অনেক বাবার বুকেও বৈষম্য
- সবুজ আহমেদ
- ১১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
একসাথে বেড়ে উঠা আমাদের। আমার বন্ধু জামালের বিয়ের ১২ বছর পর বন্ধ্যত্ব ঘুচেছে। সন্তানের জন্য অনেক আকাক্সক্ষা তার, কত কান্নাকাটি, মসজিদ প্রার্থনালয়ে মানত, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে, এক প্রকার কবিরাজ বেটে খেয়ে, অবশেষে আল্লাহ নেকনজরে তাকিয়েছেন তার দিকে। অনেক সাধনায় শেষমেশ জমজ সন্তানের জনক হয়েছে। কি ফুটফুটে তাদের দুটি সন্তান। একটি ছেলে অপরটি মেয়ে। প্রথম প্রথম খেয়াল না করলেও এখন চোখে দিব্যি ধরা পড়ে ও যেখানে যায় ছেলেটি তার সাথে থাকে, একটি দিনের জন্যও দেখিনি কখনো মেয়েটিকে নিয়ে কর্মযজ্ঞে, আড্ডার স্থলে, পথেঘাটে, বাজারে নিয়ে যেতে। ঠিক কী কারণে এমন করে সেটি জানতে চেয়ে বেকুব বনে গেলাম। কন্যা শিশুটির প্রতি তার অবহেলা আর চাপা ক্ষোভ এমন পর্যায়ে রয়েছে, পারছে না সমাজ সম্প্রীতির কারণে না হয় গলাটিপে মেরে ফেলতে, এমন লজ্জাকর আক্রোশ তার চোখেমুখে। তার কথা শুনে নীরবে কিছুক্ষণ ভাবলাম, কী অসম বাবার বুক। দুটি মানবপ্রাণে বইছে একই রক্ত। অথচ কন্যাশিশুটির বেলায় উদাসীন দৃষ্টি। সে দিন সবুজ ঘাসে বসে তার একপেশে আদরের কথা শুনে গাল বেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। পুত্র আর কন্যার মাঝে বুঝি আকাশ-মাটি ব্যবধান! জামাল হেসে হেসে আমাকে এও বুঝাচ্ছিল, ছেলে হলো বংশের পাদপ্রদীপ, সোনায় সোহাগা, আশা-ভরসার স্থল। জীবনের শেষ বয়সে কামাই খাওয়ার আয়ের উৎস আর মেয়ে মানে অপয়া, বিনাশ, বিশাল বোঝা যা জীবনে কোনোদিন কোনো কাজে আসে না। আমার স্বীয় চিন্তাধারার সাথে সেদিন ধাক্কা খেলাম। দুঃখ দ্বিগুণ ভাবাবেগে ভাবিয়েছে সেই ক্ষণ, কী বলব বুঝতে পাচ্ছিলাম না! অথচ এই জামাল আমাদের বন্ধুদের মধ্যে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। জামালের মুখে প্রশ্ন রেখে সেদিন আড্ডা থেকে উঠে এলাম। বড় বিদ্যাপীঠ থেকে বড় ডিগ্রি কী শেখালো তাকে! এখনো সে কেন এত পেছনে! আফসোস আজ অবধি কোনো সদুত্তর পাইনি। কোনো বাবার ভুবন যদি মেয়ের জন্য এমন হয়, শুধু ছেলেই সব তাহলে সন্তান আশা না করে ছেলে আশা করা শ্রেয়।
ছাগলনাইয়া, ফেনী
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা