২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

‘আমার কথায় যাত্রী উঠাবি, না হলে হাজিরা কাটা’

ফাইল ছবি -

সকাল সাড়ে ১০টা। মানিকনগর বিশ্ব রোডে জনা বিশেক পথচারী অপেক্ষা করছেন গাড়ির জন্য। গাড়িগুলো আসছে, চলে যাচ্ছে। কোনো কোনো গাড়ি কানায় কানায় পূর্ণ। সেগুলোতে যাত্রী ওঠানো সম্ভব নয় বলে টানের উপরেই চলে যাচ্ছে। কোনো কোনো গাড়ি থামছে। কিন্তু দ্রুত যাত্রীদের গাড়িতে উঠতে হচ্ছে। বাস থামার নির্দেশনা নেই বলে গাড়িগুলো থামছে না। এর মধ্যে যারা উঠতে পারছেন উঠছেন।

অন্যান্য বাসের মতোই বলাকা পরিবহনের একটি বাস সেখান দিয়েই যাচ্ছিল, যার নম্বর ঢাকা মেট্রো জ ১১-২৯৫৭। দৌড়ে গিয়ে দু-তিনজন যাত্রী বাসে উঠতে পারলেন। বাসটি তখন যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ।

বলাকা পরিবহনের এসব গাড়ি সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে বিশ্ব রোড হয়ে কমলাপুরের ভেতর দিয়ে মগবাজার, মহাখালী রুট দিয়ে গাজীপুর যায়। পথে যখনই কোথাও থেকে যাত্রী ওঠে বাসের অন্যান্য যাত্রী চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন। এসব যাত্রীকে সিটিং বলে গাড়িতে তোলা হয়েছে।

কিন্তু বাস্তব অবস্থা হলো, এক যাত্রীর ঘাড়ে চড়িয়ে অন্য যাত্রী নেয়া সম্ভব হলেও হয়তো সুপারভাইজার ও হেলপার তা-ই করতেন। যাত্রীরা যখন চিৎকার করেন, তখন সুপারভাইজার তাদের দিকে তেড়ে যান। অশালীন কথাবার্তা বলেন। যাত্রীদেরকে হুমকি দেন। যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, ও নেশায় আসক্ত। চোখ দুটো লালচে। ঘুমঘুম ভাব। কথাবার্তা অসংলগ্ন। মাঝে মধ্যে চালকের সাথেও উল্টাপাল্টা কথা বলছে। যাত্রার শুরুতেই নাকি একটি মামলা খেয়েছে। তাই সুপারভাইজারের সাথে চালকের গণ্ডগোল।

গাড়ির গতি মাঝে মধ্যে থেমে যাচ্ছিল। আশপাশের গাড়িগুলোর সাথে প্রায় লেগে যায়। যাত্রীরা উদ্বিগ্ন। এরই মধ্যে কাকলী এলাকায় চালক দুই হাত তুলে নিজের মাথা চাপড়াতে শুরু করলেন। ড্রাইভিং সিটে বসে কী বলছিলেন তা যাত্রীরা শুনতে পারেনি। গাড়ির স্টিয়ারিং রেখে এভাবে মাথা চাপড়ানোতে ঘাবড়ে যান যাত্রীরা। এই বুঝি গাড়িটি আছড়ে পড়ল অন্য গাড়ির ওপর। কাকলী পার হয়ে গাড়িটি পেছনে থেকে আরেকটি গাড়িকে ধাক্কা মারে। ধাক্কাটি মৃদু হওয়ায় কারো ক্ষতি হয়নি।

চালক জানালেন, তার গাড়ির সামনে নিয়ে গাড়িটি রেখেছে বলেই তিনি এ কাজটি করেছেন। বনানী ফ্লাইওভার দিয়ে নামার পর এমন একটি স্থানে গাড়িটি থামিয়ে দিলেন যেখানে স্টপিজ নেই। ওখানে থামানোর পর ফুটপাথে চেয়ার পেতে বসা এক লোক গাড়িটি সাইড করতে নির্দেশ দিলেন। ড্রাইভিং সিট থেকে হাঁক ছাড়লেন চালক। সুপারভাইজার গাড়ির পেছনে থেকে দৌড়ে চালকের কাছে গেলেন। কী যেন হাতের মধ্যে গুঁজে দিলেন। চালক জানালা দিয়ে ডান হাত বের করে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির হাতে সেটি গুঁজে দিয়ে গাড়িটি টান দিলেন। ৩০ সেকেন্ড পরে আবারো মাথা চাপড়ানো শুরু করলেন দুই হাত তুলে। প্রায় ৩০ সেকেন্ড এভাবে মাথা চাপড়ালেন। এরপর একটি সিগারেট ধরালেন। চালক ও হেলপার কারোর নাম জানা গেল না। চালকের মুখে দাড়ি আছে। নোংরা একটি পাঞ্জাবি পরা। পরনে সাদা লুঙ্গি। বিমানবন্দরে গিয়ে আবারো সেই কাণ্ড। পেছন থেকে ধাক্কা মারলেন সামনের গাড়িটিকে। কয়েকজন যাত্রী পুরো রাস্তায়ই তার এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে যাচ্ছিলেন।

পথে কয়েকটি গাড়ির সাথে সামান্য ব্যবধানে লেগে যায়নি। উত্তরার আজমপুরে গিয়ে সেই একই কাণ্ড। পেছন থেকে আবারো ধাক্কা মারলেন সামনের গাড়িকে। যাত্রীদের অনেকেই মন্তব্য করলেন, ‘ড্রাইভারও মাতাল। না হলে এভাবে করতে পারে না।’ হেলপারকে মাঝে মধ্যেই সুপারভাইজার বলে যাচ্ছিলেন, ‘আমার কথায় যাত্রী উঠাবি। না হলে হাজিরা কাটা।’

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল