২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রস লবেন রস

-

রহিমুদ্দীন গাছিয়া। এলাকার সবচেয়ে দক্ষ গাছিয়া। শীতের সকাল মানেই রহিমুদ্দীন গাছিয়ার সেই চিৎকার, ‘এই রস লবেন, রস!’ কিন্তু এখন সেই আওয়াজ খুব একটা শোনা যায় না।
সেদিন গ্রামের হাটে রহিমুদ্দীন গাছিয়ার সাথে দেখা। দেখলাম মন খারাপ করে বসে আছে। ‘চাচা, রস বিক্রি করবেন না?’ ‘না, এহন গাছ আর রস দেয় না! গাঁয়ের হক্কল খেজুর গাছ কাইট্টা সাফ কইরা ফেলছে। আহা! একটা সময় কত গাছ আছিল এই গ্রামে! পাড়ায় পাড়ায় খেজুর গাছ। পুকুর পাড়ে, রাস্তার ধারে খেজুর গাছ। খেজুর গাছগুলার সাথে আমি কথা কইতাম। তারা আমারে তাদের কথা কইত। আমি তাদের গান শুনাইতাম। তারা রস দিয়ে ভইরা দিত আমার হাঁড়ি। একদম খাঁটি রস! আর অহন! কোথাও খেজুর গাছ নাই! সব শেষে! যে গাছ এখন আছে তারাও মইরা যাইব। তারা আর রস দেয় না। কাঁদে গাছগুলা, আমি তাদের কথা বুঝি!’ বলতে বলতে চাচার চোখ ভরে যায় পানিতে। বুঝতে পারি চাচার কষ্ট! কিন্তু কিছু কি করার আছে আমার?’ আবার তোমরা খেজুর গাছ লাগাই দাও! আমি আবার রস দেবো, গাছদের সাথে কথা কইব, গান শুনাইব!’ চাচার কথা শুনে মনটা সত্যি খারাপ হয়ে গেল। আমরাই আমাদের ধ্বংস ডেকে আনছি এভাবে। আমিও চাই আবার সকালে ঘুম ভাঙুক রহিমুদ্দীনের চিৎকারে, ‘রস লবেন, রস!’

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল