২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফামাক্যাশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা

এক ক্লিকেই ডলার যাবে বাংলাদেশে

প্রযুক্তি
ফামাক্যাশের উদ্বোধনের - ছবি : নয়া দিগন্ত

এক ক্লিকেই ডলার যাবে বাংলাদেশে। শুনতে অবাক লাগলেও এটিই এখন সত্যি। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের এবার নতুন উদ্ভাবন ফামাক্যাশ। একের ভেতর অনেক। দোকানে গিয়ে লম্বা লাইনে না দাঁড়িয়ে এবং সময় নষ্ট না করেই নিজের ফোনে অ্যাপস ডাউনলোড করে এক ক্লিকেই অর্থ পাঠান বাংলাদেশসহ বিশ্বের যে কোন দেশে। তাও আবার সম্পূর্ণ নিরাপদে ব্যাংকের মাধ্যমে। ফামাক্যাশ হতে পারে আপনার ওয়ালেট, ফামাক্যাশের কার্ডের মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যেকোন দেশে গিয়ে নিরাপদে ঐ কার্ড ব্যবহার করে খরচ করতে পারেন। আবার অন্য কারো কাছ থেকে অর্থ পেতেও পারেন।

ফামাক্যাশ হচ্ছে আমেরিকার মোবাইল ফোনভিত্তিক বিশ্বব্যাপী একটি ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি। সেই ফামাক্যাশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ৪ আগস্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে।

নিউইয়র্কের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কম্যুনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে হলভর্তি অডিটোরিয়ামে লাগোর্ডিয়া মেরিয়ট হোটেলের বলরুমে ফিতাকেটে ফামাক্যাশের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসাইন।

ফামাক্যাশের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ড. সাইফুল খন্দকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রূপালী ব্যাংক লিমিডেটের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মোহাম্মদ আতাউর রহমান প্রধান, আমেরিকার ব্যাংক সিবিডব্লিউর প্রেসিডেন্ট ও ফামাক্যাশের এডভাইজার সুচিত্রা পধভাবন, ড. রিচার্ড স্টুয়াট, পিটার ইনেস্টাইন, এক্সজিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট রবিউল করিম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর খাজা রেহান বখত, ডিরেক্টর হাসানুজ্জামান হাসান, গৌরব আরোরা, আক্তার জামান, কনসালটেন্ট রব আয়াস, এশিয়া ও মধ্যপাশ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হোসাইন সিরাজি, এ্যাটর্নী স্কট রোসেনব্লাম, ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনোমিক মিনিস্টার সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারি, কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এর প্রতিনিধি পিটার, ইনভেস্টর পিপল এন টেকের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ, জন গালো প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফামাক্যাশের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল খন্দকার ভিডিওর মাধ্যমে ফামাক্যাশের বর্তমান এবং ভবিষ্যত কর্মকান্ড তুলে ধরেন। ড. সাইফুল বলেন, ফামাক্যাশ অচিরেই সমগ্র ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়াতে চালু হবে।

তিনি আরো বলেন, আগামী বছরে ফামা ব্যাংক চালু করা হবে আমেরিকা, ইউরোপ, মিডিকস ইস্ট ও এশিয়াতে। এই ব্যাংক মোবাইল এবং আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) বেজড্ হবে যাতে কাস্টমার খুব সহজে ডিপোজিট, উথড্রো, এবং পারসোনাল ও ব্যবসায়িক ঋণ নিতে পারে। ফামার অলটিমেট উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের দুই থেকে তিন বিলিয়ন কাস্টমারকে তাদের ফাইনান্সিয়াল নেটওয়ার্কে নিয়ে আশা।

ড. সাইফুল বলেন, যদি বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দেয় তাহলে ফামাক্যাশ বাংলাদেশেও সেবা দিতে পারবে। ফামাক্যাশের মাধ্যমে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স অনেক বাড়বে।

রূপালি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন বলেন, আজকের দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন এবং শুভ দিন। শুভ দিন রূপালী ব্যাংকের জন্য, শুভ দিন সিবিডব্লিউ ব্যাংকের জন্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য।

তিনি বলেন, আজকে আমরা সিবিডব্লিউ ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছি। আমরা ফামাক্যাশের সাথে একত্রে কাজ করতে চাই এবং অচিরেই ফামাক্যাশের সাথে আমাদের চুক্তি হবে। সিবিডব্লিউ ব্যাংক এবং রূপালী ব্যাংক ফামাক্যাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ করবে। তিনি ফামাক্যাশের প্রশংসা করেন এবং ফামাক্যাশকে সমস্ত সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

রূপালি ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আতাউর রহমান প্রধান বলেন, আজ রূপালী ব্যাংকের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। আমরা যখন গত বছর আমেরিকায় এসেছিলাম, তখন জ্যাকসন হাইটসে একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলাম আমরা আমেরিকাতে কর্মকান্ড শুরু করবো, সেই কাজটি আজ করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আজ থেকে ৬ মাস আগে ফামাক্যাশ পুরো প্রজেক্টটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করে। প্রজেক্টটি আমাদের মনপুত হওয়ায় আমরা এগিয়ে আসি। তিনি বলেন, বর্তমানে রেমিটেন্সের বড় বাজার রয়েছে। আমরা সিবিডব্লিউ ব্যাংক এবং ফামাক্যাশের মাধ্যমে সেই বাজার ধরতে চাই।

আমেরিকার সিবিডব্লিও এর প্রেসিডেন্ট সুচিত্রা বলেন, তারা ফামার সাথে পার্টনারশিপ করেছে কারণ তারা জানে ভবিষ্যৎ ব্যাংকিংই হবে মোবাইলে। এখানে উল্লেখ্য সিবিডব্লিউ ব্যাংক ও ফামাক্যাশের উল্লেখযোগ্য শেয়ার হোল্ডার। সিবিডব্লিও ফামাক্যাশের ৭.৫% শেয়ার ওন করে।

সুচিত্রা প্রধভাবন বলেন, আমাদের সাথে রূপালী ব্যংকের চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশীদের সেবা প্রদান করতে চাই।

কনসালটেন্ট রব আয়ার্স বলেন, আমি এই লাইনে প্রায় ২৫ বছর ধরে কাজ করছি। মানিগ্রামসহ বেশ কয়েকটি অর্থপ্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। ফামাক্যাশের ভবিষ্যত আমার কাছে ভাল লেগেছে, তাই আমি যুক্ত হয়েছি।

ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ বলেন, আমি এ কোম্পানীর একজন শেয়ারহোল্ডার। ফামাক্যাশই ফার্স্ট বিলিয়ন ডলারের কোম্পানী বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ফামার বোর্ড অব অ্যাডভাইজর ড. রিচার্ড সোয়াট যিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভারসিটির রিসার্চ ফেলো এবং আমেরিকার ফিনটেক ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য সিনিয়র এসিকিউটিভ।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সুচিত্রা, মঞ্জুর হোসেন, আতাউর রহমানকে ফামাক্যাশের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। ক্রেস্ট তুলে দেন ড. সাইফুল খন্দকার। সর্বশেষে ড. সাইফুল সবাইকে ধন্যবাদ দেন এবং কমিউনিটির সবার দোয়া চান। তিনি বলেন, ফামাক্যাশের সাকসেস মানে বাংলাদেশের সাকসেস।


আরো সংবাদ



premium cement