ট্রাম্প-কিম বৈঠকে খরচ ২ কোটি ডলার: সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী
- স্ট্রেইট টাইমস
- ১১ জুন ২০১৮, ১১:০৮
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং বলেছেন, ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠকে প্রায় ২ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হবে। একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সফল করতে সিঙ্গাপুর এই অর্থ ব্যয় করছে যা ‘আমাদের সুগভীর আগ্রহের’ জায়গা। তবে মোট অর্থের অর্ধেকটা ব্যয় হবে নিরাপত্তা খাতে।
রোববার সিঙ্গাপুরের এফওয়ান পিট বিল্ডিংয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেন্টার পরিদর্শনের সময় দেশটির গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রী লি বলেন, এই সম্মেলনের ব্যাপকতা অনেক, অন্যান্য বিষয় ছাড়াও এর পরিধি, সাংবাদিকের সংখ্যা, নিরাপত্তার মাত্রাই এর কারণ।
তিনি আরো বলেন, এই বৈঠকের গুরুত্ব ও এখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে এর কারণেই যেকোনো বৈঠকের তুলনায় এটির নিরাপত্তা আরো বেশি দরকার।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের সদস্যরা শুধু বৈঠকের ভেন্যুই ঘিরে রাখবে না পাশাপাশি ‘আকাশ, জল, স্থলে যেকোনও ধরনের হামলা ঠেকাতে পুরোপুরি ও গভীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা’ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা একটা খুব বিশাল প্রক্রিয়া কারণ এটা হাই-প্রোফাইল বৈঠক এবং এখানে কোনো কিছু ভুল হবার মতো সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের সেন্টোসা দ্বীপের কাপেল্লা হোটেলে বহু প্রত্যাশিত এই বৈঠকে মিলিত হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিক এই বৈঠকের সংবাদ সংগ্রহ করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় আড়াই হাজার সাংবাদিক ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী লি বলেন, চাপের মধ্যেও কর্মকর্তারা ভালো কাজ করেছেন। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বৈঠক সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এ ধরনের বৈঠক আয়োজনের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। বৈঠকের স্থানের ব্যাপারে উভয় পক্ষকেই ঐকমত্যে পৌঁছাতে হয়। এছাড়া এতে উভয় পক্ষের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাহিদার ব্যাপারও থাকে।
প্রধানমন্ত্রী লি বলেন, এমতাবস্থায় উভয় পক্ষ যখন আমাদেরকে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য অনুরোধ জানায়, তখন আমরা না করতে পারিনি। আমাদের এটা করতে হবে...আমরা একটি ভালো কাজ করছি। এটি সিঙ্গাপুরের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।এর মাধ্যমে আমাদের প্রচার হচ্ছে।
উন্নতমানের শিক্ষায় সিঙ্গাপুর বিশ্বের সেরা, ইউরোপের চেয়ে এশিয়া এগিয়ে
বিশ্বে স্কুলে পড়াশোনার মান নির্ণয়ের সবচেয়ে বড় তালিকায় এশিয়ার দেশগুলো প্রথম পাঁচটি স্থানে এসেছে, আর আফ্রিকার দেশগুলো এসেছে সবচেয়ে নিচে।
সিঙ্গাপুর তালিকার শীর্ষে রয়েছে, তারপর হংকং। ঘানা তালিকার শেষ স্থানে।
ইউরোপের যেসব দেশের স্কুলগুলো সবচেয়ে ভাল ফল করছে তাদের মধ্যে অন্যতম ব্রিটেন তালিকার ২০তম স্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এসেছে ২৮তম স্থানে।
ইউরোপে সহযোগিতা এবং উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি বলছে, ৭৬টি দেশের স্কুলের ফলাফলে উপর ভিত্তি করে তৈরি এই তালিকা শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে যোগসূত্র প্রমাণ করেছে।
এই প্রথমবার আমরা প্রকৃত অর্থে বিশ্ব শিক্ষার গুণগত মানের একটি তালিকা তৈরি করেছি, ওইসিডি-র শিক্ষা বিষয়ক পরিচালক এ্যান্ড্রেয়াস স্লাইশার বলেন।
সার্বিক র্যাঙ্কিং
অঙ্ক আর বিজ্ঞানে ১৫-বছর বয়স্কদের ফলাফলের ভিত্তিতে তালিকা
1. সিঙ্গাপুর
2. হংকং
3. দক্ষিণ কোরিয়া
4. জাপান
4. তাইওয়ান
6. ফিনল্যান্ড
7. এসতোনিয়া
8. সুইজারল্যান্ড
9. হল্যান্ড
10. কানাডা
11. পোল্যান্ড
12. ভিয়েতনাম
তিনি বলেন, এই তালিকার উদ্দেশ্য হলো শিক্ষায় এগিয়ে থাকা দেশগুলোর সাথে ধনী-গরীব সব দেশ যাতে নিজেদের তুলনা করতে পারে, যাতে তারা নিজেদের সামর্থ্য এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে আরো সচেতন হয়।
“এর ফলে তারা দেখতে পারবে স্কুল শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি তাদের জন্য কী ধরনের অর্থনৈতিক ফল দিতে পারে”, মি: স্লাইশার বলেন।
তালিকার শীর্ষে থাকা সিঙ্গাপুরে নিরক্ষরতা ১৯৬০-এর দশকেও অনেক উঁচু ছিল। “এতেই বোঝা যায় কত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব”, মি: স্লাইশার বলেন।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রিটেনে প্রতি পাঁচজন স্কুলছাত্রর মধ্যে একজন মৌলিক শিক্ষা অর্জন না করেই স্কুল শেষ করে।
ওইসিডি-র মতে, ব্রিটেনে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করলে অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি সম্ভব।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা
সকল ১৫-বছর বয়স্ক মৌলিক শিক্ষা পেলে দেশজ সম্পত্তির বৃদ্ধির হার (%)
1. ঘানা, ৩৮৮১
2. দক্ষিণ আফ্রিকা, ২৬২৪
3. হন্ডুরাস, ২০১৬
4. মরক্কো, ১৫৯১
5. ওমান, ১৪২৭
6. বোতসোয়ানা, ১৩০৩
7. ম্যাসেডোনিয়া, ১১৩৭
8. পেরু, ১০৭৬
9. কাতার, ১০২৯
10. সৌদি আরব, ৯৭৫
11. আলবেনিয়া, ৯২৯
12. কলোম্বিয়া, ৯১০
ওইসিডি-র এই তালিকা গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ে ফলাফলের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। ইতিপূর্বে ওইসিডি-র তালিকা শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলো নিয়ে তৈরি করা হতো, এবার বিশ্বের অন্যান্য দেশকেও এই তালিকায় আনা হয়েছে।
বিশ্ব শিক্ষার মানের এই ‘লীগ তালিকা’ পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ দেশ নিয়ে করা হয়েছে। এখানে দেখা যাচ্ছে ইরান, দক্ষিণ আফ্রিকা, পেরু এবং থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক মানের কোন পর্যায়ে রয়েছে।
তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক খারাপ ফলাফলের প্রতিফলন ঘটেছে। তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র শুধু যে অনেক ইউরোপীয় দেশের নিচে চলে গেছে তাই নয়, ভিয়েতনাম-এর অবস্থান এখন আমেরিকার উপরে।
ওইসিডি-র তালিকা কয়েকটি আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফল একত্র করে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একই মাপকাঠিতে বিচার করা হয়েছে।
তালিকার প্রথম পাঁচটি স্থানে আছে এশিয়ার দেশ – সিঙ্গাপুর, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং জাপান।
তালিকায় ৭৬টি দেশের মধ্যে শেষের পাঁচটি স্থানে আছে ওমান, মরক্কো, হন্ডুরাস, দক্ষিণ আফ্রিকা আর ঘানা।
"এশিয়ার যেকোনো ক্লাসরুমে দেখবেন, শিক্ষকরা তাদের ছাত্রদের কাছ থেকে ভাল ফল প্রত্যাশা করে", মি: স্লাইশার বলেন।
এশিয়ার দেশগুলো অত্যন্ত দক্ষ শিক্ষকদের ক্লাসরুমে কাজ করতে উৎসাহিত করতে সক্ষম হয়েছে, যার ফলে সকল ছাত্র ভাল শিক্ষক পাচ্ছে, মি: স্লাইশার বলেন।
ওইসিডি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোন দেশের শিক্ষার গুণগত মানই বলে দেবে সে দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে কতটুকু সফল হবে।
"দুর্বল শিক্ষা নীতি এবং ব্যবস্থার ফলে অনেক দেশের অর্থনীতি এক ধরনের স্থায়ী মন্দার মধ্যে আটকে থাকে", মি: স্লাইশার বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করলে অসাধারণ দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সাফল্য আসবে।
রিপোর্টে বলা হচ্ছে, যদি ঘানা তার সকল ১৫-বছর বয়স্কদের মৌলিক শিক্ষা দিতে পারে, তাহলে দেশের অর্থনীতি ৩৮ গুণ বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা