২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুনর্বহালের কথা বলে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়

পুনর্বহালের কথা বলে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় - সংগৃহীত

রাস্তায় হকার নেই। তাই চাঁদাও নেই। যে কারণে নতুন পথ ধরেছে চাঁদাবাজেরা। উচ্ছেদকৃত হকারদের রাস্তায় পুনর্বহাল করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। আবারো ব্যবসা করতে পারবে, সেই স্বপ্নে অসহায় মানুষেরা চাঁদাবাজদের হাতে তুলে দিচ্ছেন অর্থ। এমনই অভিযোগ করেছেন মতিঝিল এলাকার বেশ কয়েকজন হকার।

বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি এম এ কাশেম বলেছেন, রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাথ থেকে ইতোমধ্যে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর আগেই রাজধানীর হলিডে মার্কেটগুলোতে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে হলিডে মার্কেট চলে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই হলিডে মার্কেটগুলোও বন্ধ রয়েছে। সেসব মার্কেটে এখন আর হকার বসতে দেয়া হয় না। এম এ কাশেম বলেন, ফুটপাথ ও হলিডে মার্কেট থেকে লক্ষাধিক হকার উচ্ছেদ হয়েছে।
এ দিকে ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদ করায় অনেক চাঁদাবাজদের মাথায় হাত পড়েছে। আর তখনই ভিন্ন কৌশল ফেঁদেছে ওই সব চাঁদাবাজ। তারা উচ্ছেদকৃত হকারদের আবার ফুটপাথে বসিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ উপার্জন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

মতিঝিল এলাকার ২৩ জন হকার অভিযোগ করেছেন মতিঝিল জোনের ডিসির কাছে। তারা অভিযোগ করেছেন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে উচ্ছেদকৃত হকারদের বসানোর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকেরা। হকারদের মধ্যে নবী, সেলিনা বেগম, আবুল কাশেম, রাসেল মিয়া, মাহি উদ্দিন, খোকন, সোহেল হোসেন, হারুন, হানিফ, আক্কাছ, রতন, ছালাউদ্দিন, আনিছুর রহমান, হোসেন, রাজিব, মো: কাদের, নজরুল, রেখা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন, শাহিন (লম্বা), রাসেল, কালাম ও হাসান এই লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এলাকার সংসদ সদস্যের মৌখিক নির্দেশে প্রায় আট মাস আগে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। গত ৫ নভেম্বর স্থানীয় লাইনম্যান সাইফুল মোল্লার সভাপতিত্বে আইডিয়াল স্কুলের সামনে প্রায় ২০০ হকারের এক বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় সাইফুল মোল্লাকে ৩০ হাজার টাকা করে দিলে তিনি হকারদের ফুটপাথে বসার ব্যবস্থা করে দিবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হকাররা ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা সাইফুল মোল্লা, রতন মীর, সহিদ রেজা বাচ্চু, মারুফ হাসান সাগর, শহর আলী, শাজাহান মৃধা ও সোহেলকে দেয়ার কথা। এক মাসের মধ্যে ওই হকারদের ফুটপাথে বসানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও হকারেরা ফুটপাথে বসতে না পেরে তারা টাকা ফেরত চান। তখন তাদের গালাগাল ও হুমকি দেয়া হয়। হকারেরা তাদের টাকা উদ্ধারের জন্য ডিসি বরাবর আবেদন করেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই অভিযোগ প্রদান করা হয়।

কয়েকজন হকার জানান, ফুটপাথ থেকে তাদের উচ্ছেদ করায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ব্যবসা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকছেন। আর এই সুযোগটি নিচ্ছে চাঁদাবাজেরা। তারা হকারদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। রাজধানীর অন্যান্য ফুটপাথের যেসব স্থান থেকে হকার উচ্ছেদ হয়েছে সেখানেও এই একই পরিস্থিতি বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement