২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

প্রবাসীদের রমজান

ছবি : ইন্টারনেট -

মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পুণ্যময় মাস হলো রমজান। যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য প্রতীক্ষা করে সবাই। তার জন্য পূর্বপ্রস্তুতিও নেয়। সব যুগে, সব দেশে, সব ধর্মের মানুষই এরূপ করে থাকেন। প্রবাসী মুসলমানেরাও ইবাদত-বন্দিগি ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পুণ্যময় মাস হলো পবিত্র রমজান। পবিত্র রমজান মাস মুমিনের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের কারণ হয়ে আগমন করে। সুতরাং দেশের মতো প্রবাসীরাও রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার চেষ্টা করে থাকেন। শারীরিক, মানসিক, বৈষয়িক ও অভ্যাসগতÑ সব ক্ষেত্রেই পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়। রমজান পর্যন্ত আয়ু প্রলম্বিত করার জন্য প্রভুর দরবারে বেশি বেশি দোয়াও করতে থাকে।
যেহেতু হাদিসে পাওয়া যায়, হজরত রাসূলুল্লাহ সা: রজব মাস থেকেই রমজানের প্রতীক্ষায় থাকতেন। এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগী হতেন। রজবের চাঁদ দেখা দিলে আরো বেশি নফল রোজা রাখতেন। বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতেন। কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত বাড়িয়ে দিতেন। সঙ্গীদেরও রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতেন। আকাশে রজবের চাঁদ ওঠার সাথে সাথে নবী করিম সা: রমজান পর্যন্ত আয়ু বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। সাহাবিদেরও দোয়া করতে বলতেন। বেশি বেশি এ দোয়া পাঠ করতেনÑ ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাজান’। অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি রজব ও শাবান মাসে আমাদের ওপর বরকত নাজিল করো এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত দীর্ঘায়িত করে দাও। সে হিসেবে প্রবাসীরাও বেশি বেশি কুরআন-হাদিস, ইসলামিক বই অধ্যয়নের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। পরিকল্পনা করেন, রমজান মাসে কুরআন মজিদ সহিহশুদ্ধ করে পড়ার! তবে অধ্যয়ন ও তিলাওয়াত দুটোই এক সাথে করার চেষ্টা করেন অনেকে। বেশির ভাগ প্রবাসী আবার সমাজের গরিব, অসহায়দের জন্য ইফতারসামগ্রী বিতরণ, ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে থাকেন।
রমজান উপলক্ষে দেশে যেমন সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে কর্মসময় কম থাকে, প্রবাসেও তা-ই। আবার যারা দোকানপাট, মার্কেটে দায়িত্ব পালন করেন তাদের বছরের অন্য মাসের থেকে রমজানে দায়িত্ব বেড়ে যায়। তবে খুব একটা সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় ছোট দোকানগুলোতে। তাদের শিফট থাকে না, প্রায় ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। তবু যারা ইবাদত করার, এই ব্যতিব্যস্ত জীবনেও প্রভুকে স্মরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তবে কষ্ট হয় তাদের, যারা দালান নির্মাণের কাজ করেন তাদের। তাদের সেহরি খেয়েই কাজ শুরু করতে হয়। আবার অনেক কোম্পানি আছে এশার নামাজের পর কাজ শুরু করে সেহরির আগে ছুটি দিয়ে দেয়, তারা দিনে সুন্দরমতো রোজা রাখতে পারেন।
বাংলাদেশে যখন রমজানে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়; তখন অন্যান্য মুসলিমপ্রধান দেশে ব্যবসায়ীরা সারা বছর ব্যবসা করেন আর রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে মানুষের সেবা করেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চলে সহজলভ্য করার প্রতিযোগিতা। প্রতিটি শপিং মলে চলে ডিসকাউন্ট। দেশের তুলনায় মুদিসামগ্রী সহজলভ্য এবং দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকায় সন্তুষ্ট থাকেন প্রবাসীরা। দেশের মতো প্রবাসেও ছোলা, বুট, আর তেলে ভাজা বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার ছাড়া রমজান মাস যেন কল্পনাই করা যায় না। তাই রমজান উপলক্ষে ব্যস্ততা বেড়ে যায় প্রবাসীদের।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল