১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

রেডিও বেঁচে আছে স্মৃতিতে

-

প্রাচীনকালে নিত্যদিনের খবরাখবরের একমাত্র মাধ্যম রেডিও আজ বিলুপ্ত। সর্বত্র বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক আবিষ্কারগুলো পৌঁছে যাওয়ায় রেডিওর কোনো কদর নেই।
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেও রেডিওর দেখা তেমন মেলে না। কিছু কিছু ঘরে রেডিও থাকলেও তা আজ শিশুদের খেলার সামগ্রী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে আবার নিজ যতেœ সাজিয়ে রেখেছে শোকেজে। গ্রামের বয়োবৃদ্ধদের কাছ থেকে জানা গেল, আগেরকার দিনে নানা অনুষ্ঠান, বিনোদন ও খেলার বিবরণী ছাড়াও আবহাওয়া, রাজনৈতিক বিভিন্ন ধরনের খবরাখবর শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। বিশেষ করে উপকূলবাসীর আবহাওয়ার খবর জানার প্রধান যন্ত্র ছিল এটি। এ ছাড়া জেলে সম্প্রদায় যারা গভীর সাগরে মাছ আহরণে যেত, তাদের আবহাওয়ার খবরের জন্য ব্যবহার করত রেডিও। রেডিওর প্রচলন শুরু হওয়ার পর প্রায় ঘরে ঘরে জায়গা করে নেয় এই টেনজিস্টার নামে খ্যাত রেডিও। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দেয়া হতো এটি। প্রাচীনকালে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধদের কাছে রেডিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তরুণ-তরুণীরা বেশির ভাগ সময় নজরুল, রবীন্দ্রসঙ্গীত, গানের ডালি, দুর্বার, সুখী সংসার, দর্পণ, বাংলা ছায়াছবির গান, ম্যাগাজিন, নাটক শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। কিন্তু আধুনিক যুগে মোবাইল, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের কারণে রেডিও এখন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। বর্তমান মোবাইলের কারণে রেডিওর জনপ্রিয়তা সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো কেউ রেডিও শোনে না। গ্রামগঞ্জে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় দু-একটা ঘর ছাড়া রেডিও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু কিছু প্রবীণ লোকের কাছে এখনো রেডিওর বিবিসি খবর পছন্দনীয়। দিন দিন হারিয়ে যাওয়া রেডিও আগামী প্রজন্মের কাছে শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে বইয়ে পেলেও বাস্তবে রেডিও দেখতে হলে যাওয়া লাগতে পারে বিভিন্ন জাদুঘরে।
গলাচিপার রতনদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মো: লুৎফুন নাহার জানান, ছোটকাল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যা কিছু জানা সবই প্রায় আজ এই রেডিওর কারণে। আমার ঘরে টেলিভিশন থাকলেও শত কষ্ট হলেও রেডিও সংগ্রহে রাখি। বাজারে এখন রেডিও পাওয়া দুষ্কর। শত দোকান খুঁজলেও রেডিও পাওয়া মুশকিল। তবুও সুখে-দুঃখে রেডিও আজো আমার সঙ্গী।

 


আরো সংবাদ



premium cement