২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সচিবালয় এলাকায় হর্ন বাজালে জেল-জরিমানা

-

বিজয় দিবসের পরদিন থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশ ‘নো হর্ন জোন’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে ‘নীরব জোন’ হিসেবে জিরো পয়েন্ট-পল্টন মোড়-সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় এটি কার্যকর করা হবে। এরপর থেকে ওই এলাকায় হর্ন বাজালে এক মাসের কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

এ সময়ের পর থেকে ওই এলাকায় চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে কোনো প্রকার হর্ন না বাজানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আজ রোববার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকরে করণীয় নির্ধারণী এক সভায় নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের দায়িতে) ড. মো: বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে গত ২৫ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশের এলাকা অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকাকে নিরব জোন বা নো হর্ন জোন হিসেবে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী প্রণীত শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬’এর ধারা ৮(২) এ প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে নীরব এলাকায় চলাচলকালে যানবাহনে কোনো প্রকার হর্ন বাজানোর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রথম অপরাধের জন্য অনধিক ১ (এক) মাস কারাদন্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয়ভাবে হর্ন বাজানোসহ শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কার্যকর করা হবে। সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি কার্যকর করতে সভা থেকে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ লক্ষ্যে সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, সব শ্রেণির জনগণ বিশেষ করে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সচেতন করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিলবোর্ড, ব্যানার স্থাপন, লিফলেট বিলি এবং মাইকিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখব, যাতে তাদের কর্মকর্তাদের গাড়ির চালকেরা সচিবালয়ের আশপাশে হর্ন না বাজায়। এছাড়া সচিবালয়ের ভেতরেও লিফলেট বিতরণ করা হবে। বাসচালকদের সচেতন করতে মতিঝিল, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হবে।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক সাদেকুল ইসলাম জানান, ১১ ডিসেম্বর থেকে তারা লিফলেট বিলি করবেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রণীত ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী ‘নীরব এলাকা’ বলতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বা একই জাতীয় অন্যকোনো প্রতিষ্ঠান এবং এর চারিদিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে বোঝায়।

সভায় জানানো হয়, জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকা নীরব জোন বা নো হর্ন জোন হিসাবে হর্ন বাজানো যাবে না। নীরব জোন হিসাবে কার্যকরের জন্য সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় চারটি নীরব চিহ্নিত সাইন বোর্ড স্থাপন করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement