতো। শহরের কোনো দোকানে মদ জাতীয় পানীয় বিক্রি হতো না।

রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার হুমকির সম্ভাবনা রোধ করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর নির্দেশনায় বিভিন্ন ধর্মীয় মতাদর্শের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। নিরাপত্তার অজুহাতে এধরনের অভিযান চালায় সরকার। তারা দাবী করে ধর্মীয় জঙ্গীবাদের উত্থান ঠেকাতে এই ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা গুরুত্বপূর্ণ।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ১৯তম কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা করেন দলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে চীনের সব ধর্ম যেন চীনের প্রাতিষ্ঠানিক মূলধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং ধর্মগুলো যেন সমাজতান্ত্রিক ধারার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এই বক্তব্যের পর চীনের বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় সরকার ধর্মীয় রীতি পালনে নানাভাবে বাধা দিয়ে আসছেন।

এই অভিযানের ফলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চীনের মুসলিম সম্প্রদায়। সবচেয়ে বড় উদাহরণ, চীনের উত্তর-পশ্চিমের জিনজিয়াং এ উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযান। হিজাব পরা বা সামাজিক মাধ্যমে কোরানের বাণী প্রচার করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় জঙ্গীবাদ ছড়ানোর অভিযোগ আনে ঐ অঞ্চলের স্থানীয় সরকার। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে উইঘুর জাতির প্রায় ১০ লাখ মুসলিমকে ধর্মীয় জঙ্গীবাদ ছড়ানোর অভিযোগে আটক করে রাখা হয়েছে।

 

জাপানে মোবাইল মসজিদ

২৪ জুলাই ২০১৮

২০২০ সালে জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে। আর এই অলিম্পিককে সামনে রেখে দেশটির সরকার ‘মোবাইল মসজিদ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বৈশ্বিক এই ইভেন্টকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে একটি ‘মোবাইল মসজিদ’ তৈরিও করেছে জাপান সরকার।

এই মোবাইল মসজিদ বানাতে চার বছর লেগেছে। একটি ২৫ টন ট্রাককে একটু মডিফাই করে সেটিতে নামাজের জন্য ৪৮ স্কয়ার মিটার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। ওই জায়গায় একসঙ্গে ৫০ জন নামাজ পড়তে পারবেন। এমনকি এই মোবাইল মসজিদের ভেতর ওজুর জন্য পানি রয়েছে। কিবলার দিকও নির্দেশ করা আছে।

মোবাইল মসজিদ আইডিয়ার জনক টোকিওর বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সী ইয়াসুহারু ইনোইউয়ে। এর আগে ২০০৪ সালে এথেন্সে ২০০৪ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ফুটবাথ তৈরি করে ছিলেন। এরপর ২০১২ সালে লন্ডন গেমসে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেন তিনি। গ্রেট ইস্ট জাপান ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন দেশের সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।

তবে কাতারে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গিয়ে মোবাইল মসজিদ বানানোর এই আইডিয়া তার মাথায় আসে। তিনি বলেন, নামাজ মুসলমানদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নামাজ পড়ার আরামদায়ক পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে আমি মুসলমানদের ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকে আমন্ত্রণ জানাতে চাই।

জাপানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০টি মসজিদ রয়েছে। তবে ‘মোবাইল মসজিদ’-এর মাধ্যমে যেমন অলিম্পিকের মতো বড় আসরের প্রচারণা ও প্রসার কাজ চলছে তেমনি এই ধারণা মুসলমানদের মধ্যে জনপ্রিয় করার চেষ্টা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত

সকল