গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলা-সংঘর্ষ
- আশুলিয়া প্রতিনিধি
- ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:১৪
সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থানীয় একপক্ষের সাথে গণস্বাস্থ্য কর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। রোববার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনের সামনে এ সংঘর্ষ-ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি নিজেদের দাবি করে রোববার বিকেলে পিএইচএ ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন মোহাম্মদ আলী ও নাছির উদ্দিন, ডা. জাহানারা ফেরদাউসসহ আরো কয়েকজন। সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর তারা ভবনের ভেতর প্রবেশ করতে চেষ্টা করে। এ সময় তারা জমি মাপার জন্য সাথে সার্ভেয়ার এনেছিলেন বলেও জানা যায়। তবে ভেতের প্রবেশ করলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের লোকদের সাথে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায় তারা।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ কবির আহমদ বলেন, ‘সেখানে মোহাম্মদ আলী ও নাছির উদ্দিনসহ কয়েকজন ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তারা ডা. জাফরুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা লাঠিসোটা নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভাঙচুর চালায়।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘নিজের ঘর রক্ষা করার জন্য তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। কেউ হামলা করতে এলে তো বসে থাকা যায় না।’
জমির দাবিদার নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ফিরে যাচ্ছিলাম। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে লোকজন এসে হামলা করে।’
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় আশুলিয়া থানা পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, ‘কাদের দোষ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জমি দখল, মাছ চুরিসহ একাধিক অভিযোগে মামলা হয়েছে। প্রথম মামলা করেছেন মোহাম্মদ আলী। অপর একটি মামলা করেছেন নাছির উদ্দিন। তবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দাবি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: আমি ঐক্যফ্রন্টের সাথে যুক্ত বলেই গণস্বাস্থ্যে হামলা : ডা. জাফরুল্লাহ
নাগরিক হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে যুক্ত হয়েছি বলেই সাভারের গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রে হামলা করা হয়েছে। আমাকে শাস্তি দেয়াই তাদের উদ্দেশ্য। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে রীতিমতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানটিকে জঙ্গলে পরিণত করা হয়েছে। এমনটাই বলেছেন ডা. ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসপাতাল গড়ে তুলে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাদানকারী ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে র্যাবের অভিযান পুরোপুরি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, উপরের নির্দেশ ছাড়া তারা এসব করতে পারে না। এখানে আমি ব্যক্তি জাফরুল্লাহ গুরুত্বপুর্ণ কিছু নয়। এ সময় তিনি সেখান থেকে র্যাব প্রত্যাহারের দাবি জানান।
শনিবার দুপুরে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা ১৯৭২ সাল থেকে গণস্বাস্থ্যের বিভিন্ন মানবহিতৈষী কার্যকলাপ ও বিভিন্ন সময়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল গণস্বাস্থ্যে হামলা করে কর্মীদের হত্যা করে ও গণস্বাস্থ্যের যে ক্ষতি সাধন করে এর একটি বর্ণনা দেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়াদউত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে, এগুলো ধ্বংস করার জন্য রাখা হয়েছিল। ওষুধগুলো ইচ্ছামতো ধ্বংস করা যায় না, এর জন্য একটি বোর্ড আছে। বোর্ড সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এবং নিয়ম অনুসারে ধ্বংস করা হয়। তিনি জানান, গণস্বাস্থ্য ফার্মায় র্যাব কিছু রি-এজেন্টও পেয়েছে। তিনি জানান, রি-এজেন্ট ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয় না, ওষুধের মান যাচাই করার জন্য ব্যবহার হয়। সেই রি-এজেন্টকে মেয়াদউত্তীর্ণ বলে গণস্বাস্থ্যকে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া কিছু জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়ক দেখতে একটু অস্পষ্ট বলে এগুলোকে মেয়াদউত্তীণের তালিকায় ফেলে র্যাব; কিন্তু এগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল না।
আন্দোলন সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আন্দোলন সফলের জন্য ‘রোল প্লে’ করতে হয়। যে কোনো পরিবর্তনের জন্য রক্ত দিতে হয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন দরিদ্র মানুষের উন্নয়নের জন্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা