২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

১৮ বছর বয়সেই বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন জাপানিরা

১৮ বছর বয়সেই বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন জাপানিরা - সংগৃহীত

জাপানে নতুন আইনে ২ বছর আগেই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। দেশের সরকার ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স ২০ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ বছর করার বিল পাস করেছে। ২০২২ সাল থেকে কার্যকর হবে নতুন এ আইন।

এ আইনে সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটি ঘটবে তা হচ্ছে, ছেলে-মেয়েরা এখন ১৮ বছর বয়সেই বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করার এক্তিয়ার পাবে। ১৮৭৬ সালে জাপানে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পর এই প্রথম তাতে পরিবর্তন আনা হল।

জাপানের বর্তমান আইন অনুযায়ী, ছেলেরা ১৮ বছরের পর এবং মেয়েরা ১৬ বছর বয়সের পর বিয়ে করতে পারে। কিন্তু সেজন্য তাদেরকে বাবা-মায়ের অনুমতি নিতে হয়। শুধুমাত্র ২০ বছর হওয়ার পর কেউ নিজের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে। নতুন আইন কার্যকর হলে ১৮ বছর বয়সী সব ছেলে-মেয়েই নিজের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার সুযোগ পাবে।

১৮ বছর বয়সেই বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া তারা চাইলে ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক থেকে ঋণও নিতে পারবে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তারা নিজেদের পাসপোর্ট পাবে, যার মেয়াদ হবে ১০ বছর। জাপানে বর্তমানে অপ্রাপ্তবয়স্করা পাঁচ বছর মেয়াদে পাসপোর্ট পায় এবং এজন্য বাবা-মা বা আইনি অভিভাবকের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। নতুন আইন চালু হলে ‘জেন্ডার আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার’ এর চিকিৎসা চলছে এমন কেউ ১৮ বছর হওয়ার পর আইনগতভাবে নিজেদের লিঙ্গ পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবে।

নতুন আইনে দুই বছর কমিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স ১৮ করা হলেও কিছু কৌশলগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ১৮ বছর হলেও তারা মদ্যপান, ধূমপান, জুয়া খেলা ও শিশু দত্তক নিতে পারবে না। এজন্য তাদের ২০ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

নতুন বিলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স কমলেও কিছু নিষেধাজ্ঞা থাকায় সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এটা নিয়ে খুব একটা খুশি হতে পারেনি। এক টুইটার ব্যবহারকারীর প্রশ্ন, ‘তাহলে আমি ১৮ বছরে পড়ব এবং প্রপ্তবয়স্ক হব। কিন্তু আমি মদ্যপান করতে বা জুয়া খেলতে পারব না? এটি কিছু হল না’।

অন্য একজন লেখেন, ‘১৮ বছর হলে আমি ঋণ করতে পারব। কিন্তু মধ্যপানের উপর তখনও নিষেধাজ্ঞা থাকবে!’ জাপানে প্রতিবছর জানুয়ারিতে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া উপলক্ষ্যে উৎসব আয়োজন করা হয়। ওইদিন ছুটি থাকে এবং ২০ বছরের তরুণরা তাদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়াকে স্বাগত জানায়।

গত কয়েক দশক ধরেই জাপানে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স নিয়ে বিতর্ক চলছে। ২০০৯ সালে ‘লেজিসলেটিভ কাউন্সিল অব দ্য মিনিস্ট্রি অব জাস্টিস’ থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স কমিয়ে ১৮ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জাপানে জন্মহারের নিম্নগতির কারণে দেশটির মোট জনসংখ্যায় ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স কমিয়ে দেওয়ায় তরুণ বয়সীদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে উৎসাহ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে দেশটিতে ভোটার হওয়ার বয়সও ২০ থেকে কমিয়ে ১৮ করা হয়।

জাপানি ব্যবসায়ী ফোরামে প্রথাগত ভাবনা বদলানোর আহ্বান প্রফেসর ইউনূসের

মাত্র আটজন লোকের হাতে পৃথিবীর নিচের দিকের ৫০ শতাংশ মানুষের মোট সম্পদের বেশি কেন্দ্রীভূত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ২২ ফেব্রুয়ারি জাপানের ‘বিজনেস ইউনিভার্সিটি ফোরামে’ এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘এখন এটা বিস্ফোরণোন্মুখ টাইম বোমা। আমাদের উচিত সমস্যাটির প্রতি সর্বাধিক মনোযোগ দেয়া। নইলে এ থেকে উদ্ভূত সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিস্ফোরণ ঠেকানো যাবে না।’ 

‘বিজনেস ইউনিভার্সিটি ফোরাম’ একটি প্লাটফর্ম যেখানে ব্যবসায়ী নেতা এবং শীর্ষ শিক্ষাবিদরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। ফোরামটির ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ÔToward Inclusive Society – Cultivating Talents in a Rapidly Changing SocietyÕ শীর্ষক একটি সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে। টয়োটা মোটর করপোরেশনের অবৈতনিক চেয়ারম্যান ও বিজনেস ইউনিভার্সিটি ফোরামের সভাপতি ফুজিও কো অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। একইসাথে প্রফেসর ইউনূসকে অনুষ্ঠানের মূল বক্তৃতা দেয়ার জন্য স্বাগত জানান।

সিম্পোজিয়ামের অপর বক্তাদের মধ্যে ছিলেনÑ মাইকেল ডাউলিং, বোর্ড চেয়ারম্যান, মুংকনের ক্রাইস; আকিহিকো কুমাগাই, প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী, জেনারেল ইলেকট্রিক জাপান; ডারিও গিল, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সায়েন্স অ্যান্ড সলিউশান্স, আইবিএম; টান চোরহ্ চুয়ান, প্রেসিডেন্ট, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর।

প্রফেসর ইউনূসের তত্ত্ব নিয়ে সমান্তরাল সেশনগুলোতে আলোচনা হয়। জাপান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আকিও মিমুরা বিস্তারিত তথ্য-উপাত্তসহ সম্পদ কেন্দ্রীকরণের সমস্যাটি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন। সিম্পোজিয়াম মনোযোগ নিবদ্ধ করে প্রযুক্তির সম্ভাবনা-ভিত্তিক একটি নতুন জ্ঞাননির্ভর সমাজের ওপর, সামাজিক কাঠামোর ওপর এগুলোর প্রভাবের ওপর এবং মানুষের মূল্যবোধের পরিবর্তনের সাথে ক্রমাগত খাপ খাইয়ে নেয়ার ওপর। 

ওই দিনই পরে প্রফেসর ইউনূস টোকিওতে একটি যৌথ উদ্ভাবনকেন্দ্র উদ্বোধন করেন যেখানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত সব ইউনূস সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্র একটি সামাজিক ব্যবসা মডেলের প্লাটফর্মের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার উদ্দেশে যৌথভাবে কাজ করতে সমবেত হয়। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউনূস সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্রগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের ‘তিন শূন্য’এর (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ) লক্ষ্যের সাথে নিজেদের সমন্বিত করা।

এ অঞ্চলের ইউনূস সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্রগুলো অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডে অবস্থিত। এ ছাড়াও প্রফেসর ইউনূস ২২ ফেব্রুয়ারি টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় ও কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথভাবে আয়োজিত এবং টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল ভাষণ প্রদান করেন। সিম্পোজিয়ামে বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করে দেখার আহ্বান জানান প্রফেসর ইউনূস। 

 


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল