২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্যারাগুয়েতে ভয়াবহ বন্যা : হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন

-

প্যারাগুয়ে রিভারের ভেঙ্গে পড়া তীরের কাছে ৭০ হাজার লোক বাস করে। সেখানে পানির স্তর কোনো কোনো স্থানে সাত মিটার উঁচুতে পৌঁছেছে। গ্রাসিয়েলা একোস্টা তার জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

একটি ডিঙ্গি নৌকায় ৩৯ বছর বয়সী এই গৃহবধু খাট, ওয়ারড্রোব, টেবিল ও পোষা কুকুর পিরুলিনকে তুলেছেন।

তিনি তার মেয়ের সাথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আর্জেন্টিনা যাবার জন্য প্রস্তুত। সেখানে ক্লোরিন্ডা শহরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে চাইছেন তিনি।

একোস্টা বলেন, ‘আমার যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। এটা আমার জন্য অত্যন্ত কঠিন সময়। বন্যার কারণে আমি আমার সবকিছু নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি বন্যাটা যেন শেষ হয়ে যায়। এতে আমার অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

যাহোক, নানাওয়াতে আকোস্টার বাড়ি ছাড়ার কোন সুযোগ নেই। আর্জেন্টিনা সীমান্তবর্তী শহরটির লোকসংখ্যা মাত্র ৬ হাজার।
একোস্টা বলেন, ‘পানি নেমে যাওয়া মাত্রই আমি বাড়ি ফিরে যাব।’

নানাওয়ায় মাত্র ৫শ লোক বাড়িতে থাকতে পেরেছেন। বন্যার কারণে তাদের উপরের তলায় থাকতে হচ্ছে। বাড়ির নিচের দিকটা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ নদী প্যারাগুয়ে রিভার দুকূল উপচে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করায় নানাওয়ার দরিদ্র এলাকার বাসিন্দাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

আবহাওয়া ও জলানুসন্ধান বিভাগের সহকারী পরিচালক নেলসন পেরেজ বলেন, প্যারাগুয়েবাসীরা ১৯৮৩ সালে এর চেয়েও ভয়াবহ বন্যা দেখেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এটা প্যারাগুয়ে রিভারের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা নয়। কিন্তু আগের চেয়ে এখন অনেক লোক নদীর কাছে বাস করায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা হবে বেশি।’

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে নদীতে পানির পরিমাণ এতোটাই কম ছিল যে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছিল। নদীতে নৌযান চলাচল কঠিন ছিল।

রুবেন একোস্টা (৫৫) বলেন, ‘আমি এর আগে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখিনি।’

পেরেজ বলেন, ‘মার্চ মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়েও তিনগুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরপর এপ্রিল ও মে মাসেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে।’

অস্বাভাবিক বৃষ্টির জন্য তিনি নির্বিচারে বনভূমি উজাড় করাকে দায়ী করেন।

বুক সমান পানি নিয়ে রিগোবার্তো নুনেজ তার জিনিসপত্র ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ি ছাড়ছেন।

৪৭ বছর বয়সী এই সেলসম্যান বলেন, ‘আমি তাদের দূরে কোনো নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে চাই।’

শহরটিতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, পুলিশও নেই। স্থানীয়রা লুটেরাদের ভয় পাচ্ছে।

নুনেজ ক্লোরিন্ডা বস্তিতে আর্জেন্টাইন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত একটি কেন্দ্রে যাচ্ছেন। সেখান ইতোমধ্যেই তার আসবাবপত্র রেখে এসেছেন।
এনরিক কার্দোজোর কারখানাটি ইতোমধ্যেই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

৫১ বছর বয়সী চার সন্তানের এই জনক বলেন, ‘বন্যায় আমি আমার সোফা, আলমারি হারিয়েছি। এগুলোকে বন্যার পানি থেকে বাঁচানোর মতো কোনো স্থান ছিল না।’

পরিবারটি তাদের বাড়ির দোতলায় অবস্থান করছে। বাড়িটি নদী থেকে মাত্র ১৫ মিটার দূরে।

কারডোজো বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টি হয়েছে। একদিনে পানি এক মিটার বেড়ে গেছে। আমরা সব জিনিস রক্ষা করতে পারিনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনি এখন শুষ্ক জমিতে পা রাখতে পারবেন না। এটা ইতালির ভেনিস নগরীর মতো হয়ে গেছে। আমরা গোন্ডোলা যাচ্ছি।’


আরো সংবাদ



premium cement
এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি

সকল