২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভাগ্যে থাকলে ২ মিনিট দেরিই হয়

আন্তোনিস মাভরোপুলস ও তার টিকিট - ছবি : সংগৃহীত

সব তো ‘নয়টার ট্রেন কয়টায় চলে’-এর মতো চলে না। তাই তো মাত্র দুই মিনিট দেরি হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিমানবন্দরের দরজা। আর তাতেই যেন প্রাণে বেঁচে গেছেন গ্রিসের এক যাত্রী। এখন ওই দুই মিনিটকে সারা জীবনের সবচেয়ে ভালো দুই মিনিট বলে মনে হচ্ছে তার কাছে।

গ্রিসের নাগরিক আন্তোনিস মাভরোপুলসের নাইরোরি যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছিলেন ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের। কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছতে তার দুই মিনিট দেরি হয়ে গিয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী তার বিমানে উঠার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লাইট মিস করায় তিনি ফেটে পড়েছিলেন ক্ষোভে। এ অবস্থায় বিমানবন্দরের কর্মীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ তুলেছিলেন।

কিন্তু তার ছয় মিনিটের মধ্যেই যে দুর্ঘটনার খবর এসে পৌঁছায় তাতে ক্ষোভের জায়গায় নিজের ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতে শুরু করেন ওই যাত্রী। ওই দেরি জন্যই যে তিনি বেঁচে গিয়েছেন ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি থেকে।

গত রোববার নাইরোবিগামী ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান ইটি-৩০২ ফ্লাইট আকাশে ওড়ার মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যে ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় ৮ ক্রু ও ১৪৯ জন যাত্রীর সবাই নিহত হয়। ওই ফ্লাইটেই ১৫০তম যাত্রী হিসাবে যাওয়ার কথা ছিল আন্তোনিস মাভরোপুলসের।
এত বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর মাভরোপুলস জানিয়েছেন, রোববারটা ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে ‘লাকি ডে’। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ওই দিনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে পোস্ট করেছেন সেই ফ্লাইটের টিকিটটিও।

আরো পড়ুন : ইথিওপিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত ১৫৭ আরোহীর সবাই নিহত
বিবিসি ও রয়টার্স ১১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

ইথিওপিয়ায় ১৪৯ জন যাত্রী ও আটজন ক্রুসহ একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে সবাই মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। বিমানটিতে ৩৩টিরও বেশি দেশের নাগরিক ছিল বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমানটি রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে কেনিয়ার নাইরোবিতে যাচ্ছিল। ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা বলছেন, উড়োজাহাজটি আকাশে ওড়ার পরপরই স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এই ঘটনার কথা প্রথম জানা যায় যখন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আবি আহমদ টুইটারে তার ‘গভীর সমবেদনা’ প্রকাশ করেন। এয়ারলাইন্সের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজধানী থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে বিশফু শহরের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বর্তমানে সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে। দেশটির সরকারি ওই বিমানসংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমানটি বোল বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৮ মিনিটে উড্ডয়ন করে। ছয় মিনিট পর ৮টা ৪৪ মিনিটে বিমানটির সাথে রাডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আদ্দিস আবাবা থেকে ৬২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বদিকের বিশোফতু শহরের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বিশোফতু শহরের আশপাশে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানটিতে ১৪৯ জন আরোহী এবং আটজন ক্রু ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কী কারণে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে সে ব্যাপারে এখনো কোনো পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যায়নি। ইথিওপিয়ার এই বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িং বলছে, তারা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে বিমান বিধ্বস্তের এ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। মাত্র দুই বছর আগে নতুন বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স ৮ তৈরি করা হয়। এর পরে ইথিওপিয়া এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হয় ২০১৮ সালে। তবে একই মডেলের অপর একটি ইন্দোনেশীয় বিমান পাঁচ মাস আগে বিধ্বস্ত হয়। ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ১৯০ জন নিহত হয়। আফ্রিকা মহাদেশের বিমান সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ বিমানসংস্থা হিসেবে মনে করা হয় ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সকে। গত বছর এই এয়ারলাইন্স বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় এক কোটি যাত্রী পরিবহন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় উঠে এসেছে। ৮ জন ক্রুসহ ১৫৭ আরোহী নিয়ে বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমানটি যখন বিধ্বস্ত হয তখন প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে চার পাশ। এর পরপরই বিমানটি ঢেকে যায় আগুনের লেলিহান শিখায়। বিমান বিধ্বস্তের চার ঘণ্টা পর উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও বাঁচাতে পারেননি কাউকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণের মাত্রা ও আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ওই সময় আশপাশের লোকজন বিধ্বস্ত বিমানটির কাছে যেতে পারেননি।

স্থানীয় এক ব্যক্তি বিবিসিকে বলেছেন, তিনি বিমানটির বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানের কাছেই অবস্থান করছিলেন। সকাল পৌনে ৯টায় হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণের পর আগুনের কুণ্ডলী দেখা যায়। বিস্ফোরণ ও আগুন এত শক্তিশালী ছিল যে আমরা বিমানটির কাছে ভিড়তে পারিনি। স্থানীয় ওই বাসিন্দা বলেন, পৌনে ৯টার দিকে বিধ্বস্ত হলেও দুর্ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছান বেলা ১১টায়। বর্তমানে সেখানে চারটি হেলিকপ্টার পৌঁছেছে। তবে কেউই বাঁচবে না। ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিওলদে গেব্রেমারিয়াম বলেছেন, দুঃখের সাথে নিশ্চিত করছি, বিমানের কোনো আরোহীই বেঁচে নেই। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রী, ক্রু ও অন্যদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন তিনি।

বিমানের এক আরোহীর মেয়ে উইন্ডি ওটিয়েনো রয়টার্সকে বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের ব্যাপারে কেউ এখন পর্যন্ত আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি শুধু ভালো কিছুর আশায়। তিনি বলেন, আমি মায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা আশা করছি, তিনি অন্য কোনো ফ্লাইটে আসবেন অথবা ফ্লাইট বাতিল করবেন। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করছেন না।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল