২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে

-

দেশের কৃষি উৎপাদনের সাথে সমবায়ের যোগসূত্র স্থাপন করা গেলে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। তখন চাষোপযোগী জমি অনাবাদি থাকবে না। সমবায়ের মূল চেতনা সম্মিলিত উদ্যোগ। একার পক্ষে যে কাজ করা সম্ভব নয় তা সম্মিলিত উদ্যোগে সহজে করা যায়।
দেশের কৃষি, মৎস্য চাষ, পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন, পরিবহন, ক্ষুদ্র ব্যবসা, আবাসন, পুঁজি গঠন ও নারীর ক্ষমতায়নে সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ ক্ষেত্রে দেশের ধান উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণে সমবায় পদ্ধতি কাজে লাগালে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় অবদান রাখবে। আলু-পেঁয়াজসহ আরো কিছু পণ্য সংরক্ষণে সমবায় পদ্ধতি কাজে লাগানো যেতে পারে। দেশে গত চার যুগে খাদ্য উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়লেও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তাদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার সরকারি উদ্যোগ থাকলেও তাতে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে কৃষি উৎপাদনে সমবায়ের ভিত্তিতে কৃষি উপকরণ সরবরাহ, উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণ এবং বাজারজাতের ব্যবস্থা করলে তাতে সমবায় আন্দোলন যেমন শক্তিশালী হবে; তেমনি নিশ্চিত হবে খাদ্য নিরাপত্তা। এ ব্যাপারে কৃষকপর্যায়ে সমবায় সংগঠন প্রতিষ্ঠায় সরকার উৎসাহ জোগাবে, এমনটিই প্রত্যাশিত।
কৃষি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির এখনো মূল চালিকাশক্তি। উদয়াস্ত পরিশ্রম করে দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের আহার ও পুষ্টি নিয়মিত জুগিয়ে যাচ্ছে কৃষক। তাই সবার আগে কৃষিজমির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পকারখানা যদি স্থাপন করতে হয়, তাহলে আগে নজর দিতে হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি-অবকাঠামো ও যথাযথ রাস্তাঘাটসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য। এরপরও যদি শিল্প স্থাপনের প্রয়োজন পড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য, সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর অঞ্চলে এক ফসলি জমিতে করা যেতে পারে। দেশের স্বার্থে এবং উন্নয়নের প্রয়োজনে শিল্পায়নে জোর দিতে হবে অবশ্যই। তবে তা কৃষি ও কৃষকের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়; বরং কৃষি ও কৃষককে যথাযথ সহায়তা দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে দেশের শিল্পায়ন ও অগ্রগতি। তাহলেই কেবল কৃষি ও কৃষক বাঁচবে। পাশাপাশি গড়ে উঠবে শিল্পকারখানা, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। এর জন্য যুগোপযোগী করতে হবে কৃষি আইন ও ভূমি সংস্কার। নতুন আইন তৈরির পাশাপাশি ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ভূমিসংক্রান্ত আইন ও বিধি সংস্কারের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আরো গতিশীল ভূমিসেবা প্রদানই এর অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হতে হবে। দেশে ভূমিসংক্রান্ত আইন, বিধি, জটিলতা, বেচাকেনা, রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, খাজনা দেয়াসহ নানা সমস্যা-সঙ্কট তদুপরি দেওয়ানি মামলার পাহাড় ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। এসব অবসানে ভূমি আইন আধুনিক, সময়োপযোগী ও ডিজিটাল করা সময়ের দাবি।
১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনে গ্রামাঞ্চলে ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অনুমতির বিধান থাকলেও তা প্রতিপালিত হয় না। ফলে কৃষিজমিসহ ভূমির যথেচ্ছ ব্যবহার এমনকি অপব্যবহার বেড়েছে। যে যেখানে খুশি মর্জিমাফিক গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি কিংবা অন্যবিধ স্থাপনা। বাগানবাড়ি, পার্ক এমনকি শিল্পকারখানা। ফলে দিন দিন ভূমি বিশেষ করে কৃষিজমির পরিমাণ কমছে। অনেক স্থানে এমনও দেখা যায়, ধানিজমির মাঝখানে অথবা জলাশয় ভরাট করে গড়ে উঠেছে বাড়িঘর। অনেক ক্ষেত্রে নদ-নদীসহ অবৈধ দখলের অভিযোগও আছে। বেদখলে বনভূমিও উজাড় হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন কৃষিজমির পরিমাণ কমছে, অন্য দিকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে জলাশয়, লোপাট হচ্ছে খাসজমি ও বনভূমি।
দেশের শহর-বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে শিল্পকারখানাসহ নানা স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। তবে এসবের বেশির ভাগই অপরিকল্পিত, ভূমির ব্যবহার যথেচ্ছ এবং কোথাও বা অবৈধ। খাসজমি এমনকি জলাশয়, নদ-নদী দখল করেও চলছে নির্মাণকাজ। ভূমির পরিমাণ যেহেতু সীমাবদ্ধ ও সীমিত, সেহেতু তা অবশ্যই পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবহারের দাবি রাখে। সেটাও হতে হবে সুষ্ঠু, সমন্বিত, সর্বোপরি পরিবেশবান্ধব। নতুন ভূমি আইনে তা নিশ্চিত করা গেলে এক দিকে যেমন জমির অপরিকল্পিত ব্যবহার রোধ হবে, অন্য দিকে সুনিশ্চিত হবে উন্নয়নের গতি। হ
লেখক : সহসভাপতি, এফবিসিসিআই


আরো সংবাদ



premium cement
স্পেশাল অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, প্রশংসিত দেওয়ানগঞ্জের রবিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরো ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা থাই-মিয়ানমার সীমান্ত শহরের কাছে আবারো সংঘর্ষ শুরু : থাই সেনাবাহিনী পাঁচবিবিতে মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গায় ১৪০তম দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো বার্বাডোস সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে : রিজভী কুষ্টিয়ায় অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা আটক পাকিস্তানে একসাথে ৬ শিশুর জন্ম, সবাই সুস্থ ৪০ বছর ধরে মুসল্লিদের ফ্রি চা খাওয়ানো মদিনার সেই বৃদ্ধের ইন্তেকাল সৌদির কাছ থেকে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ আশা করছে পাকিস্তান!

সকল