২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লাখ টাকার পণ্য কেজি ধরে বিক্রি

আগুন
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখ টাকার দামের এসব বাক্স এখন কেজি দামে বিক্রি করতে হবে - ছবি : নয়া দিগন্ত

লাখ টাকার পণ্য এখন বিক্রি হবে কেজি ধরে। এগুলো যাবে ভাঙ্গারির দোকানে।

মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবসার বড় মূলধন ঢাউস আকারের এই স্টীলের বাক্স। আগুনের লেলিহান শিখায় এগুলো আংশিক পুড়ে গিয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

শনিবার রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসি মার্কেটে আগুনের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ীদের এসব বাক্সের বেশির ভাগই অকেজো হয়ে গেছে।

আজ রোববার সকালে মার্কেটটিতে গিয়ে দেখা গেল এসব বাক্স পিকআপ ভ্যানে করে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ভাঙ্গারির দোকানে।

মাছ ব্যবসায়ী মনু মিয়া জানালেন, ‘আমরা যারা মাছ ব্যবসা করি তাদের কাছে এই বাক্সই বড় মূলধন। লাখ টাকার মাছ আমরা এই বাক্সে বরফ দিয়ে মজুদ করি। কয়েকদিন বিক্রি করি এই মাছ। তবে এই বাক্স আগুনের তাপে বাঁকা হয়ে গেছে। এগুলো আর ব্যবহার করা যাবে না। তাই লাখ টাকার পণ্য এখন ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে কেজি ধরে বিক্রি করতে হবে।’

এছাড়া, এ মার্কেটে আগুনে আংশিক পুড়ে যাওয়া পণ্যের বাজার বসেছে মার্কেটের সামনে গলিতে। আজ সকালে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ভিতের গিয়ে দেখা গেল, পোড়া দোকানের মেঝে থেকে কর্মচারিরা আংশিক পুড়ে গেছে এমন কিছু পণ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তারা এসব পণ্য মার্কেটের পূর্ব পাশের গলিতে নিয়ে বিক্রির জন্য পসরা সাজিয়েছেন। উৎসুক জনতা যারা পুড়ে যাওয়া মার্কেট দেখতে আসছেন তারাই কম দামে এসব পণ্য কিনছেন।

আগুনের ঘটনায় বেশি ক্ষতি হয়েছে মাছের বাজারে। এছাড়া ফলের দোকানগুলোও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চাল, ডাল, আটা, তেল ও মসলা জাতীয় পণ্য পানি আর ছাইয়ের সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। প্লাষ্টিক জাতীয় পণ্যও বেশিভাগ পুড়ে গেছে। তবে কোকারিজের দোকানের লোহার কড়াই, কাটা চামচ জাতীয় শক্ত পণ্যগুলো পুরোপুরি ক্ষতি না হলেও আংশিক পুড়ে গেছে। এগুলোই মূলত দর্শনার্থীরা অর্ধেক দামে কিনছেন।

রবিন নামে এক কর্মচারী জানালেন, তার মালিকের দুটি দোকানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে তারা আংশিক পুড়ে যাওয়া পণ্য বের করে বাইরে এনে বিক্রি করছেন।

রীতা নামে এক দর্শনার্থী জানালেন, তার বাসা কাছেই । তিনি এসেছেন পোড়া মার্কেট দেখতে। এখানে এসে তিনি এগুলো দেখতে এসে দামে কম পেয়ে কিনছেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে গুলশান-১ নম্বরে ডিএনসিসি মার্কেটের একটি অংশে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে তাদের ১১টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে একের পর এক আরো ৯টি ইউনিট তাদের সাথে যোগ দেয়। এর সাথে নৌবাহিনীর দুইটি ইউনিটও যুক্ত হয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতেও এই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে বহু দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। তখন মার্কেটটির বহু দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। এরপর আবার অস্থায়ীভাবে দোকান তৈরি করে মার্কেটটি চালু করা হয়। ওই অগ্নিকাণ্ডের পর বেশ কিছু সুপারিশ নেয়া হলেও সে ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি মার্কেট কর্তৃপক্ষ।


আরো সংবাদ



premium cement