রাতের ট্রেন!
- কাজী সুলতানুল আরেফিন
- ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
তখন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্কুলের ছাত্র ছিলাম। স্কুলের পাশেই ছিল রেল জংশন। ট্রেনের আসা-যাওয়ার শব্দ শুধু কানে নয়, আমার অন্তরেও বেজে উঠত। ট্রেন এলেই মনে হতো কারো আপনজন এসেছে। আবার ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সময় মনে হতো কারো আপনজন বোধহয় চলে যাচ্ছে। যা হোক, এ ট্রেনেই শেষ বিদায় দিয়েছিলাম কিশোরের ভালো লাগাকে। আবার এ ট্রেনেই দেখা কিছুকাল পরে...। নিজেও সব সময় ট্রেনেই ভ্রমণ করতাম। কারণ, বাস ভ্রমণ তেমন পছন্দ করতাম না। বিশেষ করে রাতে ট্রেন ভ্রমণ চমৎকার শিহরণ জাগায়। স্টেশনের মায়াবী লাইটের ধাঁধানো আলো আমাকে খুব আকৃষ্ট করত। কয়েকবার সারা রাত ট্রেন ভ্রমণ করেছি। কোনো বিরক্তি আসে না। আমার মতো অনেককেই পাওয়া যাবে, যারা ট্রেন ভ্রমণ খুব পছন্দ করেন।
মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে কোনো একটা গন্তব্যহীন রাতের ট্রেনে উঠে পড়ি। যে ট্রেন শুধু রাতেই চলে, দিনের বেলায় বিরতি দেয়। তারপর দূরে-বহুদূরে কোথাও চলে যাই। ট্রেনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে আকাশের নক্ষত্রদের সাথে নিয়ে চলি। দমকা হাওয়ারা এসে হামলে পড়বে মুখমণ্ডলে। আকাশের মেঘগুলো আচমকা গুড়ুম গুড়ুম করে উঠবে। পরিশেষে বৃষ্টিরা ঝেঁপে পড়বে। বখাটের মতো বৃষ্টির ফোঁটারা ট্রেনের জানালা দিয়ে ভিজিয়ে দিতে চাইবে। পাশের সারিতে হাতের বামে বসা নিলা নামের মেয়েটা আড়চোখে বারবার তাকাবে। ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীরা কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য মায়ার বন্ধনে একে অপরের আপনজন হয়ে ওঠে। নিঃস্বার্থ আপনজন।
ট্রেন যেতে যেতে ভিড়ে যাবে কোনো অচেনা মফস্বলের স্টেশনে...। যে স্টেশনে নেমে দেখা পাওয়া যাবে ঠিক হারিয়ে যাওয়া কোনো পুরনো জীবনের প্রতিচ্ছবিগুলো। যে প্রতিচ্ছবি আধুনিকতার নামে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। হারিয়ে ফেলেছি অনেক কিছু।
রাতে যখন ঘুমাতে যাই তখন রাতের নির্জনতা ভেদ করে দূর থেকে ট্রেনের ভেসে আসা শব্দ আমার কানে বাজে। আমি আর ঘুমাতে পারি না। ইচ্ছে করে ছুটে গিয়ে দূর থেকে ট্রেনের ছুটে চলা দেখি। রাতের ট্রেন আমাকে টেনে নিয়ে যেতে চায় কোথাও।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা