২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফ্লাইট নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন আলোচিত পাইলট ফজল মাহমুদ : কী ঘটেছে নেপথ্যে?

ফ্লাইট নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন আলোচিত পাইলট ফজল মাহমুদ - সংগৃহীত

পাসপোর্ট ছাড়াই ফ্লাইট নিয়ে কাতার যাওয়া বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ দেশে ফিরেই গতকাল মঙ্গলবার থেকে আবারো নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছেন। যদিও তার পাসপোর্ট কেলেঙ্কারির বিষয় নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বলাকা ভবন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা) বেলা ২টায় নতুন প্রজন্মের (বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার) উড়োজাহাজ নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান পাইলট ফজল মাহমুদ। আজ রাতে ফিরতি ফ্লাইট নিয়ে তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

বোয়িং ৭৮৭ ফ্লাইট চালানোর মতো দক্ষ পাইলটের সংখ্যা বিমানে হাতেগোনা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত রাতে বিষয়টি জানতে বিমানের মুখপাত্র শাকিল মেরাজের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, গত ৫ জুন ঢাকা থেকে বোয়িং ৭৮৭ ফ্লাইট নিয়ে পাইলট ফজল মাহমুদ কাতারের রাজধানী দোহা হাম্মাদ বিমানবন্দরে চলে গেলেও তিনি তার নিজের পাসপোর্টটি ভুল করে ফেলে যান বিমানের অপারেশন বিভাগের লকারে। পাসপোর্ট ছাড়া কিভাবে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন অতিক্রম করলেন তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন ওঠে, তেমনি ওই বিমানবন্দরে যাওয়ার পর তাকে পাসপোর্ট ছাড়া ট্র্যাভেল করার কারণে আটক করার অভিযোগও ওঠে ঢাবার দু-একটি মিডিয়াতে। যদিও পাইলট ফজল মাহমুদকে আটক করা হয়নি বলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগ থেকে সাথে সাথে ব্যাখ্যা দিয়ে জানানো হয়েছিল। কারণ ফজল মাহমুদকে দিয়ে ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান ম্যানেজমেন্ট তাকে দোহায় পাঠিয়েছিলেন।

কিন্তু‘ পাসপোর্ট কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটায় কর্তৃপক্ষ তাকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকায় ফেরার ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা না করে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তার পরিবর্তে ঢাকা থেকে আরেক অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন (ট্রেনিং) আমিনুল ইসলামকে পাঠানো হয়। বিমানের জনসংযোগ বিভাগ থেকে ওই দিনের পাঠানো ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়েছিল, পাইলট ফজল মাহমুদ বর্তমানে বিমানের নির্ধারিত দোহার হোটেলে অন্য ক্রু ও কেবিন ক্রুদের সাথে অবস্থান করছেন এবং ১০ জুন দোহা থেকে তার নেতৃত্বে ফ্লাইট নিয়ে ঢাকায় ফিরবেন। কিন্তু তার এক দিন আগেই (৯ জুন) তিনি রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটের ইকোনমি ক্লাসের টিকিট কেটে ঢাকায় ফিরে আসেন।

এর আগে পাসপোর্ট ছাড়া কাতার যাওয়ার পর পাইলট ফজল মাহমুদের পাসপোর্টটি বিমান কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুরোধে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। এরপরই তিনি দোহায় যেতে পারেন। যদিও তার পাসপোর্টটি বহন করার জন্য প্রথমে কাতার এয়ারওয়েজের ঢাকা কর্তৃপক্ষকে নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা একজনের পাসপোর্ট আরেকজন বহনের নিয়ম নাই বলে পাসপোর্ট নিয়ে যেতে অস্বীকার করে।

এ দিকে পাসপোর্ট ছাড়া পাইলটের ইমিগ্রেশন অতিক্রমের গাফিলতির অভিযোগে বিমানবন্দর এসবির সাব-ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানকে কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করে। তবে ঘটনাটি স্রেফ ভুল ছিল নাকি নেপথ্যে কিছু রয়েছে সেটির এখন অনুসন্ধান চললেও গতকাল পর্যন্ত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement