২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

শরৎ আলোর কমল বনে

-

সৌন্দর্যে ঐশ্বর্যে প্রকৃতি রূপ-লাবণ্যে শরৎরানীর রূপ বর্ণনায় শ্যামল ছায়া বাংলাদেশে মাঠ-ঘাট, নদী-নালা ও বিলের পাড়ে বালুচরে পানির কলকলানিতে নীল আকাশে রুপালি তারায় ভরে উঠেছে কাশবন। মেঘ মুছে যাওয়া বর্ষণ শেষের আকাশে হাজার হাজার তারা ঝিকমিক করে জ্বলছে। রোদে ঝলমল করছে চার দিক। ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে নীল আকাশ, স্বচ্ছ সাদা মেঘ। অন্ধকার মেঘ, বৃষ্টির কোথাও চিহ্ন পর্যন্ত নেই। জলবৃষ্টির পৃথিবী ছেড়ে নীল দিগন্তের দিকে ছুটছে সুরমা মেইল। এখন প্রকৃতি হাওয়া বইছে শরৎকাল। শিশুশিক্ষার বইতে ঋতু পরিচয়ে লেখা আছে ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল। যদিও ভাদ্র মাসের অনেকটাই কোনো কোনো বছর প্রায় পুরোটাই বর্ষাকালের মধ্যে পড়ে, এমনকি আশ্বিন মাসেও বর্ষা থেকে যায়। কবিও লিখেছেনÑ মেঘে ঢাকা দারুণ দুর্দিনের আকুল আশ্বিনের কথা।
এখন বর্ষার শেষ দৃশ্য আসে আসে, দিনের বেলায় কখনো রোদ্দুর। ‘আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে’ গানের আশ্চর্য এই কলিটি সেই অনিন্দ স্বর্গ কণ্ঠ কৃনন্দ-লাল সায়গলে। আর এই স্বর্গ ছেঁড়া গানটি লিখেছেন মহাকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শরৎকাল নিয়ে তার আশ্চর্য মায়াজালের অন্তরালে যেন উঁকি দেয় আমাদের ক্ষয়িভূত বা ভস্মীভূত পৃথিবী, এক ভূস্বর্গ আমাদের শরৎ ঋতু যেন চিত্রপিত বাংলা, নয়নলোভন হৃদয়হরণ।
লাল-গোলাপি আলপাকা রোদ্দুর ফুটেছে। দিগন্ত থেকে রোদ্দুরের স্বপ্নফুল সোনা ফুল ছড়িয়ে পড়েছে। আকাশে-বাতাসে, মাঠে-প্রান্তরে, গাছের মাথায়-মাথায় সবুজ ঘাসের গালিচায় চাঁদের সামিয়ানায়। আহা কী ঢলো-ঢলো, আলতো আলতো, থোকা-থোকা, ফাঁপা-ফাঁপা, মেখে নিই, চোখের মুখে গায়ে গলায় মেখে নিই; ও পৃথিবী তুমি কি মোহিনী জাদু জানো, সেই যে স্বর্গের কবি পদ্য লিখেছিল তার কাঁচা সবুজ যুববয়সে ‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে। সত্যিই হে প্রভু কে মরতে চায় এই মর্ত ভূস্বর্গ ফেলে যে প্রাণ কানায় কানায় ভরে ছিল। প্রতি মুহূর্তে কানায় কানায় ভরে তুলছে এর আর তুলনা নেই।
পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, সাজ বদলাচ্ছে। এই আশ্চর্য শরৎ ঋতু। বিকেলে নীল আকাশ তার সমস্ত অঙ্গজুড়ে সাদা মেঘ। আমাদের ঋতুচক্রে শরতের মতো নির্মল কোমল প্রশান্ত স্বভাবের আর কেউ নেই। তার রঙ-রূপ এমন প্রকট নয় যে সহসাই চোখে পড়ে। বরং চোখে দেখার যতটা তার চেয়ে বেশি বেশি ধরা পড়ে তার স্বরূপ হৃদয়ানুভাব। এই যাচ্ছে একেকটি দিন, কতই না বৈচিত্র্যময় তার সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা। শিশিরসিক্ত শরৎ প্রভাতের সঙ্গে কোনো মিলই খুঁজে পাওয়া যায় না রোদে ঝলসানো মধ্যাহ্নের। আবার চিকন হয়ে আসা বিকেলের রোদমাখা নিস্তরঙ্গ প্রকৃতির মৌনরূপ যখন মৃদ কুয়াশার আবরণে আত্মসমর্থন করে দিনান্তের ঘোষণা দেয় তার ছবিও সম্পূর্ণ আলাদা। তবে কবি হৃদয়ে সবকিছু ছাপিয়ে শারদীয় প্রভাতের কোমল মোহময় রূপটিই উদ্ভাসিত হয়েছে প্রধানত। তাই ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, তাই শরৎ আলোর কমল বনে’ এমন বহু পঙক্তিরই দেখা মেলে শারদীয় প্রভাতের স্তববন্দনায়।
শরতের এত রূপ, এত ঐশর্য্য, এত মোহ, এত ঋতুবৈচিত্র্য, এত রঙধনুর রঙ, এত নীল আকাশের নীলা, এত ছায়াপথের আলোছায়া, এত সূর্যাস্তের রক্তরাগ, এত ভোরের শিশির, এত কাশফুলের হেলাদোলা, আর এই
বাঙলা মা ছাড়া কোথায় পাবো। চোখ জুড়িয়ে যায়, মন জুড়িয়ে যায়, জীবন জুড়িয়ে যায়,
সব পেয়েছি আমার এই দেশের সোনার বাংলায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান বদলে যেতে পারে এসএসসি পরীক্ষার নাম সীমান্তে বাংলাদেশীদের মৃত্যু কমেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাস্তি কমিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনে উদ্বেগ টিআইবির যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাবো : মেসি ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান আর নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ খণ্ডালেন ওবায়দুল কাদের আটকের পর নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে বদর যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন পণবন্দী জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল