২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নির্মাণেই ৪৬৮ কোটি টাকা

গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য ২৯ ভবন

- ফাইল ছবি

গবেষণা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির চেয়ে ইনস্টিটিউটের ভবন নির্মাণেই ব্যয় হবে সিংহভাগ অর্থ। বহুতল আবাসিক ও অনাবাসিক ভবণসহ বিভিন্ন আকারের ২৯টি ভবন নির্মাণ হবে আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রকল্পে। আর গবেষণার জন্য সরঞ্জামাদির পেছনে ব্যয় হবে মাত্র ৫০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশন এই সব ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা জানতে চেয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় ৯ থেকে ১৫তলা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিতে হবে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ এবং একমাত্র হাইড্রোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, দেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য উন্নতমানের ও অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার ব্যবস্থা, পানি বিজ্ঞানসংক্রান্ত গবেষণার সুবিশাল পরিসর সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণের প্রস্তাব দেয়া হয়।

যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছ ৬৭৭ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নেই এই ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। যেখানে আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন থাকবে ২৯টি। এর মধ্যে আবাসিক ১৬টি ভবনের মধ্যে ১২ তলার একটি, ৯ তলার ২টি, ৩ তলার একটি, দুই তলার ১০টি, এক তলার দু’টি। আর অনাবাসিক ভবন ১৩টি হবে ১৫ তলার তিনটি, ১২ তলার দু’টি, ১০ তলার একটি, ৬ তলার তিনটি, ৪ তলার দু’টি এবং ৩ তলার একটি ভবন।

প্রকল্পের প্রেক্ষাপেট বলা হয়েছে, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেডিও-টিভির ভাষণে বলেছিলেন, পানিসম্পদ সম্পর্কে গবেষণা এবং নৌ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য অবিলম্বে একটি নৌ-গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণকে অবশ্যই প্রথম কর্তব্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে একটা সুসংহত ও সুষ্ঠু বন্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা আশু প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই এই পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ প্রকল্প। এ ইনস্টিটিউটে থাকবে মোট তিনটি প্রধান উপাদন। প্রথমত, হাইড্রোলজিক ইনস্টিটিউট। দ্বিতীয়ত, ড্রেজিং টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এবং তৃতীয়ত, টাইডাল ফ্লুম।

এখানে ডিপ্লোমা ও উচ্চডিপ্লোমা কোর্সের দ্বারা পড়ানো হবে পানিসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা। ইনোভেশন সিমুলেশন ল্যাব, টাইডাল এবং মনসন স্ট্যাডি এরিয়া ল্যাব চালানো হবে যাতে বাংলাদেশের ১০০ বছরের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা সফল করতে পারে। এটি ঢাকার খিলক্ষেতে স্থাপন করা হবে।

ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৬টি বিভিন্ন আকারের আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আর ১৩টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ২৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অন্য দিকে, ১৭টি বৈদ্যুতিক স্থাপনা নির্মাণে ৪২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তাবিত নকশা ও ব্যাখ্যা পরিকল্পনা কমিশন চেয়েছে। এই কাজ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ডিপোজিট আকারে প্রদানের ব্যবস্থা প্রকল্পে নেয়ার জন্যও বলা হয়েছে। প্রকল্পে গবেষণা সরঞ্জামাদির জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।

আর তিন হাজার ২৮১টি যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদির জন্য ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। কমিশনের উইং যন্ত্রপাতির বিস্তারিত তালিকা প্রকল্প প্রস্তাবনায় যুক্ত করার জন্য বলেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের যুগ্ম-প্রধান বলছেন, তিন বছরে মোট আটজন পরামর্শক রাখা হয়েছে। পরামর্শক খাতে ব্যয় হবে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এখানে প্রতিজনের মাসিক বেতন গড়ে চার লাখ টাকার বেশি ধরা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন এই ব্যয়কে যৌক্তিকপর্যায়ে আনার জন্য বলেছে। প্রস্তাবিত ভবনসমূহের সম্ভাব্য নকশা পূর্বেই সম্পন্ন করা যায়। শুধু সুপারভিশনের জন্য পরামর্শকের সংস্থান রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ ১৫ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। জিওবি অর্থায়নে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ প্রস্তাবিত অর্থ বাদ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement