২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঘন কুয়াশায় যাত্রী দুর্ভোগ

বিমানের তিনটি উড়োজাহাজ ঢাকার পরিবর্তে কলকাতায়

ঘন কুয়াশায় যাত্রী দুর্ভোগবিমানের তিনটি উড়োজাহাজ ঢাকার পরিবর্তে কলকাতায় - ছবি : সংগৃহীত

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তিনটি উড়োজাহাজ নির্ধারিত সময়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পেরে শেষমেশ কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্রবসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে নামে। কুয়ালালামপুর, মাস্কাট ও দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের অপারেশনাল পদে দায়িত্বশীল কেউ না থাকায় এসব ফ্লাইটের শত শত যাত্রীকে ৬-৭ ঘণ্টা ভোগান্তির পর ঢাকায় ফিরে আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর টার্মিনাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-০৮৭) ফ্লাইটটি সোমবার ভোর রাত ৪টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করার কথা। কিন্তু ওই সময় ঘন কুয়াশার কারণে পাইলট রানওয়ে দেখতে না পেয়ে ডাইভারশন করে পাইলট ফ্লাইটটি ঘুরিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নিয়ে যান। সেখানে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে আসে।

শুধু কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইট নয়, একইভাবে বিমানের (বিজি-১২২) মাস্কাট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ফ্লাইটটি গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকায় নামতে না পেরে ৯টা ৫০ মিনিটে কলকাতায় গিয়ে নামে।

একইভাবে দুবাই থেকে (বিজি০৪৮) ঢাকাগামী ফ্লাইটটি সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় নামার কথা থাকলেও সেটিও নামতে পারেনি। পরে পাইলট একইভাবে টাওয়ারের সাথে কথা বলে ফ্লাইটটি ঘুরিয়ে সকাল ১০টার দিকে কলকাতায় নিয়ে অবতরণ করান।

অভিযোগ রয়েছে, এসব ফ্লাইটের যাত্রীদের কলকাতা বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের ভেতরেই অপেক্ষা করতে হয়েছে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর ঢাকার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ক্লিয়ারেন্স পেয়ে সেগুলো একে একে ফিরে আসে। এ সময়ের মধ্যে তিনটি ফ্লাইটের কয়েক শ’ যাত্রীকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে সময় কাটাতে হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের ডিজিএম তাহেরা খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলটিতে সংযোগ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।

বিমানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিদেশের বিভিন্ন স্টেশনে অপারেশনাল পদের কার্যক্রম না থাকার কারণে ঢাকায় কুয়াশা থাকার পরও ফ্লাইটগুলো ছেড়ে আসছে। আর এসেই এসব ফ্লাইট না নামতে পেরে ডাইভারশন হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে চলে যাচ্ছে। এতে বিমান আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি এসব ফ্লাইটের যাত্রীদেরও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, যদি ওই দেশগুলোতে অপারেশনাল পদের দায়িত্বশীল কেউ থাকতেন তাহলে ঢাকার সাথে যোগাযোগ করে ফ্লাইট প্রয়োজনে বিলম্বে ছাড়া হতো। যাতে কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর ফ্লাইটটি সহজে ঢাকায় নামতে পারত। যাত্রীদেরও কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, ফ্লাইট ডাইভারশন হওয়ার কারণে একজন পাইলটের ফ্লাইং আওয়ার সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ ঘণ্টা হলেও সেটি ১৬-১৭ ঘণ্টাও হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এটি সিভিল এভিয়েশন অথরিটির নিয়মের মধ্যে পড়ে না বলেও সূত্র জানিয়েছে।

গতকাল বিমানবন্দর টার্মিনাল সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, কুয়াশার কারণে প্রতি বছরই ফ্লাইট ডাইভারশন হয়ে থাকে। তবে এ বছর গতবারের তুলনায় ডাইভারশন বেশি হচ্ছে বলে তিনি জানান। এতে যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি উড়োজাহাজের (অক্সিলারি পাওয়ার ইউনিট) লাইফ টাইম কমে যাচ্ছে। ফুয়েল বার্ন হয়। এ ছাড়াও কলকাতা বিমানবন্দরের পার্কিং এবং অপারেশনাল বিলও সাথে যোগ হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ের ৭ ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় এসেছে।


আরো সংবাদ



premium cement