চট্টগ্রামে নওয়াব ওয়ালিবেগ খাঁ মসজিদের পুনর্নির্মাণ কাজ উদ্বোধন

চট্টগ্রাম মহানগরীর নওয়াব ওয়ালিবেগ খাঁ (অলি খাঁ) জামে মসজিদের পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। গত সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ মসজিদের পুনর্নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। নগরীর চকবাজার এলাকায় অবস্থিত ইসলামের প্রাচীন স্থাপত্য এটি। ১৭১৩ সালে মোগল আমলে নওয়াব ওয়ালিবেগ খাঁ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।
অনিন্দ্য সৌন্দর্যে সজ্জিত এ মুসলিম স্থাপনার আসল সৌন্দর্য বাইরে থেকে তেমন একটা বুঝা যায় না। তবে ভেতরের অংশটা অনেক চমকপদ। মূল মসজিদের দেয়ালগুলো অনেক পুরনো। দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় এক থেকে তিন ফুট পর্যন্ত। দেয়ালের গায়ে রয়েছে ছোট ছোট খোপ। যেগুলোতে প্রয়োজনী জিনিসপত্র রাখা হয়। বর্তমানে এই খোপগুলোতে পবিত্র কুরআন শরীফসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা আছে। সেই দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য শৈলীর এই মসজিদটির পুরাতন অবকাঠামো অক্ষুণœ রেখে নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতি ফ্লোর পাঁচ হাজার বর্গফুট হিসাবে ছয় তলার সর্বমোট ৩০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। এতে চার হাজার মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদ পুনর্নির্মিত হচ্ছে। এতে থাকছে দুইটি লিফট, দুইটি সিঁড়ি, ৮৫ ফুটবিশিষ্ট সুউচ্চ একটি মিনার, কারপার্কিং ব্যবস্থা, টয়লেট, ওজুখানা, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও অফিস কক্ষ এবং পাঠাগার ইত্যাদি।
উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র বলেন মসজিদ নির্মাণ, সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। ইসলামে মসজিদ নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম পৃথিবীর বুকে যে ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল তা হলো মসজিদুল হারাম বা পবিত্র কাবাঘর। নবী করিম সা: মদিনায় হিজরতের পর সর্বপ্রথম সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে যে কাজটি করেছিলেন তা হলো মসজিদ নির্মাণ। কোনো এলাকায় মসজিদ থাকা এটা মুসলিম এলাকার পরিচয়পত্রের মতো। মসজিদ মুসলমানদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল। তাই আমাদের সবাইকে মসজিদ নির্মাণ ও সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার তাওফিক দানে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সহযোগিতা কামনা করেন সিটি মেয়র।
এ সময় মসজিদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ এ এম সাইফুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আনোয়ার, কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, মোজাহেরুল ইসলাম, মফিজুর রহমান, এখলাচুর রহমান, সেলিম উদ্দিন, ফারুক খালেক চৌধুরী, মঞ্জুর হোসেন, মো: নাজিম উদ্দিন, খালেদ জামাল, সাইফুল ইসলাম ভুইয়া রাসেল, মোস্তাক আহমদ টিপু, ফয়সাল কামাল চৌধুরী, শফিকুল আলম, জসিম উদ্দিন, শাখাওয়াত হোসেন মানিক, আলী নেওয়াজ খান পারভেজসহ স্থানীয় গণ্যমান্য মুসল্লি এবং স্থপতি মিজানুর রহমান ও জাবিত আকরাম উপস্থিত ছিলেন। দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের খতিব অধ্যাপক মাওলানা আবদুল মান্নান আশরাফী।