২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ছড়িয়ে পড়ছে ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস

দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস
দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস - ছবি : সংগৃহীত

আজ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন। ১৯৫২ থেকে ২০১৯, মাঝে বয়ে গেছে ৬৭ বছর; কিন্তু আজো অমলিন উজ্জ্বল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস আর একুশে ফেব্রুয়ারি। বরং ক্রমে দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস। দেশ-বিদেশে সর্বত্র বাড়ছে ফেব্রুয়ারি আর ভাষা আন্দোলনকেন্দ্রিক প্রাণচাঞ্চল্য। ১৯৯৯ সালে জাতিসঙ্ঘের ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে

ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি এবং ২০১০ সালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে সারা বিশ্বে মাতৃভাষা দিবস পালনের পক্ষে প্রস্তাব পাসের ফলে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন এখন বিশ্ব ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য স্মরণীয় ঘটনা।

১৯৪৭ পরবর্তী আমাদের জাতীয় জীবনের সব জাগরণ, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনার মূলে জড়িয়ে আছে এ মাসের স্মৃতি। ভাষার লড়াইকে কেন্দ্র করে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন দেশের। বিশ্বে এ গৌরবের অধিকারী একমাত্র আমরাই।

আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের উৎসধারা এই ফেব্রুয়ারি মাসের আগমনে যাদের নাম সবার আগে আমাদের মনে আসে তারা হলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউর। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় জীবন দিতে হয়েছিল পরিচিত এই ক’জন যুবকসহ আরো বেশ কয়েকজনকে।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং সূত্র অন্বেষণ করতে গেলে সবার আগে মনে আসে জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কথা। এরপরই আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আবুল কাসেম এবং তারই প্রতিষ্ঠিত সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের নাম।

প্রফেসর আবুল কাসেম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ১৭ দিনের মাথায় ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘তমদ্দুন মজলিস’। আর এর মধ্য দিয়ে সে দিন থেকেই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম। তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি পুস্তিকা আকারে ভাষা আন্দোলন ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। ১৮ পৃষ্ঠার এই পুস্তিকার নাম ছিল ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’।

অন্য দিকে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিলগ্নে জুলাই মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. জিয়াউদ্দীন আহমদ হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের অনুরূপ পদক্ষেপ হিসেবে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করে বক্তব্য রাখেন।

জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করে ‘পাকিস্তানের ভাষাসমস্যা’ নামে একটি নিবন্ধ রচনা করেন। এতে তিনি বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করা হলে তা রাজনৈতিক পরাধীনতার নামান্তর হবে বলে মত প্রকাশ করেন। এটিকে তিনি প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের নীতিবিরোধী বলেও অভিমত প্রকাশ করেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর এ বক্তব্যে তৎকালীন বাঙালিসমাজ উদ্দীপ্ত হয়। কমরেড পত্রিকায় ‘দি ল্যাংগুয়েজ প্রবলেমস অব পাকিস্তান’ নামে ১৯৪৭ সালের ৩ আগস্ট নিবন্ধনটি প্রকাশ হয়। সে কারণে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ভাষা আন্দোলনের উৎসপুরুষ নামে পরিচিত।


আরো সংবাদ



premium cement