২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গোপন সফরে গ্রিসে খলিফা হাফতার

- ছবি : সংগৃহীত

লিবিয়ার প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার খলিফা হাফতার গোপনে গ্রিস সফর করছেন। আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠেয় বার্লিন সম্মেলনের আগে গোপন এ সফরে গেলেন তিনি। এ দিকে বার্লিন সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানোয় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গ্রিস। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী হাফতার বাহিনী এবং ত্রিপোলিতে জাতিসঙ্ঘ অনুমোদিত স্বীকৃত সরকারের মধ্যে ৯ মাসের লড়াই অবসানের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা হলো বার্লিনের এই আলোচনা।

তা ছাড়া জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাশ জানিয়েছেন, কমান্ডার খলিফা হাফতার রোববারের বার্লিন সম্মেলনে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। মাশ আরো বলেন, হাফতার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আল জাজিরার খবরে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত বিমানে এথেন্সের উদ্দেশে রওনা দেন হাফতার। এএফপিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার একটি বিলাস বহুল হোটেলে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন খলিফা হাফতার। গ্রিক সরকার হাফতারের সাথে এ বৈঠকের খবর আগে প্রকাশ করেনি।

এ দিকে এক টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার এথেন্সে পৌঁছানোর পর হাফতারকে একটি বিলাসবহুল হোটেলে নেয়া হয় এবং সেখানে তিনি গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস ডেন্দিয়াসের সাথে প্রাথমিক সাক্ষাৎ করেন। গ্রিসকে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং ত্রিপোলি সরকার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্কের সাথে সামুদ্রিক ও সামরিক সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় অ্যাথেন্স ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বার্লিন সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চলমান সঙ্ঘাত থেকে সব বিদেশী শক্তি প্রত্যাহার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন। এমনটিই জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।

বার্লিন সম্মেলনে রাশিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আফ্রিকান ও আরব দেশের কর্মকর্তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

লিবিয়া সঙ্ঘাতের সাথে গ্রিস সরাসরি জড়িত, এথেন্সের এমন দাবি জার্মান সরকার প্রত্যাখ্যান করায় এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গ্রিস সরকার। এবং তখন থেকেই দেশটি বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিল। ত্রিপোলিতে জাতিসঙ্ঘ অনুমোদিত স্বীকৃত সরকার (জিএনএ) নভেম্বর মাসে তুরস্কের সাথে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে শক্তির প্রভাব বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমুদ্র ও সামরিক সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করার পর গ্রিস লিবিয়ায় আরো সক্রিয় ভূমিকা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী মিতসতাকিস গত বৃহস্পতিবার বলেন, গ্রিসকে বার্লিনের আলোচনা থেকে বাদ দেয়া ‘ভুল’ এবং গতকাল এ বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সাথে কথা বলবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধরত দুই পক্ষ জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত ত্রিপোলি সরকার ও মিসর-সৌদি-আমিরাত সমর্থিত জেনারেল হাফতার বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখনো চুক্তির চূড়ান্ত স্বাক্ষর হয়নি।

গত সোমবার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতীয় সরকারের (জিএনএ) প্রধান ফয়েজ আল-সররাজ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমান্ডার খলিফা হাফতার রাশিয়ায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য মস্কো গিয়েছিলেন। জিএনএ’র পক্ষে সররাজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও হাফতার চুক্তি স্বাক্ষর ছাড়াই মস্কো ত্যাগ করেন। আল জাজিরা।


আরো সংবাদ



premium cement