রাজশাহী

বগুড়ায় মা ও মেয়ে নৃশংস খুন : নেপথ্যে পরকীয়া!

সোমবার রাতে বগুড়া শহরের টিনপট্টি এলাকায় নিজ বাসায় সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী ও শিশু কন্যা নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার মূল ঘাতক হিসেবে মোবারক হোসেন বকুল (১৯) নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে শহরের ফুলবাড়ী উত্তর পাড়ার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। পেশায় ওয়ার্কশপ শ্রমিক বলে জানা গেছে। পুলিশ পরকীয়া সম্পর্ককে খুনের কারণ হিসেবে বলেছে। মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার আশরাফ আলী এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, নিহত রুবি বেগমের স্বামী ইউসুফ শেখের বন্ধু গ্রেফতারকৃত বকুলের বড় ভাই মুকুল। বড় ভাইয়ের সূত্র ধরে ওই বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে রুবির সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বকুলের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। এরই সূত্র ধরে সোমবার রাত ১১টায় নিজ বাসায় বকুলকে আসতে বলেন রুবি। সেখানে এলে দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর রুবি বিয়ের চাপ দিলে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বকুল চাকু মারেন রুবির বুকে। এসময় তার চিৎকারে রুবির কন্যা সুরাইয়া (৬) ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে বকুল। এরপর তিনি পালিয়ে যান। এ সময় ওই বাসায় আর কেউ ছিল না। পুলিশ সকালে লাশ উদ্ধার করে। এরপর বকুলকে গ্রেফতার করলে তিনি হত্যার বর্ণনা দেন।

উল্লেখ্য , বগুড়া শহরের টিনপট্টি এলাকায় ঘরের ভিতর থেকে মা ও মেয়ের লাশ মঙ্গলবার পুলিশ উদ্ধার করেছে। সোমবার রাতে কোনো এক সময় তাদের হত্যা করা হয়। এর মধ্যে মা রুবি খাতুনকে(২৬) ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও তার মেয়ে ছয় বছরের শিশু সুমাইয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

বগুড়া সদর থানা পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে গৃহবধূ তার মেয়েকে নিয়ে একটি ঘরে থাকতেন। তার স্বামী ইউসুফ শেখ সৌদি আরবপ্রবাসী। ঘরে মা ও মেয়ে থাকতেন। বাড়ির অন্য ঘরে পরিবারের অপর সদস্যরা থাকতেন। সকালে শোবার ঘরের বিছানার ওপর রুবির রক্তাক্ত ও শিশুর শ্বাসরোধ করা লাশ পাওয়া যায়।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞাসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘনবসতিপুর্ন এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনা এলাকায় আলোড়ন ফেলে। ঘরে লাশ পাওয়ার পর সেখানে শত শত লোক ভীড় জমায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়াও ইতোমধ্যে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো সুস্পস্ট নয়, তবে পরকীয়া কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে।

আরো সংবাদ