ক্রিকেট

১০ রানে ৮ উইকেট! বিশ্বরেকর্ড নাদিমের

১০ রানে ৮ উইকেট! ভারতের বিজয় হাজারে ট্রফিতে বৃহস্পতিবার রেকর্ড করলেন ঝাড়খণ্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ নাদিম। শুধু ভারতীয় ক্রিকেটেই নয়, লিস্ট এ ক্রিকেটের ইতিহাসেই এটা সর্বকালীন রেকর্ড।

নাদিম ভাঙলেন আর এক বাঁ-হাতি স্পিনার রাহুল সাংভির রেকর্ড। ১৯৯৭-৯৮ মরসুমে দিল্লির হয়ে নেমে উনাওতে হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে সাংভি ১৫ রানে নিয়েছিলেন আট উইকেট। দুই দশক পরে নাদিম সেটাকেই পেরিয়ে গেলেন। চেন্নাইয়ের মুরুগাপ্পায় ২০১৮-১৯ মরসুমে রাজস্থানের বিরুদ্ধে গড়লেন নয়া রেকর্ড। তার বোলিং গড় ১০-৪-১০-৮।

এদিন নাদিম রাজস্থানের প্রথম আট উইকেটই নিলেন। একসময় মনে হচ্ছিল, হয়তো দশ উইকেট তিনিই নেবেন। কিন্তু তা হয়নি। আট উইকেটেই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাকে। তবে তার দাপটেই ২৮.৩ ওভারে মাত্র ৭৩ রানে শেষ হয় রাজস্থানের ইনিংস।

বিশ্বক্রিকেটে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে প্রথম আট উইকেট নিয়েছিলেন কিথ বয়েস। ১৯৭১ সালে তিনি ২৬ রানে নেন আট উইকেট। ১৯৮৭ সালে ডেরেক আন্ডারউড ৩১ রানে নেন আট উইকেট। পরের বছর মাইকেল হোল্ডিং ২১ রানে আট উইকেট নিয়ে বয়েসের রেকর্ড ভাঙেন। হোল্ডিংকে আবার পেরিয়ে গিয়েছিলেন সাংভি (৮-২১)। আর সাংভিকে টপকে গেলেন নাদিম।

এর মাঝখানে চামিন্ডা ভাসও নিয়েছিলেন আট উইকেট। তিনিই একমাত্র বোলার যিনি একদিনের আন্তর্জাতিকে আট উইকেট নিয়েছিলেন। ২০০১-০২ মরসুমে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৯ রানে আট উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

আরো পড়ুন :
পাকিস্তানকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ভারত
এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসরে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মর্যাদার লড়াইয়ে জিতলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। আজ এ’ গ্রুপে এশিয়া কাপের পঞ্চম ম্যাচে টিম ইন্ডিয়া ৮ উইকেটে হারিয়েছে চিরপ্রতিন্দ্বন্দি পাকিস্তানকে। এ্ই জয়ে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে খেলতে নামবে ভারত। আর গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে শেষ চারে খেলতে হবে পাকিস্তানকে।

দুবাইয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। শেষ চার নিশ্চিত থাকায় পরের রাউন্ডে উঠার কোন ঝক্কি-ঝামেলা নেই, তবে এটি দু’দলের কাছে মর্যাদার লড়াই। তাই জয় ছাড়া অন্য কোন লক্ষ্যই ছিলো না তাদের। টস জিতেই প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের। বল হাতে পেয়েই পাকিস্তানের ওপেনারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন ভারতের দুই পেসার ভুবেনশ্বর কুমার ও জসপ্রিত বুমরাহ।

ইনিংসের তৃতীয় ও পঞ্চম ওভারে পাকিস্তান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন ভুবেনশ্বর। দু’ওপেনারকে বিদায় দেন ভুবি। ইমাম উল হক ২ ও ফখর জামান শুন্য হাতে ফিরেন। ৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান। সেখান থেকে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন বাবর আজম ও শোয়েব মালিক। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে রান তোলায় মনোযোগ দেন তারা। নিজেদের পরিকল্পনায় সফলও হন পাকিস্তানের দুই মিড-অর্ডার ব্যাটসম্যান। ফলে বাবর ও মালিকের ব্যাটিং দৃঢ়তায় শতরানের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানের স্কোর।

কিন্তু শতরানের পৌছানোর আগেই বাবর ও মালিকের জুটিতে ভাঙ্গন ধরান ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব। ৪৭ রানে থাকা বাবরকে বোল্ড করেন কুলদীপ। ৬২ বল মোকাবেলা করে ৬টি চারে নিজের ইনিংসটি সাজান বাবর। মালিকের সাথে ১০৩ বলে ৮২ রান যোগ করেন বাবর।
বাবরের বিদায়ের পর ভয়ংকর হয়ে উঠেন ভারতের অকেশনাল বোলার কেদার যাদব। ২৫ রানের ব্যবধানে পাকিস্তানের মিডল-অর্ডারের ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। এরমধ্যে আরও একটি উইকেটের পতন হয়, সেটি রান আউট। কেদারের শিকার হন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ, আসিফ আলি ও শাদাব। সরফরাজ ৬, আসিফ ৯ ও শাদাব ৮ রানে আউট হন। আর রান আউটের ফাঁেদ পড়েন মালিক। ১টি করে চার ও ছক্কায় ৬৭ বলে ৪৩ রান করেন মালিক।

১২১ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে বড় স্কোরের আশা শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের। তারপরও দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দিতে অষ্টম উইকেটে লড়াই করার চেষ্টা করেন পাকিস্তানের লোয়ার-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ আমির। তবে ভারতের পেসার বুমরাহ’র শিকার হয়ে আমিরের সাথে বড় জুটি গড়তে পারেননি ফাহিম। ২টি চারে ৪৪ বলে ২১ রান করে থেমে যান ফাহিম।

এরপর পাকিস্তানের শেষ দু’ব্যাটসম্যান অপরপ্রান্তে থাকা আমিরকে সঙ্গ দিতে না পারলে ১৬২ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। তখনও ইনিংসের ৪১ বল বাকী ছিলো। ২৬ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন আমির। ভারতের ভুবেনশ্বর ও কেদার ৩টি করে, বুমরাহ ২টি এবং কুলদীপ ১টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৬৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরু থেকে দেখেশুনে খেলতে থাকেন ভারতের দুই ওপেনার অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। প্রথম ৬ ওভার থেকে মাত্র ১৭ রান যোগ করতে পারেন তারা। উইকেটে সেট হয়ে ধীরে ধীরে মারমুখী হয়ে উঠেন রোহিত। এতে নবম ওভারের চতুর্থ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেয় ভারত।

দলকে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ দিয়ে রোহিত নিজেও দেখা পান অর্ধশতকের। নিজের ৩৬তম বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৫তম ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান রোহিত। হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটি বড় করতে পারেননি ভারত দলপতি। ৫২ রানে থেমে যান রোহিত। তাকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দেন লেগ-স্পিনার শাদাব খান। ৩৯ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান রোহিত।

দলীয় ৮৬ রানে অধিনায়ককে হারিয়ে ভড়কে যাননি ভারতের আরেক ওপেনার ধাওয়ান। রান তোলার দায়িত্বটা নিজ কাঁেধ তুলে নেন তিনি। কিন্তু দলীয় ১০৪ রানে পাকিস্তানের পেসার ফাহিম আশরাফের শিকার হন ধাওয়ান। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৪ বলে ৪৬ রান করেন আগের দিন হংকং-এর বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ধাওয়ান।

 

আরো সংবাদ