২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ভাতের জন্য অস্থির থাইল্যান্ডর সেই কিশোরেরা

ভাতের জন্য অস্থির থাইল্যান্ডর সেই কিশোরেরা - সংগৃহীত

বহুদিন পর হারানো সন্তান ফিরে এলে তারা যা খেতে চায়, তাই খেতে দেয়া হয়। ঠিক এমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে থাকা শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রেও। কয়েক দিনব্যাপী জটিল এক অভিযানে আটকে যাওয়া ১২ কিশোর ও তাদের কোচকে উদ্ধার করা হয় হয়েছে।

আটক থাকার সময়ই যখন তারা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে সমর্থ হয়েছিল, তখন তারা ভাত এবং ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু এখনই ডাক্তাররা তাদেরকে সে অনুমতি দিচ্ছেন না। বরং বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘রি-ফিডিং সিনড্রোম’ বা পুনঃখাদ্য খাওয়ানো সিনড্রোম থেকে রক্ষা করতে তাদের সহজপাচ্য, কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার দিচ্ছেন।

রি-ফিডিং সিনড্রোম হচ্ছে, অনাহারে থাকা বা খুবই ক্ষুধার্ত কোনো ব্যক্তিকে হঠাৎ করেই বেশি ক্যালোরির খাবার খেতে দিলে যে মারাত্মক অবস্থা তৈরি হয়, তা-ই।

কিশোর বয়সীদের ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জেনিফার চুয়াং বলেন, যখন কেউ দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ থাকে, তখন তার পরিপাক প্রক্রিয়াটি পরিবর্তিত হয়ে যায়। তখন কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার করে শরীরে থাকা চর্বি, প্রোটিন ও শ্বেতসারের ভান্ডারগুলোকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া সে সময় শরীরকে চালানোর জন্য দেহের পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসের মোট পরিমাণটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি শরীরকে সুস্থভাবে চালানোর জন্য এসব উপাদান অপরিহার্য।

এ রকম দীর্ঘ সময় অনাহারে ব্যক্তিকে যদি হঠাৎ করেই বেশি পুষ্টিকর খাবার দেয়া হয় তাহলে তা দেহের মধ্যে নানা রকমের পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক্ষেত্রে চোখ, পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অল্প অল্প তরলের আকারে অবস্থান নিতে পারে। একই অবস্থা হতে পারে হৃদপিণ্ডের ক্ষেত্রেও। সেক্ষেত্রে হার্টফেলেরও আশঙ্কা রয়েছে।

উদ্ধার করা থাই কিশোরদের যদি তাদের অনুরোধের আইটেম প্যাড ক্যাপরাও, বাজিল দিয়ে ভাজা শূকরের গোশত ইত্যাদি দেয়া হতো, তাহলে তাদের রক্তে যে প্রভাব পড়ত তার কারণে তারা মারাত্মক বিপদে পড়তে পারতো। এমনকি তাদের হৃদপিণ্ডও থেমে যেতে পারতো।

এ অবস্থায় থাই চিকিৎসকদল ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন। সেখানে এসব ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কম দিয়ে শুরু করো এবং আস্তে চলো। এ পদ্ধতির ভিত্তিতে প্রতিদিন কিশোরদের ক্যালোরির মাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। সাথে সাথে তাদের রক্তের পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষাও করা হচ্ছে। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে ১২০০ ক্যালোরি থেকে শুরু করা হয় এবং প্রতিদিন ২০০ থেকে ৪০০ ক্যালোরি বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে উভয় ক্ষেত্রেই মাত্রা কমাতে হয়। আর উদ্ধারকৃত ছেলেরা এই পরিস্থিতিতেই রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল