১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে দিল্লি

দিল্লির লোটাস টেম্পল -

দিল্লির আকাশে গনগনে রোদ। ভ্যাপসা গরম পড়েছে চার দিক। আকাশ থেকে যেনো ঝরে পড়ছে আগুনের হলকা। ট্যাক্সি থেকে নেমে আমরা চার বন্ধু দাঁড়ালাম রাস্তার পাশে একটা গাছের ছায়ায়। প্রচণ্ড এ গরমে ঘুরতে বেরিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে গেলাম! লেবু-পানির ঠাণ্ডা শরবত পান করে ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম, আশপাশে দর্শনীয় কোনো জায়গা আছে কি না। তিনি জানালেন, একটু সামনে রয়েছে বাহাই মন্দির (লোটাস টেম্পল)। তার কথামতো আমরা এগোলাম সামনে। গেট পেরোতেই অপূর্ব সব সৌন্দর্য এসে ধরা দিলো দু’চোখে। দূর থেকেই নজরে পড়ল পদ্মফুল আকৃতির বিশাল গম্বুজের ওপর। আমাদের থেকে এর দূরত্ব এখনো ১৫ মিনিটের মতো। চার পাশে সবুজের সমারোহ। নাম না জানা হাজরো ফুলের বাগান। পাকা কমলা থোকায় থোকায় ঝুলে আছে গাছের ঢালে। এগুলো ধরাছোঁয়া নিষেধ। আইনের তোয়াক্কা না করে কয়েকজন যুবক ছুটে গিয়ে পেরে নিয়ে এলো কয়েকটা। দেশ-বিদেশের শত শত পর্যটক এসেছেন বাহাই মন্দির দেখতে। সবুজ বাগান দেখতে দেখতে সামনে এগোলাম। বাহাই মন্দিরের কাছে এসে সেলফি তুললাম। মন্দিরের দৃশ্য অপূর্ব। একপাশে নির্মল পানির ফোয়ারা। মনে হলো, বাস্তবেই যেন স্বচ্ছ পানিতে ভাসছে বিশাল একটা পদ্মফুল।
প্রবেশ পথে লম্বা সিরিয়াল। দেয়ালে লাগানো একটা নেমপ্লেটে হিন্দি ও ইংলিশে লিপিবদ্ধ রয়েছে এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। লাইনে দাঁড়িয়ে পড়তে লাগলাম সেগুলো। বাহাই ধর্মাবলম্বীদের পূজার্চনার জন্য ১৯৮৬ সালে পদ্মফুলের আকৃতিতে নির্মাণ করা হয় এই লোটাস টেম্পল। এর স্থপতি ছিলেন ইরানিয়ান ফরিবুর্জ সাহেবার। এর ওপর দিকে রয়েছে ২৭টি সাদা পাপড়ি। দেশ-বিদেশের অনেক স্থাপত্য পুরস্কারও অর্জন করেছে এটি। এখানে টিকিটের কোনো ঝামেলা নেই। লেইন ভেঙে প্রবেশ করলাম ভেতরে। চার পাশে সারি সারি চেয়ার বসানো। দেখার মতো তেমন কিছু মিলল না। বাইরের দিকটাই কেবল এর সৌন্দর্য। সবই এসে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। যার যার ধর্ম অনুযায়ী দোয়া করে বের হয়ে যায়। মিনিট পাঁচেক আমরাও নীরবতা পালন করে অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
ড্রাইভার আমাদের নিয়ে চললেন দিল্লির রাজঘাটে অবস্থিত মাহাত্মা গান্ধীর সমাধি দেখাতে। মিনিট দশেক পর গাড়ি থামল আরেকটি সবুজ অরণ্যের পাশে। ড্রাইভার বললেন, এর ভেতরই গান্ধীজিকে মৃত্যুর পর দাহ করা হয়েছিল। এখানেও দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। গেট পেরিয়ে এগিয়ে চললাম সামনে। চার দিকটা সবুজে ছাওয়া। ফুলে ফুলে ভরে আছে পুরো জায়গাটা। বিকেল হতে বেশি দেরি নেই। পাখিদের কলকাকলিতে মুখর পুরো এলাকা। ব্যস্ত নগরীর মঝে যেন এক টুকরো স্বর্গ। গান্ধীজির সমাধি একটা কালো স্মারক প্রস্তরসহ সাধারণ চতুর্ভুজ আকৃতিতে নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রাইভার জানালেন, ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পরের দিন এ স্থানটিতে তাকে দাহ করা হয়। কালো প্রস্তরে হিন্দিতে ‘হে রাম’ শব্দ খোদাই করা আছে। মৃত্যুর সময় নাকি এ শব্দটি বারবার গান্ধীজির মুখে উচ্চারিত হয়েছিল।
সমাধির আশপাশটা ঘুরে দেখলাম। অনেকটা এলাকাজুড়ে পার্কের মতো সবুজ অরণ্য। একপাশে বসার জন্য রয়েছে ইটের তৈরি ছোট ছোট বেঞ্চ। সেখানে বসলাম খানিকটা সময়। বিকেলের মৃদুমন্দ ঠাণ্ডা বাতাশ গায়ে মেখে আর নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত

সকল