২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইন্দোনেশিয়ায় নাশকতার আশঙ্কা, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার মাস্টারমাইন্ডের মৃত্যুদণ্ড

ইন্দোনেশিয়ায় নাশকতার আশঙ্কা, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার মাস্টারমাইন্ডের মৃত্যুদণ্ড - সংগৃহীত

এক মুসলিম নেতাকে নাশকতার মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। দোষী আমান আবদুর রহমান ২০১৬ সালের জাকার্তা স্টারবাকস ক্যাফে হামলার মাস্টারমাইন্ড। ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত এই নেতার নির্দেশেই হয়েছিল নাশকতা। তাতে চার নিরীহের মৃত্যু হয়। আত্মঘাতীদের চারজনও পরে মারা যায়।

জাকার্তার স্টারবাকস নাশকতার পরই চলতি বছর মে মাসে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলা হয় ইন্দোনেশিয়ার সুরাভায়া দ্বীপে। বিস্ফোরণে জড়িত দুটি পরিবারের ১৩ জন জঙ্গি সদস্য সহ মোট ২৬ জন মারা যায়। হামলাকারীদের মধ্যে ছিল ৭ বছরের শিশু। তদন্ত উঠে এসেছে এই সন্ত্রাসীরা আমান আবদুর রহমানের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই নাশকতার পথ বেছে নেয়।

ইন্দোনেশিয়া সরকার জানিয়েছে, আমান আবদুর রহমান জেএডি (Jemaah Anshorut Daulah) নামে এক সংগঠন গড়ে তুলেছিল। আইএস সংশ্লিষ্ট এই সংগঠনটি ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের বিরোধিতা করে।

আইএস নেতা আমানের বিচার পর্বের চূড়ান্ত রায় কী হতে পারে সেটা জানতে বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন আদালত চত্বরে। মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হতেই তাঁরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। এদিকে জঙ্গি নেতাকে চরম শাস্তি দেওয়ার রায় ঘোষণা হতেই রাজধানী জাকার্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা। সুরাভায়া দ্বীপ, বালি, সুমাত্রা সহ যেসব স্থানে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেশি সেখানেও জারি হয়েছে সতর্কতা।

২০০২ সালে ভয়াবহ নাশকতায় বালি দ্বীপে ২০০ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৮৮ জনই ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। ২৩ জন ছিলেন ব্রিটিশ, ৩৮ জন ইন্দোনেশিয়ান সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা। রক্তাক্ত সেই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন ছড়িয়েছিল দুনিয়ায়।


ইন্দোনেশিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর আইন
এএফপি

সন্দেহজনক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পুলিশ বাহিনীকে আরো বেশি ক্ষমতা প্রদান করে কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইন পাস করেছে ইন্দোনেশিয়া। গত এক বছর ধরে চলমান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলার কারণে শনিবার দেশটি এই আইন পাস করে। গত দুই বছর ধরে আইনটি সংসদে পেশকৃত ছিল। সে সময় চলে বিলের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা। কিন্তু চলতি বছর ক্রমাগত সন্ত্রাসী হামলার কারণে পেশকৃত বিলটি দ্রুত পাস করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পুলিশ সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় এক সপ্তাহ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত আটক রাখতে পারবে। সেই সাথে সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করলে বা যোগদান করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে পারবে।

দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলো নতুন আইনের বিরোধিতা করে বলেছে, আইনের কিছু বক্তব্যের অস্পটতার কারণে যেকোনো গ্রুপ বা জনগণ হয়রানির শিকার হবেন। চলতি মাসে দেশটির গির্জা ও পুলিশ স্টেশনে আত্মঘাতী হামলায় ১৩ জন নিহত হয়।

দেশটির দ্বিতীয় প্রধান শহর সুরাবায়াতে সংঘটিত এই হামলায় দু’টি পরিবারের সদস্যরা জড়িত। জড়িতদের মধ্যে ১২ বছর একটি মেয়েও রয়েছে। দেশটি আগামীতে এশিয়ান গেমসের আসর বসবে। এ ছাড়া আগামী অক্টোবর মাসে দেশটিতে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক সভাকে সামনে রেখে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর হুমকি মোকাবেলা করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement