২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ

রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। ছবি - আল জাজিরা।

সারা বিশ্বে মানুষের মুখে এখন রাশিয়ায় চলমান ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৮ নিয়ে আলোচনা চলছে।

রাশিয়া থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে দুটি রোহিঙ্গা ‍ফুটবল দল স্থানীয় স্টেডিয়ামে নিজের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলতে নেমেছে।

কয়েক দশক ধরে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা তাদের বাসস্থান ছেড়ে পালিয়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে।

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের কাছে ফুটবল ব্যাপক জনপ্রিয় একটি খেলা। তাদের মধ্যে ৫০ টি ফুটবল দল রয়েছে।

রোহিঙ্গা ফুটবল ক্লাব (আরএফসি) এবং রোহিঙ্গা ফুটবল মালয়েশিয়া (আরএফএম) এই দুটি ফুটবল দলের মধ্যকার অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ৩-৩ গোল নিয়ে ড্র হয়েছে।

কুয়ালালামপুরে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত শরণার্থীদের নিয়ে আয়োজিত বাৎসরিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ইস্যুটি পুনরায় আলোচনায় চলে এসেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তালিকা অনুযায়ী মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬২ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করে। তালিকার বাইরেও প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজারের মত রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে বলে জানা যায়।

মালয়েশিয়া যদিও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি তবু মাঝেমধ্যে মানবিক খাতিরে তারা শরণার্থী গ্রহণ করে থাকে।

রিফিউজি ফেস্টের উদ্যোক্তা মাহি রামকৃষ্ণনান বলেন, খেলাধুলা এবং কলা হচ্ছে হুমকি ছাড়াই রাজনৈতিক বার্তা প্রদান।

এটা শরণার্থীদের নিজস্ব পরিচয় এবং আত্নমর্যাদা দেয়। এটা শরণার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা তাদের সরকার তাদের আত্নমর্যাদা কেড়ে নিয়েছে। রোহিঙ্গা ফুটবলাররা খুবই মেধাবী। তারা ২০২০ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত কনিফা বিশ্বকাপে অংশ নিতে ইচ্ছুক।

আরএফসি ফুটবল দল গত বছর কনিফার তালিকাভুক্ত হয়েছে। কনিফায় সেসব দেশ অংশ নেয় যাদের কোন দেশ নেই, যারা রাষ্ট্রবিহীন, উদ্বাস্তু তারাই এ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে থাকে।

আরএফসি ফুটবল দলের প্রধান মুহাম্মদ নুর বলেন, এটা আমাদের জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হবে। এখানে শুধু মালয়েশিয়ান রোহিঙ্গারা নয় বরং যারা বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে তারাও এখানে খেলতে পারবে।

মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছে। রাষ্ট্রহীন ও বৈধ কাগজপত্রের অভাবে দেশ ছাড়বে না তারা।

 

আরো দেখুন : মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা : অ্যামনেস্টি

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হামলার নেতৃত্ব দেয়ায় দেশটির সেনাপ্রধান ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবাধিকার সংস্থাটির জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

রাখাইন রাজ্যে সামরিক দমনপীড়নের কারণে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ভয়াবহ জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, তারা মুসলিম ‘জঙ্গি’দের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। এরা ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়।

কিন্তু অ্যামনেস্টির একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও অপর ১২ জন জ্যেষ্ঠ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা ও দমন অভিযানে সমন্বয়কের ভূমিকায় ছিলেন।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সাথে সুপরিকল্পতভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূলে এ দমন অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আইনবহির্ভূতভাবে শিশুসহ কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে।’

প্রতিবেদনটিতে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যৌন সহিংসতা, নির্যাতন, জোরপূর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ রোহিঙ্গাদের বাজার ও ফসলী ক্ষেত জ্বালিয়ে দিয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের অনাহারে থাকতে হয়েছে এবং তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই অপরাধগুলোকে আর্ন্তর্জাতিক আইনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।’

কোনো কোনো জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ও সীমান্তরক্ষী নৃশংসতায় সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement