স্টিমারে চরে ঢাকা...
জীবনের বাঁকে বাঁকে- মরিয়ম আক্তার
- ৩১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
মামার মুখে স্টিমার ভ্রমণের আনন্দটা খুব শুনেছি। আরো শুনেছি স্টিমারের পূর্বের ও বর্তমানের ইতিহাস। তাই এবার ভেবেছি যেভাবেই হোক স্টিমার ভ্রমণের আনন্দটা উপভোগ করবই। কিন্তু লঞ্চের মতো প্রতিদিন স্টিমার ছাড়ে না। স্টিমার ছাড়ার সময় প্রতি শনি, রোব, মঙ্গল ও বুধবার। আমাদের ঢাকা থেকে সোমবার ফেরার কথা থাকলেও স্টিমার ভ্রমণের জন্য সোমবার বিরতি দিয়ে মঙ্গলবার রওনা দিয়েছি। সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে স্টিমার ছাড়ার সময়।
আমরা ৬টার মধ্যেই ঢাকার সদরঘাট পৌঁছে গেলাম। মনের ভেতর একটা কৌতূহলী আনন্দ। জীবনে প্রথম স্টিমার ভ্রমণের আনন্দ। মামা আমাদের জন্য তিনটা টিকিট কেটে দিয়েছেন। আমি, আমার মা, আর সঙ্গে ছিল ছোট ভাই। মামা আমাদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণীর নন এসি কেবিন ভাড়া করে দিলেন। ৬টা ৩০ মিনিটে স্টিমার ছেড়ে দিয়েছে। মামা আমাদের স্টিমারে উঠিয়ে দিয়ে বিদায় জানালেন। আমরা নিজেদের কেবিনে অবস্থান করছি। কিন্তু আমার মন কেবিনে টিকে থাকতে চাইছে না।
পুরো স্টিমার ঘুরে দেখার কৌতূহল আমাকে পেয়ে বসেছে। সাথে আমার ছোট ভাইটাও। মাকে অনেক বুঝিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে স্টিমার ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। যখন রাত ৮টা-৯টা বাজে স্টিমার নারায়ণগঞ্জ শহর পাশ কাটিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী পাড়ি দিয়ে মেঘনা নদীতে পৌঁছে। আমি স্টিমারের এক কোনায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করছি চার পাশের ধবল জ্যোৎস্নার আলো। মেঘনা নদীর টলটল পানিতে যেন চাঁদের আলোয় খেলা বেশ জমিয়ে উঠেছে। খুব ভালোই লাগছে আমার।
তখন দেখলাম ডেকের যাত্রীরা কেউ কেউ রাতের খাবার খাচ্ছে। ছোট ছেলেমেয়েরা আনন্দ করছে। শুনেছি স্টিমারের বাটলারদের রান্না খুব ভালো। তাই বাটলারকে ডেকে রাতের খাবার অর্ডার করলাম। সাধারণত দু’ধরনের সেট মেনু থাকে। একটি হলো ভুনা খিচুরি, চিকেন,ডিম আর অন্যটি সাদা ভাত, চিকেন আর দু’টি ভর্তা। আমরা প্রথম মেনুটি অর্ডার করলাম। দাম ২০০ টাকা। খুব মজা করেই খেলাম আমরা। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি আবারো কেবিনের বাইরে চলে এলাম। নদীর তরঙ্গায়িত পানির দিকে একনজরে তাকিয়ে ছিলাম। কোনো কূলকিনারা দেখা যাচ্ছে না। মামার কাছ থেকে শোনা স্টিমারের ইতিহাসের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। এক অজানা কারণে স্টিমারের অন্যতম একটি নাম রকেট স্টিমার।
স্টিমারের আশপাশে কতক্ষণ পরপরই লঞ্চ আসা-যাওয়া করছে। তার চেয়েও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য হলো নদীতে ইলিশ ধরার দৃশ্য। প্রচণ্ড ঢেউয়ে জেলেদের নৌকা যেন ডুবিডুবি করছে। দেখে ভয়ে আমার গা শিউরে উঠল। ছোট ছোট নৌকাগুলোতে টিম টিম করে বাতি জ্বলছে। এ সময়ের মধ্যে অনেক যাত্রীর সাথেই আমার পরিচয় হয়ে গেল। খুবই ভালোই লাগছিল তাদের সাথে কথা বলে। এভাবেই আনন্দে সময় কেটে গেল স্টিমারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা