২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেছিল বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত পলাশ!

নায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেছিল বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত পলাশ! - নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহতের নাম পলাশ আহমেদ। একদিন বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা এই ঘটনার মূল নায়ককে নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল। কে এই পলাশ আহমেদ? কি তার পরিচয়? শত কৌতুহলের মাঝে জানা গেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত চিত্রনায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেছিলেন বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদ। নিহত পলাশের পরিবার সূত্রেই জানা যায় এই কথা।

জানা যায়, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর দুধঘাটা এলাকায় পলাশ আহম্মেদের বাড়িতে আসেন চিত্রনায়িকা সিমলা। ঐ সময় তার সাথে ছিলেন পলাশ আহমেদ। সে সময় নায়িকা সিমলা পলাশের বাবা পিয়ার জাহানকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি পলাশকে বিয়ে করেছেন। পলাশও সিমলাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় তার পরিবারের কাছে।

সোমবার সকালে সোনারগাঁও সদর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার পর নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে নিহত পলাশ আহমেদের বাড়িতে তার বাবা পিয়ার জাহানের সাথে নয়াদিগন্তের কথা হয়।

এসময় নিহত পলাশের বাবা পিয়ার জাহান জানান,‘২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিমলা নামে এক মেয়েকে রাতের বেলা বাড়িতে নিয়ে আসে পলাশ। মেয়েটিকে চিত্রনায়িকা ও তার প্রেমিকা বলে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। দুই মাস পর এপ্রিল মাসে আবার সিমলাকে বাড়িতে নিয়ে এসে বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয় পলাশ। বিয়ের কথা সিমলাও আমাদের কাছে স্বীকার করে। এরপর ওই রাতেই তারা আবার ঢাকায় চলে যায়।’

তিনি আরো বলেন, সে সময় আমরা সিমলাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তাকে বলেছি– আমার ছেলেকে যেন ভালো পথে ফিরিয়ে আনে। ছোটবেলা থেকেই ছেলেটি অবাধ্য ছিল। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে প্রবাস থেকে আমার পাঠানো টাকা সে নানা পথে খরচ করেছে।

নিহত পলাশের বাবা পিয়ার জাহান জানান, সর্বশেষ ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। বাড়িতে আসার পর তার আচরণে বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে, মসজিদে গিয়ে আজানও দিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে বলেছে, সে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে। রোববার চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় পলাশের মুত্যুর খবর ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন তার পরিবার।

এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহতের ছবি রোববার রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ওই ছবি পলাশের বলে নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন : যেভাবে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়
নূরুল মোস্তফা কাজী, চট্টগ্রাম ব্যুরো (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)


ঢাকা থেকে দুবাই যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিমানের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিজি-১৪৭ উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় উড়োজাহাজটির পাইলট চট্টগ্রামে জরুরী অবতরণ করলে ওই ছিনতাই চেষ্টাকারী দুই জন ক্রুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে।

উড়োজাহাজটির অন্য যাত্রী এবং পাইলট, ক্রুরা নিরাপদে নেমে আসেন। সর্বশেষ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই ছিনতাই চেষ্টাকারী অস্ত্রধারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটক করলে পরে সে নিহত হয় বলে বিমান বন্দর সুত্র জানিয়েছে। এর ফলে ৪ ঘন্টার নাটকীয়তার অবসান হলে বিমান বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।


রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে বাংলাদেশ বিমানের বহরে নতুন সংযোজিত হওয়া উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী ১৪২ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আকাশে ওড়ার পরপরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয় বলে তথ্য মিলেছে।

বিমান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি নিজের আসন ছেড়ে ককপিটের দিকে এগিয়ে যায় এবং এক ক্রু’র কাছে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এসময় ওই যাত্রী একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ বস্তু বের করে বিমানটি ছিনতাই করার কথা জানায়। এসময় সে ককপিট না খুললে বিমান উড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটের কাছে উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে এবং ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন।

সুত্র জানিয়েছে, সাংকেতিক বার্তা পাবার পর পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর ককপিটের দরজা বন্ধ করে দেন এবং কৌশলে চট্টগ্রামে জরুরি অবতরণ করেন। উড়োজাহাজ অবতরণের পর চারটি জরুরী গেট খুলে দিলে যাত্রীরা নেমে পড়েন। ওই অস্ত্রধারী ফ্লাইট স্টুয়ার্ট সাগরকে আটকে রাখে বলে সুত্র জানায়।


চট্টগ্রামে জরুরী অবতরণের পর পরই বিপুল সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য বিজি-১৪৭ উড়োজাহাজটি ঘিরে ফেলে এবং বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসময় বিমানবন্দর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বিমানটি চট্টগ্রামে জরুরী অবতরণের পর প্রত্যক্ষদর্শী এক গাড়ির চালক বলেন, আমি দেখছিলাম আমার বস এসেছে কিনা। দেখলাম, ইমার্জেন্সি গেট খোলা। ভাবছিলাম কোনো আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। এরপর দেখলাম, ইমার্জেন্সির ওখান দিয়ে যাত্রীরা লাফিয়ে লাফিয়ে বের হয়ে আসছে। ভেতর থেকে শোনা গেল যে, ওরা স্যুট করেছে।

বিমানের জরুরী অবতরণের পর পরই সিভিল এভিয়েশন সচিব মহিবুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বিমানের সব যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হলেও দু'জন ক্রু ও সন্দেহভাজন ভেতরে আছে। তিনি কমান্ডো অভিযানেরও তথ্য দেন।

এদিকে সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, আর্মড পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উড়োজাহাজটির ভিতর তল্লাশী অভিযান শুরু করে। রাত পৌনে ৮টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক অস্ত্রধারীকে বের করে আনা হয়েছে বলে বিমান বন্দর সুত্র জানিয়েছে। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে এক ব্রিফিংয়ে ওই আহত ছিনতাই চেষ্টাকারী নিহত হবার খবর দেয়া হয় বলে সুত্র জানায়।


আরো সংবাদ



premium cement
কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর

সকল