২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রথম সন্তান জন্মের ১ মাসের মধ্যে আবার জমজ সন্তান মা হলেন আরিফা 

প্রথম সন্তান জন্মের ১ মাসের মধ্যে আবার জমজ সন্তান মা হলেন আরিফা  - সংগৃহীত

বাংলাদেশে এক নারী একটি সন্তান জন্ম দেয়ার আরো প্রায় এক মাস পর আরো দুটো যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ওই নারীর চিকিৎসকরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গর্ভকাল পূরণ করার আগেই প্রথম শিশুটির জন্ম হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, ২০ বছর বয়সী আরিফা সুলতানা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে প্রথম শিশুটির জন্ম দেন। এর ২৬ দিন পর আবারও তার পেটে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর বিবিসির। 

সেখানে চিকিৎসকরা দেখতে পান যে তিনি আসলে তখনও অন্তঃসত্ত্বা। তার দ্বিতীয় একটি জরায়ুতে আরো দুটো যমজ শিশু বেড়ে উঠছে।

তখনই দেরি না করে সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে এই দুটো শিশুরও প্রসব ঘটানো হয়। জন্মের পর যমজ শিশু দুটো স্বাস্থ্য ভালো আছে এবং কোন জটিলতা না থাকায় চারদিন পর তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর আরিফা সুলতানা তার তিনটি নবজাতককে নিয়েই বাড়িতে ফিরে যান।

আমরা বিস্মিত হয়েছি
আরিফা সুলতানার প্রথম শিশুর জন্ম হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর ঠিক ২৬ দিন পর তিনি আবার বলতে থাকেন যে তার পেটে ব্যথা হচ্ছে। পরে ২১শে মার্চ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় যশোরের আদ-দীন হাসপাতালে। গাইনোকলিজস্ট ড. শীলা পোদ্দার তখন অপারেশন করে যমজ ওই দুটো শিশুর জন্ম দিয়েছেন।

শীলা পোদ্দার বলেন, ‘রোগীকে যখন নিয়ে আসা হলো তখন আমরা আলট্রাসাউন্ড করে দেখতে পাই যা তার পেটে যমজ শিশু রয়েছে।’

‘এতে আমরা খুব বিস্মিত হয়ে যাই। আমার জীবনে আমি এরকম ঘটনা এর আগে কখনো দেখিনি।’ তবে দ্বিতীয়বার কেন তিনি ভিন্ন একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন, এবং কেন প্রথম সন্তান জন্মের সময়ই তার পেটে আরো বাচ্চা থাকার ব্যাপারটা বোঝা যায় নি - সেটি খুব একটা পরিষ্কার নয়।

ড. পোদ্দার বলেনে, মিজ সুলতানা এবং তার স্বামী ‘খুবই গরিব মানুষ এবং ওই নারীর এর আগে কখনো আলট্রাসাউন্ড করা হয়নি।’তিনি বলেন, ‘আরিফা সুলতানার কোন ধারণাই ছিল না যে তার পেটের ভেতরে আরো দুটো বাচ্চা আছে। তাদের একটি ছেলে, অন্যটি মেয়ে।’

‘বাচ্চারা এবং তাদের মা ভাল আছে। আমি খুব খুশি যে সবকিছু ঠিকঠাক মতো হয়েছে,’ বলেন ড. শীলা পোদ্দার। সিঙ্গাপুরের একজন গাইনোকলজিস্ট বলেছেন, দুটো জরায়ু থাকা খুব একটা বিরল ঘটনা নয়। ‘মানুষ যেরকম মনে করে আসলে তা নয়।’

‘আপনি যদি আগে কোন স্ক্যান করান তাহলেই দেখতে পাবেন যে পেটের ভেতরে দুটো জরায়ু আছে। কিন্তু যেহেতু তারা একেবারেই গ্রামের মানুষ তাই হয়তো তাদের কখনো আলট্রাসাউন্ডই করা হয়নি।’ বলেন ড. ক্রিস্টোফার এনজি।

‘মনে হচ্ছে একই সময়ে তার তিনটি ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়েছিল এবং সেকারণে তার তিনটি ভ্রূণের জন্ম হয়েছে,’ বলেন তিনি। সুলতানা বলেছেন, তিন বাচ্চা নিয়ে তিনি খুব খুশি। তার একটাই দুশ্চিন্তা এদেরকে তিনি বড় করবেন কীভাবে!

বার্তা সংস্থাকে এএফপিকে তিনি বলেছেন, তার স্বামী একজন দিনমজুর এবং তিনি মাসে ৬ হাজার টাকার মতো রোজগার করেন। তার স্বামী বলেছেন, বাচ্চাদেরকে লালন পালন করার খরচ যোগাতে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবেন।

তিনি বলেন, ‘এটা আল্লাহরই এক অলৌকিক ঘটনা যে আমার সব বাচ্চারাই ভাল আছে। তাদেরকে খুশি রাখার জন্যে আমি যা করা দরকার সেটা আমি করবো,’ বলেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement