২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মুসলিম কৃষক বাবার নোবেলজয়ী সন্তান আবি আহমদ

ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ আলি - ছবি : সংগৃহীত

এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। প্রতিবছরের মতো এ বছরও নোবেল পুরস্কারের এই ক্যাটাগরি নিয়েই সবার আগ্রহ ছিল। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় শততম শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে নরওয়ের নোবেল কমিটি।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর নোবেল পুরস্কারের জন্য ৩০১টি মনোনয়ন জমা পড়ে। যার মধ্যে ২২৩ জন ব্যক্তি এবং বাকি ৭৮টি প্রতিষ্ঠান। তবে গত ৫০ বছর ধরে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগে মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে না নোবেল প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ

আবি আহমেদ আলির জন্ম ১৫ আগস্ট ১৯৭৬। ২ এপ্রিল ২০১৮ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী ইথিওপিয়ার ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি ইথিওপিয়ান পিপল'স রেভ্যুলেশনারী ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও অরোমু ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ইথিওপিয়ান পার্লামেন্ট এবং ওডিপি ও ইপিআরডিএফ এর নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আর্মি ইন্টেলিজেন্সের একজন সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে, আবি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে আবি আহমেদের প্রচেষ্টাতেই ইরিত্রিয়ার সঙ্গে ইথিওপিয়ার পুরনো বৈরিতার অবসান ঘটেছে।

১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া সীমান্ত যুদ্ধে দু’দেশের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ২০০০ সালে তাদের মধ্যে শান্তিচুক্তি হলেও উত্তেজনা ঠিকই ছিল। শান্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার দীর্ঘ ২০ বছরের সমস্যার নিরসনের জন্য তিনি ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।


আবি ইথিওপিয়ার অরোমিয়া এলাকার ঐতিহাসিক কাফ্ফা প্রদেশ এর (বর্তমান জিমা অঞ্চল) বিশাসাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আহমেদ আলি ছিলেন মুসলমান অরোমু সম্প্রদায়ের লোক। আর তার চার স্ত্রীর মধ্যে আবির মা তিজিটা ওল্ডে ছিলেন খ্রিস্টান আমহারা সম্প্রদায়ের। আবি তার বাবার ১৩তম সন্তান (যিনি একাধিক বিয়ে করেছিলেন) এবং তার মায়ের ৬ষ্ঠ ও ছোট সন্তান।

শৈশবে তার নাম ছিলো আবিয়ত (ইংরেজিতে বিপ্লব)। তার নামটি ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়া সংঘটিত হওয়া ডার্গ রেভ্যুলোশন থেকে নেওয়া। আবি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও পরে আগারু নামক উপশহরের এক স্কুলে তার মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। ব্যক্তিগত প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি তার লেখাপড়ার প্রতি বেশ আগ্রহী ছিলেন, যেটি পরবর্তীতে তাকে অন্যান্য শিক্ষায় ও উন্নতিতে সহায়তা করেছিলো।

ইথিওপিয়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সে কাজ করার সময় আবি ২০০১ সালে আদ্দিস আবাবার মাইক্রোলিংক ইনফরমেশন টেকনোলজি কলেজ থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলের ওপর তার প্রথম ব্যচেলর ডিগ্রি লাভ করেন।

আবি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনিস থেকে ট্রান্সফরম্যাশনাল লিডারশীপ এর ওপর এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ২০১৩ সালে আদ্দিস আবাবার অ্যাশল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধীনে লেডস্টার কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লিডারশীপ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।

আবি কয়েকবছর পূর্বে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে পিএইচডির জন্য লেখাপড়া শুরু করেন এবং ২০১৭ সালে আদ্দিস আবাবা ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

তিনি গোন্ডারের "জিনাস তায়াকিউ" নামক আমহারা মহিলাকে বিয়ে করেন, যখন তারা উভয়েই ইথিওপিয়ান ডিফেন্স ফোর্সে কর্মরত ছিলেন। তারা উভয়েই তিন কন্যা সন্তান এবং সম্প্রতি দত্তক নেওয়া এক পুত্র সন্তানের পিতামাতা।

আবি একজন বহুভাষায় কথা বলতে পারা ব্যক্তি, যিনি ইংরেজি, আফান অরুমো, অ্যামারিক এবং তিগ্রিনিয়া ভাষায়ও কথা বলতে পারেন। আবি যীশুর বাণী ও গসফেলে বিশ্বাসী একজন পূর্ণ খিস্ট্রান।  উইকিপিডিয়া।


আরো সংবাদ



premium cement