২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

১০ হাজার হজযাত্রী ফেরার তথ্য নেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ে

১০ হাজার হজযাত্রী ফেরার তথ্য নেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ে - ছবি : নয়া দিগন্ত

দশ হাজারের বেশি হজযাত্রী দেশে ফেরত আসার তথ্য নেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে। এ জন্য হজ এজেন্সিগুলোর কাছে তাদের হজযাত্রীদের ফেরত আসার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান চাওয়া হয়েছে। যদিও এই হজযাত্রীদেরও প্রায় সবাই ফেরত এসেছেন দাবি করছে আশকোনা হজ অফিস।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকো সর্বমোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন (ব্যবস্থাপনাসহ) হজ পালনে সৌদি আরব যান। এর মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফিরতি শেষ ফ্লাইট পর্যন্ত দেশে আসা যাত্রীর সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ৬৯৫ জন। সৌদি আরবে মারা গেছেন সর্বমোট ১১৮ জন। এ হিসাবে দেশে ফেরত আসার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই এমন হজযাত্রীর সংখ্যা ১০ হাজার ৩৩৯ জন। এর মধ্যে আবার মক্কা ও মদিনায় বেশ কয়েকজন হাজী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকি হজযাত্রীরা দেশে ফিরেছেন এবং কিছু সংখ্যক সৌদি আরব থেকে অন্য দেশে ভ্রমণে গেছেন এমনটিই মনে করছে হজ অফিস ও হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব।

জানতে চাইলে হজ অফিসের পরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, হজ নিউজ পোট্রালে যে সংখ্যাটি দেয়া আছে, সেটি সঠিক নয়। ১০ হাজার হজযাত্রী দেশে ফেরেনি এটা তো হতেই পারে না। এর আগে ও পরেও হজযাত্রী ফেরত আসার তথ্য রয়েছে, যা সেখানে যুক্ত করা হয়নি। প্রায় সব হজযাত্রীই ফেরত এসেছেন। তবে সঠিক সংখ্যাটি আজ জানাতে পারবেন বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফিরতি ফ্লাইট চলাকালীন যেসব হজযাত্রী নির্ধারিত ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সেই সংখ্যাই হজ অফিস পেয়েছে; যা হজ অফিসের আইটি বিভাগ সংরক্ষণ করেছে। হজ অফিসের আইটি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ফিরতি হজ ফ্লাইট শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত ফেরত আসার যে সংখ্যা আমরা সিভিল এভিয়েশন ও অন্যান্য মাধ্যমে পেয়েছি, তাই দিয়েছি। এর বাইরে কিংবা ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে শিডিউল ফ্লাইটে বা থার্ড ক্যারিয়ারে আসা হজযাত্রীদের পরিসংখ্যান আইটি শাখার কাছে নেই। হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, হজযাত্রীদের বেশির ভাগই দেশে ফেরত এসেছেন বলে আমাদেরও ধারণা। অসুস্থ ও মৃত হাজীদের বাদ দিলে অল্প কিছু সংখ্যক হজযাত্রী এমন থাকতে পারেন যারা হয়তো সৌদি আরব থেকে অনওয়ার্ড ইউরোপীয় দেশ বা অন্য কোনো গিয়ে থাকতে পারেন। এমন কিছু সংখ্যক হাজী থাকেন যারা হয়তো প্যাকেজে যান কিন্তু রিটার্ন ফ্লাইট পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগেই থার্ড ক্যারিয়ারে নিজে টিকিট কেটে দেশে ফেরত আসেন। সেই পরিসংখ্যান অনেক সময় হজ অফিসের কাছে থাকে না। এ কারণেই হজের পর প্রতি বছরই এজেন্সিগুলোর কাছে হজযাত্রী ফেরত আসার তথ্য চাওয়া হয়। কারণ এজেন্সিগুলোকেই নিশ্চিত করতে হয় তাদের হজযাত্রীরা সবাই ফেরত এসেছেন। এ বছরও এরই মধ্যে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

হাব সভাপতি বলেন, এখন আসলে আগের মতো হজে গিয়ে ফেরত না আসার যুক্তিসঙ্গত কারণও নেই। আগে যেটা বলা হতো অনেকে কাজের জন্য থেকে যেতেন। এখন সৌদি আরবে মাত্র দেড় লাখ টাকায় লেবার ভিসায় যাওয়া যায়। ৬০ হাজার টাকায় ওমরাহ ভিসায় যেতে পারে। তা হলে কেন তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করে হজ ভিসায় যাবে?

এ দিকে হজ অফিসের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এরই মধ্যে এজেন্সিগুলোকে আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে নির্ধারিত ছকে তাদের হজযাত্রীদের ফেরত আসার সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছে। তাতে নিবন্ধিত হজযাত্রীর সংখ্যা, হজযাত্রীর বারকোড সংগ্রহের সংখ্যা, হজযাত্রী প্রেরণের সংখ্যা, ফেরত আসার সংখ্যা জানাতে বলা হয়েছে। জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে হজযাত্রী দেশে ফেরত না এলে শাস্তির বিধান রয়েছে।

গত ১০ আগস্ট পবিত্র হজ পালিত হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফিরতি হজ ফ্লাইট শেষ হয় এবং সৌদি সরকারও চলতি বছরের হজ কার্যক্রম সমাপ্তির অংশ হিসেবে জেদ্দা আন্তর্জাতিক হজ টার্মিনালের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে।
১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৫১টি ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশের হজযাত্রীরা দেশে ফেরেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৬৯টি ও সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৮২টি। এ বছর অনুমোদিত ৫৯৮টি এজেন্সি হজ ব্যবস্থাপনার কাজ করে।


আরো সংবাদ



premium cement