২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

-

বছর ঘুরে আবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মাসব্যাপী শুরু হয়েছে ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এ বছর জাতীয় নির্বাচনের জন্য মেলা আট দিন পিছিয়ে ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু করা হয়েছে। প্রতিবছরই বাণিজ্যমেলার জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। বছর ঘুরে যখন মেলায় বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা, তখন ক্রেতা-বিক্রেতা আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় সাজসজ্জা জিনিসপত্র থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সব পণ্যসামগ্রী পাওয়া যায় বলে গৃহিণীরা বাণিজ্যমেলায় আসেন পছন্দের পণ্যটি সংগ্রহ করতে। বাণিজ্যমেলার লোভনীয় অফার ছাড়তে নারাজ, তাই অফার লুফে নিতে মেলায় আসেন অনেকেই। এ বছর মেলার শুরু থেকেই চলছে মূল্যছাড়ের ছড়াছড়ি। ক্রোক্রারিজ, প্লাস্টিক পণ্য, আসবাবপত্র, পোশাক, জুয়েলারি এবং ইলেকট্রিক পণ্যের ওপর মূল্যছাড় থাকায় অনেকই সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পণ্য কিনছেন। এ ছাড়া, বাণিজ্যমেলায় সব ধরনের পণ্যের কমবেশি ছাড় থাকে বলে, সবাই বাণিজ্য মেলায় আসেন মূল্যছাড়ে পণ্য কেনার জন্য। এ বছর মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, সাধারণ প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার স্টল, সাধারণ স্টল এবং খাবারের দোকানসহ ৬০৫টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশী ২২টি ও দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিদেশী স্টলগুলোতে সব পণ্যের ওপর ছাড় রয়েছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য এবার মেলায় নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। মেলা প্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। সিসি ক্যামেরা দিয়েও সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে মেলার মাঠ ও আশপাশের এলাকা। দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। প্রতি বছর থাকে ঢাকা বাণিজ্যমেলায় নতুনত্ব। আর তারই অংশ হিসেবে মূল ফটকের নকশায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। গত বছর মূল ফটক পদ্মার সেতুর আদলে তৈরি করা হলেও, এবার মেট্রো রেলের ডিজাইনে করা হয়েছে মূল ফটকটি।
মেলার শুরুর দিকে ক্রেতা সমাগম কম থাকলেও দিনক্ষণ যতই ফুরিয়ে আসে, মেলায় ততই ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের প্রচণ্ড ভিড় থাকে। নিরিবিলি কেনাকাটার জন্য ছুটির দিন ছাড়া অন্য যেকোনো দিন অনেকটাই ঝামেলামুক্ত কেনাকাটা করা যাবে। তবে এ বছর মেলার শুরু থেকেই ঘর-গৃহস্থালির জিনিসপত্রের বেচাবিক্রি ভালো বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি বলে জানানÑ আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্যের এবং পোশাকের দোকানের মালিকেরা। রাজধানীর বাসাবো এলাকা থেকে মেলায় আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সাংসারিক জিনিসপত্র কিনতে মেলায় এসেছি। বাণিজ্যমেলায় সব জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই সাধ্যের মধ্যে। পছন্দের জিনিসপত্র মেলায় ভালো পাওয়া যায়। সেই সাথে বেশ কিছু পণ্যের ওপর বড় ধরনের ছাড় পাওয়া যায় বলে মেলায় আসা হয়।
মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার কেনাকাটার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ব্যতিক্রম, দৃষ্টিনন্দন ও মানের দিক দিয়ে সেরা পণ্যটি পাওয়া যায় বলেই বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। মেলার ১০তম দিন শুক্রবার বিকেলের পর থেকে হাজারো মানুষের ঢল নামে মেলায়। কেনাকাটার পাশাপাশি ফুলবাগানে বসে অনেকেই গল্পে মেতে ওঠেন। বিক্রেতারা জানান, মেলার মাঠে লোক সমাগম হলেও বিক্রি সন্তোষজনক নয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত বিক্রি জমে ওঠেনি। তবে সামনের দিনগুলোতে বিক্রি বাড়তে পারেÑ এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। মিনি প্যাভিলিয়ন নিয়ে মেলায় ক্রোকারিজ পণ্যের বিশাল পসরা সাজিয়েছেন ডেসিনি। প্রতিষ্ঠানটির একজন বিপণনকর্মী জানান, আমাদের বিক্রি মেলার প্রথম দিন থেকেই সন্তোষজনক। তবে আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। হয়তো আরো কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে, বিক্রি জমে ওঠার জন্য। পাশাপাশি মেলার সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখে সন্তুষ্ট তারা। নিñিদ্র নিরাপত্তা গড়ে তোলায় অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় আসতে পারছেন বলে জানান। মাইওয়ানের প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপক শেখ আহমেদ জানান, এ বছর মেলায় শুরু থেকেই আশানুরূপ বিক্রি নেই। রাজধানীর কর্মব্যস্ত মানুষ সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে ব্যস্ত থাকার দরুন এবং ছুটির দিনে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মেলায় আসছেন কেনাকাটার জন্য। ছুটির দিনগুলোতে নানা বয়সের ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে বাণিজ্যমেলার মাঠ। এবারের মেলায় শিশুসহ বড়দের জন্য আলাদা কর্নার রয়েছে। মেলার প্রবেশ মুখেই বঙ্গবন্ধুর প্যাভিলিয়নের সামনে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। দর্শনার্থীরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন এবং শিশুরা আনন্দে মেতে উঠছে।
মিয়াকো ব্যান্ডের পণ্যের বিশাল সম্ভার নিয়ে মেলায় স্টল নিয়েছে নাতাশা এন্টারপ্রাইজ। এর বিপণন কর্মকর্তা মো: হারুন জানান, মিয়াকোর বিভিন্ন তৈজসপত্র এ দেশের মানুষের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আমাদের স্টলে আসছেন এবং পণ্য কিনছেন। তিনি জানান, মেলার শুরু থেকেই বিক্রি ভালো, তবে শুক্রবারে দর্শনার্থীদের ভিড় ও বিক্রি সন্তোষজনক।
আরো দেখা গেছে, ক্রেতারা মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার স্টলগুলোতে ভিড় করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ৩০ শতাংশ নগদ মূল্যছাড় দেয়ায় ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়ে সেসব পণ্য কিনছেন। বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন দেশের কসমেটিকস এবং ইমিটেশনের গয়না ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। মেলায় প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে বড়দের জন্য ৩০ টাকা, আর ছোটদের জন্য ২০ টাকা। সাপ্তাহিক কোনো বন্ধ ছাড়াই মেলা প্রতিদিন খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবারের বাণিজ্যমেলার প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হয়েছে নির্মাণাধীন মেট্রো রেলের আদলে। মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, ফ্লাওয়ার গার্ডেন, ই-শপ, শিশুপার্ক, প্রাইমারি হেলথ সেন্টার, মা ও শিশুকেন্দ্র এবং রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রসহ ৩২ ধরনের সেবা ও অবকাঠামো রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল