২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার বাড়ছেই

-

প্রতিদিন ঢাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে অন্তত দুই কোটি পলিথিন। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার, উৎপাদন আইনে নিষিদ্ধ। কিন্তু আইন থাকলেও ব্যবহার বন্ধ হয়নি পলিথিনের। রাজধানী ঢাকার অলিগলিতে, বাজারে, মুদি দোকানে দেদার মিলছে পলিথিন।
ঢাকার কাওরান বাজারের এক সবজি বিক্রেতা জানান, তিনি প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ মণ সবজি বিক্রি করেন। আর এই সবজি বিক্রির বিপরীতে তাকে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হয় ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ২০০ পলিথিন ব্যাগ। আইনগতভাবে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ক্রেতাদের আগ্রহের কথা ভেবে তাকে পলিথিন রাখতে হয়। তিনি বলেন, পলিথিনের পরিবর্তে সবজি রাখার বড় প্যাকেট কিনতে গেলে দাম পড়ে ১০ থেকে ২০ টাকা। ক্রেতারা এই প্যাকেট কিনতে চান না। তাই অনেক সময় দু-এক কেজি সবজির জন্য পলিথিন দরকার পড়ে। পলিথিনের জন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয় না। এ কারণে ক্রেতারাও পলিথিন ব্যবহারে আগ্রহী। শুধু কাওরান বাজারে নয়, প্রকাশ্যে পলিথিনের ব্যবহার হচ্ছে রাজধানী ঢাকার সর্বত্র।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে একেকটি পরিবার গড়ে প্রতিদিন চারটি পলিথিন ব্যবহার করে। দুই কোটি মানুষের বিপরীতে ৫০ লাখ পরিবার হলে ঢাকায় প্রতিদিন পলিথিন ব্যবহারের পরিমাণ দুই কোটি।
একটা সময় ছিল যখন বাজারে গেলে মানুষজন হাতে করে একটা চটের ব্যাগ নিয়ে
যেতেন। আশির দশকে প্রথম বাজারে পলিথিনের ব্যবহার শুরু হয়। এর পর থেকে বাজারে যে ধরনের দোকানেই যান না কেন বিনে পয়সায় পলিথিনের ব্যাগ দেয়া শুরু হলো।
সহজে সব দোকানে বিনে পয়সায় চাইলেই পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া যায়। ব্যবহার শুরুর ১৫ থেকে ২০ বছরের মাথায়। ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে এর উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহারকে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়।
শুরুর দিকে বেশ কড়াকড়ি হলেও ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায় আইনের প্রয়োগ। আর এখন বাংলাদেশে এটি যে নিষিদ্ধ তার বোঝারই কোনো উপায় নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেছেন, প্লাস্টিক এমন একটি পদার্থ, যার আয়ুষ্কাল হাজার হাজার বছর। পলিথিন মাটিতে গলে ক্ষয় হয় না বা মাটির সাথে মিশে যায় না। এটি মাটিতে পানি ও প্রাকৃতিক যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে; তার চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করে। যার ফলে মাটির গুণগত মান হ্রাস পায়। গাছ তার খাবার পায় না। মাটি ও পানিতে প্লাস্টিক কণা ছড়িয়ে পড়ে। যা হয়তো পানি থেকে মাছের শরীরে যাচ্ছে।
মাটিতে প্লাস্টিকের তৈরি টক্সিক রাসায়নিক পদার্থ গাছে মিশে যাচ্ছে। আর তা শেষমেশ শুধু পশুপাখি নয়, মানুষের শরীরেও এসে পৌঁছায়। প্লাস্টিক মানুষের শরীরে আরো অনেক মারণ ব্যাধির পাশাপাশি ক্যান্সারের জন্য দায়ী। যে সুবিধার জন্য আপনি প্লাস্টিক ব্যবহার করেন যেমনÑ ফুটো না হলে এতে পানি ঢোকে না বা বের হয় না।

 


আরো সংবাদ



premium cement