১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এই শুভ্র, এই... : চারাগল্প

-

শুভ্রদের গ্রামের শেষ সীমানায় একটি দীঘি আছে। দীঘির নাম মায়াদীঘি। কে বা কারা এই দীঘির নামকরণ করেছে, তা গ্রামের কেউ জানে না। এমনকি এই দীঘি কে খনন করেছে, তার ইতিহাসও জানা যায়নি।
মায়াদীঘি বড় ভালো লাগে শুভ্রর। প্রায়ই বিকেলে দীঘির কিনারে এসে পানি ছুঁয়ে দেখে শুভ্র। কী স্বচ্ছ দীঘির পানি। মাঝে মাঝে শুভ্রর ইচ্ছে করে দীঘির পানিতে অবাধ সাঁতার কাটতে। কিন্তু মায়ের যে বারণ খুব। মা চায় না শুভ্র কখনোই দীঘি দেখতে আসুক। কোনো এক অজানা কারণে মায়াদীঘির সাথে মায়ের বড় ঈর্ষা। তাই শুভ্র যখন দীঘি দেখতে আসে, সাধারণত মাকে বলে আসে না।
২.
সেদিন এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যার ছায়া নামার সাথে সাথে শুভ্র যখন দীঘির পাড় থেকে বাড়ি ফিরছিল, হঠাৎ কে যেন তাকে নাম ধরে ডাকল, ‘এই শুভ্র, এই।’ পিছু ফিরে তাকায় শুভ্র। কাউকে দেখতে পায় না। ওই মেয়েলি কণ্ঠে কে ডেকেছে শুভ্রকে। ভয় পেয়ে সে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসে।
ঠিক পরের দিনও একই ঘটনার পুরনাবৃত্তি। দীঘি দেখতে দেখতে যখন সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ছে, শুভ্র বাড়ি ফিরতেই আবার সেই অচেনা নারীকণ্ঠ, ‘এই শুভ্র, এই।’ আজো কাউকে দেখতে পায় না শুভ্র। কে ডেকেছে তাকে এমন নাম ধরে!
বাড়ি ফিরতেই মায়ের বকুনি, ‘কোথায় গেছিস?’ স্বাভাবিক গলায় শুভ্রর জবাব, ‘মাঠে খেলতে গেছি।’ উত্তেজিত হয়ে মায়ের কড়া গলা, ‘মিথ্যে বলছিস। তুই দীঘি দেখতে গেছিস। ফারুকের মা বলেছে আমাকে। তোকে না বলেছি কখনো দীঘি দেখতে যাবি না!’ জিদ্দি গলায় শুভ্র বলে, ‘গেলে সমস্যা কী? আমি কি দীঘিতে ডুবে মরব?’ দৌড়ে এসে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে মা কেঁদে বলছেন, ‘ওই দীঘি যে আমাদের আল্পনাকে কেড়ে নিয়েছে বাবা। তোকেও কেড়ে নিলে আমার কী হবে?’
সেদিনই শুভ্র প্রথম জানে আল্পনা নামে তার একটি বোন ছিল। পনেরো বছর আগে সেই বোন মায়াদীঘিতে গোসল করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। সবার ধারণা পাতালপুরীর রাক্ষস আল্পনার পা ধরে টেনে তাকে অতলে নিয়ে গেছে।

৩.
আজো মাকে না বলে চুপি চুপি মায়াদীঘি দেখতে এসেছে শুভ্র। শুভ্রর আজ মন খারাপ। এই দীঘি তার বোনকে খেয়েছে। এই দীঘির সাথে আজ থেকে তার জন্মের আড়ি। সে আর এই দীঘি দেখতে আসবে না। এই শপথ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতেই সেই মেয়েলি কণ্ঠের ডাক, ‘এই শুভ্র, এই।’
শুভ্রর মনে হলো এই ডাকটি তার বোন আল্পনার। দীঘির অতল থেকে সে ভাইকে ডাকছে। না, এই মায়াদীঘির সাথে কোনো আড়ি নয়। এই মায়াদীঘিতে তার বোনের অস্তিত্ব বিলীন হয়েছে। এখন থেকে সে রোজ এখানে আসবে বোনের ডাক শুনতে।
বাড়ি ফিরে যাচ্ছে শুভ্র। পেছন থেকে সেই ডাক ভেসে আসছে, ‘এই শুভ্র, এই...।’ শুভ্রর চোখের জল টপটপ করে পড়ছে।
আমিশাপাড়া, নোয়াখালী।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল