২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নতুন অনিশ্চয়তায় সুদান

জনগন এখনো বিক্ষোভ করছে বেসামরিক শাসনের দাবিতে - ছবি : সংগৃহীত

৩০ বছর ধরে দেশ শাসন করা ওমর আল বশিরের পদত্যাগের পর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে প্রতিক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আওফকে প্রধান করে যে শাসক পরিষদ গঠন করা হয়েছিল তাও টিকলো না সুদানে। দায়িত্ব গ্রহণের পরদিনই পদত্যাগ করেন আওয়াদ। একই দিন পদত্যাগ করেছেন গোয়েন্দা প্রধান সালাহ গোশ। তাই নতুন করে আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে সুদান।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আওফের নেতৃত্বেই হয়েছিল সামরিক অভ্যুত্থান। যদিও দেশটির জনগন এখনো বিক্ষোভ করছে বেসামরিক শাসনের দাবিতে। কিন্তু তা উপেক্ষা করে সেনাবাহিনী অন্তবর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে।

৩০ বছর পর স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্তি মিললেও সহসাই গণাতান্ত্রিক পন্থায় ফিরে যাওয়ার কোন আভাস দেখা যাচ্ছে না উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশটিতে। ওমর আল বশিরকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেই দুই বছরের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে সেনাবাহিনী। তারমানে আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে অনেকটা জোর করে পদত্যাগ করায় সেনাবাহিনী। মূলত এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে আওফ। সাবেক জেনারেল আওয়াদ ২০১৫ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন। মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে তাকে ভাইস প্রেসিডেন্টে ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট বশির।

বশিরের পদত্যাগের পর আওয়াদকে প্রধান করেই ২ বছরের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করা হয়; কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরদিনই পদত্যাগ করে আওয়াদ। দারফুর সংঘাতের কারণে বিতর্কীত সেনাকর্মতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন আওয়াদ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাও। ধারণা করা হচ্ছে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপের কারণেই তিনি ক্ষমতা ছেড়েছেন।

এরপর লেফট্যানেন্ট জেনারেল আবদুল ফাতাহ আবদুর রহীম বুরহানকে করা হয়েছে নতুন সরকার প্রধান। আওয়াদ পদত্যাগ করার পর রাস্তায় ব্যাপক উল্লাস করেছে বিক্ষোভকারীরা। ওমর আল বশিরের প্রধান সহচরদের একজন ছিলেন আওয়াদ। ২০০৩ সালে দারফুরে গণহত্যার সময় সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন আওয়াদ। ওই গণহত্যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে।

নতুন দায়িত্ব নেয়া ৬০ বছর বয়সী বুরহান ছিলেন দেশটির বর্ডার গার্ড বাহিনীর প্রধান। এছাড়া চীনে কূটনৈতিক মিশনেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১১ সালে সুদান থেকে পৃথক হওয়া দক্ষিণ সুদানে যুদ্ধের সময় তিনি সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে আওয়াদের মতো বিতর্কীত কর্মকর্তা ছিলেন না বুরহান। তবে ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে তিনিও ছিলেন।

গত কয়েকমাস ধরে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে সুদানের রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন জায়গা বিক্ষোভ করছে জনগণ। তার রেশ ধরেই তাকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হলো সেনাবাহিনীর চাপে।

এদিকে সেনাবাহিনীর দুই বছর মেয়াদী অন্তবর্তীকালীন সরকার ঘোষণা পর গত দুই দিনে দেশটিতে বিক্ষোভে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীর চায় দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দিয়ে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। তারা এখনো রাজপথ ছাড়েনি।


আরো সংবাদ



premium cement