১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চলন্ত সিএনজি থেকে ব্যাগ ছিনতাই, গাড়ি চাপায় নারী নিহত

প্রতীকী ছবি - সংগৃহীত

চলন্ত সিএনজি থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় সড়কে পড়ে গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন এক নারী। নিহত নারীর নাম বেদেনা বেগম। তিনি শিবালয় উপজেলা সদরের ডাক্তারখানা এলাকার সায়েদ আলীর স্ত্রী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শিবালয় উপজেলা ফলসাটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীর স্বামী সায়েদ আলী বলেন, এক আত্মীয়ের দাফন সম্পন্ন করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি সিএনজি অটোরিক্সায় করে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। পথিমধ্যে শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় পৌছলে পিছন থেকে একটি প্রাইভেটকার তাদের সিএনজির গতিরোধের চেষ্টা করে।

একপর্যায়ে সিএনজি কিছুটা গতি কমালে প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে হাত বাড়িয়ে আকম্মিক তার স্ত্রীর ব্যাগ ধরে টান দেয় ছিনতাইকারীরা। এসময় বেদেনা বেগম সড়কের ওপর পড়ে যায়। এসময় পেছন থেকে দ্রুতগতির একটি কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরো বলেন, ছিনতাইকারীরা দ্রুতগতিতে প্রাইভেটকার ঘুরিয়ে ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে গুরুতর আহত দুই ছিনতাইকারীকে স্থানীয়দের সহায়তায় হাইওয়ে পুলিশ আটক করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রাতেই দুমরে-মুচরে যাওয়া প্রাইভেটকারটি রেকার দিয়ে উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত দুই ছিনতাইকারী হলেন- সাভারের রাজাশাল গ্রামের রশিদের ছেলে মাসুদুর রহমান ও ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার আবু তাহেরের ছেলে নুর ইসলাম।

শিবালয় থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলে তিনি জানান। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত নারীর লাশ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানা যায়।

 

আরো পড়ুন : পুরোহিত ছিনতাই, ঘণ্টায় পাঁচটি পুজোর রেকর্ড
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)

পুজো সবে শুরু হয়েছে। মন্ত্রোচ্চারণ শোনা যাচ্ছে, তখনই বেজে উঠল ফোন। মুহূর্তের জন্য মন্ত্র থামিয়ে কানে লাগানো ব্লু-টুথে পুরোহিতকে বলতে শোনা গেল, ‘আরও ৮টা পুজোর পরে কথা বলতে পারব। এখন মন্ত্র পড়ছি। দয়া করে বিরক্ত করবেন না।’

ফের পুজো শুরু। কিন্তু, মোবাইল ফোন ‘সাইলেন্ট’ না থাকলে তো বাজবেই। অগত্যা, আবারও মন্ত্রোচ্চারণ থামিয়ে সবে তিরিশের চৌকাঠ পেরোনো পুরোহিত সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গেল, ‘হ্যালো, বলুন।’ মনে হচ্ছিল, মন্ত্রোচ্চারণে খুশি হয়ে স্বর্গ থেকেই কেউ ফোনে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তবে, পরক্ষণেই বোঝা গেল কেউ তাকে তাগাদা দিচ্ছেন।


বারবার পুজো বন্ধ হওয়ায় বিরক্ত বাড়ির সদস্যরাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে সুজিত বললেন, ‘আরে আপনার ছেলে উপোস করে আছে তো কী হয়েছে! একদিন একবেলা না খেলে কিছু হয় না। দেবী বন্দনার জন্য বাচ্চাকে একটু কষ্ট করতে শেখান।’ এর পরে ঝড়ের গতিতে পুজো করে মিনিট ১৫ মধ্যেই চলে গেলেন পুরোহিত মশাই।

শনিবার শুক্লা পঞ্চমীর দিন এমনই ব্যস্ত দেখা গেল শিলিগুড়ির অধিকাংশ পুরোহিতকে। যা দেখে অনেকেরই ‘টি-২০’ ক্রিকেটের কথা মনে হয়েছে। ঝোড়ো ব্যাটিং চালিয়ে সেঞ্চুরির মতো ৬০ মিনিটে পাঁচটি পুজোর রেকর্ড গড়েছেন অনেকে। লক্ষ আরও বেশির।

অবশ্য এমন হবে না কেন? প্রতিবছরের মতো এবারও পুরোহিতের আকাল। হোক না দুদিনের পুজো। শনিবার সকাল ৯টা ২৬ মিনিটে পুজো শুরু হতেই পুহোতিদের নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। হাকিমপড়ায় পুজোয় বসলে কুণ্ডপুকুর থেকে তাগাদা। সেখানে গেলে কলেজপাড়া থেকে ফোন। চম্পাসারিতে থাকলেও দেশবন্ধুপাড়া থেকে হাতছানি। কেউ আবার ফোনাফোনির পথে না হেঁটে রাস্তায় বেরিয়ে বাইক, স্কুটি, সাইকেল থামিয়ে ‘পুরোহিত ছিনতাই’-এর চেষ্টা করেছেন। কেউ সফল হয়েছেন। কেউ নয়।


যেমন, তিন দশক ধরে পুজো করেন তাপস চক্রবর্তী এবং তার ভাইয়েরা। তাপস বললেন, ‘আগাম ১৫টি পুজোর কথা পাকা হয়েছিল। তাই রাস্তায় জোর করে আটকে পুজো করানোর অনুরোধ মেনে নিতে পারিনি।’ তাপসরা চার ভাই মিলে ৬০টি পুজো করেছেন শনিবারেই। রোববার আরও অন্তত ৪০টি।

কেমন দক্ষিণার বাজার? এখন ন্যূনতম ৫০১ টাকা পাওয়া যায় বলে পুরোহিতরা জানান। তবে প্রতিষ্ঠানে পুজোর বরাত পেলে দক্ষিণা কয়েকগুণ বেশিই মেলে।

তবে বর্ণালী রায়, মোহিনী রায়চৌধুরীর মতো বধূরা মনে করেন, পুজোর সময়ে পুরোহিত মশাই বারবার ফোনে কথা বললে দেবীবন্দনায় বিঘ্ন ঘটে। বর্ণালী বলেন, ‘কিছু করার নেই। পুরোহিত মশাই চটে গিয়ে যদি পরের বার না আসেন। তাই চুপ থাকি।’

মোহিনী বললেন, ‘অঞ্জলির সময়ে চোখ বন্ধ করে ছিলাম। মন্ত্র বলছিলাম। হঠাৎ পুরোহিত হ্যালো বলে উঠেন। আমিও হ্যালো বলে ফেলি। পরে বুঝলাম উনি ফোনে কথা বলছেন! সে এক কাণ্ড বটে!’


আরো সংবাদ



premium cement