২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উদ্বোধনের অপোয় চট্টগ্রামের জাম্বুরি পার্ক

-

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নাগরিকদের যান্ত্রিকতার জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়ার মতো আরো একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক গড়ে তুলেছে গণপূর্ত অধিদফতর। মূলত ওয়াকওয়ের বিশেষ সুবিধাসংবলিত ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় আট একরের জাম্বুরি মাঠ জুড়ে গড়ে ওঠা পার্কটি এখন উদ্বোধনের অপোয়। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন শেষে পরদিন থেকে নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে পার্কটি। বিনা ফি-তেই পার্কটিতে নির্দিষ্ট সময়ে বিচরণ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
পার্কটিতে গড়ে তোলা হয়েছে সাড়ে তিন ফুট গভীরতার অনেকটা অ্যামিবা আকৃতির বিশাল লেক। এর পাশ ধরে লাগানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফলদ ও বনজ গাছ। লেকের ধারেই পার্কের মধ্যবর্তী স্থানে স্থাপন করা হয়েছে সুবিশাল ফোয়ারা। ওয়াকওয়েগুলোর স্বল্প পরিসরে রাখা হয়েছে বসার স্থান।
২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠকে পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। এ জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএইচবি অ্যান্ড নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজকে নিয়োগ দেয়া হয়। ইতোমধ্যে পার্কটির নির্মাণকাজ শেষপর্যায়ে চলে এসেছে। এখন চূড়ান্তপর্যায়ের ফিনিশিং চলছে। পার্কটির বিশাল অংশ জুড়ে স্থাপিত কৃত্রিম লেকটিতে দুর্ঘটনা এড়াতে রেলিং দেয়া হচ্ছে যা পার্কটির প্রাথমিক পরিকল্পনায় ছিল না। তা ছাড়া রাতে লেকের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
লেকের দুই পাড়ে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ফলদ, বনজ ও ফুলের গাছ। এসব গাছের মধ্যে রয়েছে শিউলি, নাগেশ্বর, সোনালু, টগর, কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, রাধাচূড়া, কাঁঠালচাঁপা, বকুল, মৌ সন্ধ্যা, নয়নতারা, জারুলসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ। লেকের ধার দিয়ে চলে গেছে পায়ে চলার পথ, যা ব্যায়াম এবং হাঁটার উপযোগী।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পার্কের পরিবেশের কথা মাথায় রেখে পার্ক অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ফুড কোর্ট বা রেস্তোরাঁ থাকবে না। পার্ক এলাকায় দুটি গণশৌচাগার, গভীর নলকূপ ও একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং পার্কে প্রবেশের জন্য রয়েছে ছয়টি গেট। ইতোমধ্যে এসব গেটে নিরাপত্তা রীও নিয়োগ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের শরীর চর্চার সুবিধার্থে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পার্কটি বিনোদনপিপাসুদের জন্য খোলা রাখা হবে। সপ্তাহের প্রতিদিনই পার্কটির এই শিডিউল অনুসরণ করা হবে।
এদিকে উদ্বোধনের পর চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরো এক বছর পার্কের রণাবেণ ও অবকাঠামোগত মেরামত ও সংস্কারকাজ দেখভাল করবে। এরপরই গণপূর্ত বিভাগের হাতে পার্ক পরিচালনা ও রণাবেণ কাজ হস্তান্তর হবে বলে জানা গেছে।
জাম্বুরি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আবদুল্লাহ নূর জানিয়েছেন, পার্কের নির্মাণকাজ একেবারেই শেষপর্যায়ে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। সীমানা প্রাচীরের সৌন্দর্যবর্ধন ও অন্যান্য ধোয়ামোছাসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হলেই পার্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে পার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে পার্ক উদ্বোধন করবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement