১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাাৎকারে ভিসি অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক উচ্চশিায় নতুনত্ব আনতে চায় সিআইইউ

-

গুণগত মান, যুগোপযোগী সিলেবাস আর সময়ের আগে একধাপ এগিয়ে থাকার কারণে এরই মধ্যে তরুণ-তরুণীদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক, শিাবিদ অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দায়িত্ব পালন করছেন।
সাাৎকারে তিনি কথা বলেছেন চট্টগ্রামের উচ্চশিা, কর্মমুখী সিলেবাস, শিকতা পেশা, গবেষণা, প্রযুক্তির জোয়ার, বই পড়ার প্রতি আগ্রহ, সিআইইউর স্থায়ী ক্যাম্পাসের পরিকল্পনাসহ নানা বিষয় নিয়ে।
প্রশ্ন : সিআইইউর স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে শিক-শিার্থী ও অভিভাবকদের ভেতর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?
ভিসি : স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শিগগিরই আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভায় এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আমরা শহরের মধ্যে ক্যাম্পাস গড়ব। যেখানে ফাইওভারের সুবিধা পাওয়া যাবে। ছেলেমেয়েরা সহজে বাসা থেকে বেরিয়ে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করতে পারবে। খুলশী, বায়েজিদসহ শহরের বেশ কয়েকটি বড় জায়গায় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে মত এসেছে। কোথায় হবে এখনি ঘোষণা করতে চাইছি না। বিষয়টি চমক হয়ে থাক। নকশা প্রণয়নে থাকবে বৈচিত্র্য।
প্রশ্ন : চট্টগ্রামের উচ্চশিায় সিআইইউ তার কাক্সিত ল্য অনুযায়ী কতটুকু এগিয়ে গেছে বলে আপনি মনে করেন?
ভিসি : বিষয়টি ব্যাখ্যা করা একটু কঠিন। ২০১৩ সালে ঢাকা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ট্্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের উদ্যোগে চট্টগ্রামে সিআইইউ প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শুরুতে যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল এ েেত্র তা হয়ে ওঠেনি। ২০১৬ সালের মার্চের পর ধীরে সিআইইউ আন্তর্জাতিকমানের শিা ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। শিার গুণগত মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। দ লোকবল নিয়োগ ও সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে উচ্চশিার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। আমাদের হাতে নেয়া পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে আগামী দুই বছর পর এখানে বদলে যাবে শিার পুরনো চেহারা। বেশি বেশি গবেষণামূলক কার্যক্রমের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। দ জনশক্তি হয়ে গড়ে তুলছি শিার্থীদের। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সিআইইউতে সিভিক কালচার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন : আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে কী ধরনের পদপে নিয়েছেন?
ভিসি : আমি দায়িত্ব নিই ২০১৬ সালে। আমার প্রথম উদ্যোগ ছিল এই শিাপ্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্বব্যিালয় হিসেবে রূপ দেবো। কতখানি সফল হয়েছি জানি না, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে সিআইইউ চট্টগ্রামে মডেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম কুড়িয়েছে। বর্তমানে শিার্থীর সংখ্যা আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সাধারণত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থায়ী শিক থাকে না। আমি ভিসি হওয়ার পর স্থায়ী শিক নিয়োগ দিয়েছি। প্রতিটি স্কুলের ডিন পদে যারা নিয়োগ পেয়েছেন সবাই অভিজ্ঞ। বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুযায়ী সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কমিটি, ফাইন্যান্স কমিটিসহ একাধিক পর্ষদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল তৈরি করেছি।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রোপটে উচ্চশিার ফোকাসটা আসলে কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
ভিসি : বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক শিার দু’টি ল্য থাকতে হবে। একটি হলো জ্ঞান সৃষ্টি, আরেকটি জ্ঞান বিতরণ। এখন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য আয়োজনের উদ্যোগ থাকা চাই। তার পেছনে বিনিয়োগ থাকবে; কিন্তু রিটার্ন আসাটা সুদূরপ্রসারি। সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু যদি কোনো গবেষণা বা শিা ব্যবহারিক জগত থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সে শিা যুগ, সময় ও সমাজের আপেকি গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। যে কারণে জ্ঞান সৃষ্টির ল্য সামগ্রিকভাবে দেশ, সমাজ, মানবসভ্যতার এগিয়ে যাওয়ার জন্য হওয়া উচিত। এ েেত্র মনে রাখতে হবে কারিগরি, ব্যবসায় বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিল্প ও রাষ্ট্র কাঠামোর প্রয়োজনে দ জনশক্তি সৃষ্টি করতে হবে। সুতরাং দু’টিরই সমন্বয় সাধন করতে হবে।
প্রশ্ন : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা আছে। প্রচলিত ধারণা পাল্টাতে হলে আমাদের করণীয় কী?
ভিসি : বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস দুই দশকের কাছাকাছি। সময়টা কিন্তু কমও নয়। এই সময়ের মধ্যে অনেক মানুষের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেবল বুঝি ব্যবসায়িক শিা প্রতিষ্ঠান। আমরা যদি আধুনিক সভ্যতার ইতিহাস দেখি তাহলে দেখবো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভ সূচনা শুরু হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা মনে করেছিলেন যেহেতু রাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা অনেক কিছু পেয়েছেন, তাই তাদেরও দেশকে এগিয়ে নিতে নিজেদের কিছু দেয়ার আছে। আর সেই ধারণা থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন সবাই। কিন্তু বাংলাদেশে দুভার্গ্যবশত এই নীতি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে অভিযোগ আছে। অভিযোগটি কিছুটা সত্যি হলেও আমাদের সুনাম এখনো অুণœœ। আমি বলতে পারি ঢাকা আইইউবি ও চট্টগ্রামের সিআইইউ যারা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের কারোরই অর্থ উপার্জনের বিষয়টি পরিকল্পনায় ছিল না। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তারা শিার আলো ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। এখানকার অর্জিত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য ব্যয় হয়।
প্রশ্ন : যারা শিকতা পেশায় আসতে চান তাদের প্রতি আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
ভিসি : যারা আসতে চান তাদের প্রতি আমার দু’টি পরামর্শ থাকবে। একটি হলো পরিপূর্ণভাবে তাদের মানসিক ও শিাগত প্রস্তুতি থাকা চাই। আরেকটি হলো এই পেশা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের উৎসাহিত করতে সমাজ, রাষ্ট্র ও কর্তৃপ সব ধরনের পদপে নেবে।
প্রশ্ন : প্রযুক্তি শিাকে কতখানি সহজতর করেছে?
ভিসি : আমি বিষয়টিকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখি। জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য কে কিভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে, সঠিকভাবে করছে কি না তা দেখার বিষয় অবশ্য রয়েছে। তবে প্রযুক্তির পাশাপাশি বইও পড়তে হবে। সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, গোলটেবিল বৈঠকসহ একাধিক জ্ঞান বৃদ্ধির ধাপগুলোতে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে মতামত ভাগাভাগি করা উচিত। এতে জ্ঞানের বিকাশ পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয় বলে আমার কাছে মনে হয়।
প্রশ্ন: আপনি কিভাবে শিকতা পেশায় এলেন। ছোট বেলায় কী হতে চেয়েছিলেন?
ভিসি : বাবা-মা চেয়েছিলেন পড়ালেখা শেষ করে যেন একজন ভালো মানুষ হই। তবে রাজনীতিবিদদের বক্তব্য সে সময় খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতাম। ভীষণ টানতো। পরে একসময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীদের দেখে ব্যারিস্টার কিংবা আইনজীবী পেশার প্রতি আকৃষ্ট হই। তবে পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হলে পরে বুঝতে পারি শিকতা পেশাই আমার আসল ঠিকানা। এর পেছনে অবশ্য আরো একটি কারণ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে যখন বইয়ে কোনো ব্যক্তির নামের আগে ডক্টর লেখা থাকত, তখন আমি এই শব্দটির প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করি। যখন জানতে পারলাম ডক্টর লিখতে হলে অনেক পড়ালেখা থাকতে হবে তখন আমার মধ্যে একটা উৎসাহ কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক হওয়ার পর আমি অনেক দেশ ভ্রমণ করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের একটা নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেছি। পরে দেশটির আরো দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপ পেয়েছি। জাপানোর বিখ্যাত টোকিও ইউনিভার্সিটি থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি লাভের সুযোগ হয়েছে। ইউরোপ, ভারতসহ অনেক দেশেই নিজের উপস্থাপিত জ্ঞান বিতরণের সুযোগ পেয়েছি। জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে প্রচুর। সাফল্য পেতে হলে মানুষকে নিরলস পরিশ্রম করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল