১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিতে শিক্ষকরা

-

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। অথচ এক শ্রেণীর শিক্ষক ব্যক্তি স্বার্থে পদ-পদবি পাওয়ার উদগ্র বাসনায় দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতিতে মত্ত। একই সাথে তারা ছাত্রদের অপরাজনীতিতে ঠেলে দিচ্ছেন নিজেদের স্বার্থে। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ছাত্ররা হয়ে উঠছে দুর্ধর্ষ। জড়িয়ে পড়ছে অসামাজিক ও হিংসাত্মক কার্যক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জনের প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জাতির সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবদান রাখবে, এটিই স্বাভাবিক। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যদি কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে এবং সে সব দুর্নীতির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নাম জড়িয়ে নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে সচেতন ও বিবেকবান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী ভূমিকা থাকবেন তাও স্বাভাবিক। শিক্ষার্থীরা কারো ব্যক্তিগত হাতিয়ার নন। কোনো ভিসিকে রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব নয়। তবে দেশের প্রয়োজনে ছাত্ররা বারবার গর্জে উঠেছেন; আগামীতে প্রয়োজন পড়লে গর্জে উঠবেন এমন প্রত্যাশা দেশবাসীর।
সম্প্রতি একটি প্রবণতা লক্ষণীয়, যখনই কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন, তখনই তাদের ওপর হামলে পড়ছেন সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও শিক্ষার্থীরা কোনো আন্দোলন করলে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে হওয়া ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা এবং রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের এক শ্রেণীর নেতাকর্মীর অপকর্মের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষেও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ রাখা কোনো সমাধান নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবিভাবকতুল্য হচ্ছেন ভিসি। অথচ জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ভিসি দুঃখ প্রকাশ না করে উল্টো ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে লজ্জাজনক নজির সৃষ্টি করেছেন। দেশের শীর্ষ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছ থেকে এমন আচরণ অনাকাক্সিক্ষত ও অস্বাভাবিক। মনে রাখা দরকার, হামলা করে কখনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কোনো যৌক্তিক আন্দোলন দমন করা যায় না। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে জড়িত ও দায়ী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়া এখন জরুরি। কিন্তু দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছুদিন থেকে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে তার কারণ খুঁজে বের করা জরুরি। সংবাদপত্রগওলোতে প্রকাশিত খবরে কিছু ইঙ্গিতও দেয়া হচ্ছে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা দরকার। সরকার একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়ের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার অভিমত হচ্ছে, যতদিন পর্যন্ত দলীয় বিবেচনায় ভিসি নিয়োগ বন্ধ না হবে, ছাত্র-শিক্ষিকদের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ না হবে, ততদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসা কঠিন।
আমরা বলতে চাই, শিক্ষক পেটানো বা পানিতে ফেলে দেয়া যেমন ছাত্রদের কাজ নয়। আবার শিক্ষকেরও উচিত নয় তার নিজ স্বার্থে ছাত্রদের লেলিয়ে দেয়া বা ছাত্রদের অপকর্মগুলোকে প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। গুরু মারা শিষ্য যেমন আমরা চাই না। তেমনি শিষ্যকে অপকর্মে উৎসাহিত করা শিক্ষকও আমরা চাই না। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পার হয়ে গেল আমরা আজো সর্বক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি করতে পারিনি। অথচ আমাদের পাশের দেশগুলো অল্প সময়েই উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে। আমরা শুধু তাকিয়ে দেখছি। আমাদের শিক্ষা হবে কবে, আর আমরা মানুষ হবো কবে, এ দুঃখ মনে। সর্বপরি কথা হলো আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের উন্নয়নে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। হ
likhonalife@gmail.com

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

সকল