১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১১৮তম জন্মদিন পালন করলেন তিনি

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিটার বাজিয়ে শোনান জুলিয়া ফ্লোরেস - ছবি : সংগ্রহ

গত শুক্রবার নিজের ১১৮তম জন্মদিন পালন করেছেন বলিভিয়ার এক নারী। এ উপলক্ষে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দেশটির এই নাগরিকের বাড়িতে ছিলো জমকালো আয়োজন। পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমন্ত্রিত ছিলেন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে।

জুলিয়া ফ্লোরেস নামের এই বৃদ্ধার বসবাস বলিভিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় শাপারে প্রদেশের রাজধানী সাকাবা শহরে। এই বয়সেও চলাফেরা করার মতো যথেষ্ট সক্ষম ও সুস্থ আছেন তিনি। তাইতো মনের আনন্দেই পালন করেছেন ১১৮তম জন্মদিন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বেশ স্বচ্ছন্দ ছিলেন জুলিয়া ফ্লোরেস। ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী পোশাকে হাজির হন জুলিয়া ফ্লোরেস। শারাঙ্গ নামে স্থানীয়ভাবে প্রচলিত বিশেষ গিটার বাজিয়ে শোনান উপস্থিত অতিথিদের এবং সবাইকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন।

মাটির তৈরি তৈরি একটি বাড়িতে বাস করেন জুলিয়া, বাড়ির চারদিকে রয়েছে বাগান। বাড়িতে বিড়াল, কুকুর ও মুরগি পোষেন তিনি। আগুস্টিনা ভারনা নামে এক ভাতিজি থাকে জুলিয়ার সাথে, তার বয়সও ৬৫ বছর।

(নিজ বাড়িতে পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটাচ্ছে জুলিয়া ফ্লোরেস)

বলিভিয়ার প্রশাসন জানিয়েছে, জুলিয়া ফ্লোরেস বর্তমানে দেশটির সবচেয়ে বয়স্ক নাগরিক এবং সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষও তিনি। ১৯০০ সালের ২৬ অক্টোবর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় পোতোসি অঞ্চলে এক আদিবাসী পরিবারে জন্ম জুলিয়া ফ্লোরেসের। স্থানীয় প্রতিবেশীদের কাছে ‘মামা জুলিয়া’ নামে পরিচিত ফ্লোরেস।

স্থানীয় লোকজন বলছে, এই বৃদ্ধা বয়সের স্বীকৃতি পেলে তিনি হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হিসেবে পরিচিত হতেন; এবং সাম্প্রতিক অতীতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বয়স পাওয়া মানুষ হতেন। কিন্তু এই পর্যাপ্ত নথির অভাবে গিনেস বুক অব রেকর্ড তাকে স্বীকৃতি দেয়নি সবচেয়ে বয়স্ক নাগরিক হিসেবে। বলিভিয়ার নাগরিকদের গড় আয়ু ৭১ বছর, সেখানে জুলিয়া ফ্লোরেসে বয়স এক শ’ ছাড়িয়েছে আরো দেড় যুগ আগে। যা সত্যিই অবাক করার মতো।

স্থানীয় প্রশাসন বেশ উৎসাহ নিয়ে পালন করেছে এই বৃদ্ধার জন্মদিনের অনুষ্ঠানটি। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেও ছিলো উৎসাহ -উদ্দীপনা। সাকাবা প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তা জুয়ান কারবাহাল স্থানীয় একটি পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ একটি দিন, স্বীকৃতি পাওয়ার দিন। আমারা আমাদের দেশের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষটির জন্মদিন পালন করছি’।

বলিভিয়ার আন্দিজ পবর্তমালা এলাকায় এর আগে কারমেলো ফ্লোরেস নামে এক নারী বেঁচেছিলেন ১২৩ বছর। তার সময়ে তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। নামে মিল থাকলেও জুলিয়া ফ্লোরেসের সাথে তার কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক নাই। গিনেস বুক অব রেকর্ড চালু হওয়ার পর সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচা মানুষটির নাম জেইন ক্যালমেন্ট, ফরাসি এই নারীর মৃত্যু হয় ১৯৯৭ সালে যখন তার বয়স ছিলো ১২২ বছর ১৬৪দিন। এই দুজনের হিসেবে ধরলে গিনেস বুক চালু হওয়ার পর জুলিয়া ফ্লোরেসই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স পাওয়া মানুষ।


আরো সংবাদ



premium cement