১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শৈশবের ঈদ

-

আমার বেড়ে ওঠা একদম পাড়াগাঁয়ে। যেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে কিছু দিন আগে। যৌথ পরিবারেই আমার জন্ম। যৌথ পরিবারে সবচেয়ে বড় মজা হলোÑ ঈদের সময় সবাই একত্র হওয়া যায়। আমার ছয় চাচা-জেঠা দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। গ্রামে শুধু আমরা আর আমার এক চাচা থাকতেন। ঈদ ঘনিয়ে এলে মনের মধ্যে অন্য রকম এক উত্তেজনা কাজ করত। সব কাজিনদের একত্রে পাবো, এ এক বিশাল খুশির ব্যাপার। ঈদের আগের দিনগুলো গুনতে থাকতাম। কেন দ্রুত দিন যায় না এ নিয়েও বিরক্তি কম ছিল না। কোনো গাড়ির আওয়াজ শুনলেই বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে যেতাম।
এই বুঝি চাচারা-কাজিনরা এসে গেছে। তারা এলেই সেই রাস্তা থেকে বাড়ি পর্যন্ত চিৎকার করতে করতে আসতাম। ঈদের আগের রাতে সে কী গল্প! ঈদের চাঁদ দেখার জন্য কত কী আয়োজন ছিল। গাছের ফাঁকে চাঁদ দেখা যাবে না তাই উঠানে গিয়ে চাঁদ খুঁজতাম। চাঁদের দেখা মিললে বাড়ির ছোটরা মিলে মিছিল বের করতাম। এবাড়ি ওবাড়ি সব বাড়িতেই মিছিলের আওয়াজ শোনা যেত।
সকাল হলেই সবার আগে ঘুম থেকে উঠে যেতাম। আশপাশে বাঁশির আওয়াজ সেই ভোর থেকেই শোনা যেত। মা ভালো করে গোসল করিয়ে পাঞ্জাবি পরিয়ে দিতেন। দাদা ঈদের জন্য স্পেশাল আতর কিনতেন। সেই আতর মেখেই ঈদগাহে রওনা হতাম। রওনা দেয়ার আগে সবাইকে সালাম দিতাম। মুরব্বিরা কচকচে পাঁচ টাকার নোট ধরিয়ে দিতেন। নতুন টাকার অন্য রকম একটা ঘ্রাণ থাকে। এ টাকা পেয়ে সে কী আনন্দ! আমাদের পরিবারে অনেক সদস্য থাকায় বড় একটা বিছানা নিয়ে ঈদগাহে যেতে হতো। সেখানে খড় বিছানো থাকত। তার ওপর বিছানা বিছিয়ে নামাজ পড়তে হতো। ঈদে গ্রামের ছেলেমেয়েরা বাঁশি, বেলুন, গাড়ি ও চশমা কিনত। আমরা সালামি হিসেবে যে টাকা পেতাম সেই টাকা দিয়েই এসব কিনতাম। আবার ঈদের সময় নানা রকম খাবার বিক্রি হতো। ছোট চাচা বেশির ভাগ সময় নামাজ শেষ সেসব কিনে দিতেন। বিকেল বেলায় সবাই মিলে ক্রিকেট খেলতাম। বল মারলেই হয় বাগানে হারিয়ে যেত অথবা পুকুরে পড়ে যেত। সারা দিন হইহুল্লোড় করে কাটিয়ে দিতাম। যখন ঈদ শেষে সবাই চলে যেত তখন মনটা খারাপ হয়ে যেত।
এখন অনেক বড় হয়ে গেছি। গ্রাম ও অনেক বদলে গেছে। আমাদের শৈশবের ফেলে আসা ঈদের আনন্দ এখন আর পাই না। কেন যেন মনে হয় সব যান্ত্রিক হয়ে গেছে। এখনো খুঁজে ফিরি শৈশবের ঈদ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল